উল্টো উন্নয়নের নামে দেয়া ৭৮ বিলিয়ন ডলারের ফাঁদে বাংলাদেশ জর্জরিত। অ্যাকশন এইড ইন্টান্যাশনাল সম্প্রতি তাদের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
তারা ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ‘হু ওজ হু' শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে।
বাংলাদেশের জলবায়ু ও পরিবেশবিদরা বলছেন কার্বন নিঃসরণ করে জলবায়ু ও পরিবশের ক্ষতি করছে যেসব উন্নত দেশ, তাদের কাছ থেকে ওই অর্থ আদায়ের আন্তর্জাতিক কোনো আইনি কাঠামো নেই। তবে বিভিন্ন আর্ন্তজাতিক ফোরামে পাওনার দাবি জোরালো করা এবং ‘বার্গেইনিং ক্যাপাসিটি' বাড়ানো জরুরি।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতির শিকার শীর্ষ দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ। অলাভজনক সংস্থা জার্মান ওয়াচ-এর ২০২১ সালের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার ১০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে সাত নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশে উপকুলীয় জেলার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার। সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে ওইসব অঞ্চলে কৃষিজমি কমেছে প্রায় ৮০ শতাংশ, বাস্তুচ্যূত হচ্ছে মানুষ।
খুলনার সআতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বাসিন্দা পিযুষ বাউলিয়া রিপন জলবায়ু কর্মী হিসাবে কাজ করেন একটি স্বেচ্ছসেবী প্রতিষ্ঠানে। তিনি জানান, ওই এলাকার মানুষ পানীয় জলের সংকটে আছেন প্রায় ১৫ বছর ধরে। আর ওই উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের গাবুরা ও মুন্সিগঞ্জসহ আটটি ইউনিয়নে চলছে পানীয় জলের জন্য হাহাকার। পিযুষ বাউলিয়া রিপন বলেন, "সিডর, আইলা জলবায়ুর পরিবর্তন এবং চিংড়ি চাষের শিকার আমরা। এলাকায় কোনো সুপেয় পানি নেই। সরকারের দিক থেকেও কোনো উদ্যোগ তেমন নাই। অনেক কষ্টে বহু দূর থেকে পানি এনে জীবন চলছে।”
"আর এই কারণে চার লাখ বাসিন্দার এই উপজেলার অর্ধেক মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। আর নারী ও শিশুদের ৭০ শতাংশই নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত। এলাকার ফসলি জমিও লবণ-পানির কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে অনেকেই পেশা পরির্তনে বাধ্য হয়েছেন,” বলেন তিনি।
তার কথা, "এলাকার সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়ন গাবুরা। ওই ইউনিয়নে খাবার পানি নাই। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে তাদের খাবার পানি কিনে আনতে হয়।”