দূষণের কবলে সেনেগালে হান বে
সেনেগালের গত ২০ বছরে শিল্পায়নের কেন্দ্রে রয়েছে বন্দর নগরী ডাকার৷ কিন্তু পরিবেশ আর মানুষের উপর তার ফলাফল হয়েছে মারাত্মক৷
জঞ্জালময় জীবন
সেনেগালের রাজধানী ডাকারে হান উপসাগরের সৈকতের চিত্র এটি৷ দুই দশকের অপরিকল্পিত শিল্পায়ন এখানকার পরিবেশের উপরে ভয়াবহ বিপর্যয় বয়ে এনেছে৷
অনিয়ন্ত্রিত বর্জ্য
কাপ ভ্যার উপদ্বীপ ঘিরে গড়ে উঠেছে বন্দর ও শিল্প কারখানা৷ সেখানকার রাসায়নিক বর্জ্য ও অপরিশোধিত দূষিত জল খাল হয়ে সমুদ্রে এসে পড়ে৷ সমুদ্রের সৈকতে এখন আর বালির দেখা মেলে না, তার বদলে কয়েক মিটার গভীর পর্যন্ত প্লাস্টিকের স্তর পড়েছে৷
হারানো সৌন্দর্য্য
১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ হান উপসাগর পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম সুন্দর এক এলাকা৷ কিন্তু সেটি অতীতের কথা৷ এমবাকে সেক নামে একজন পরিবেশবিদ বলেন, ‘‘আমাদের শৈশবে এই সৈকতে সুন্দর, সাদা বালু ছিল৷’’ কিন্তু এখন তা শুধু পোস্পারেই আছে৷ যেমনটা এই হোটেলের বৈঠকখানায় দেখা যাচ্ছে৷
শিল্পায়নের পথে লাফ
১৯ শতকে ফরাসি একটি দুর্গের পাশে ডাকার বন্দর নগরীর গোড়াপত্তন হয়৷ দাসত্বের করুণ ইতিহাস পেছনে ফেলে শিল্পায়নের পথে লাফ দেয় ডাকার৷ বর্তমানে সংরক্ষিত সমুদ্র অঞ্চলেই গড়ে উঠেছে একটি বন্দর৷ তেল শোধনাগার থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাজে ব্যবহৃত হয় বন্দরটি৷
দূষিত খাল
আবজর্না আর শৈবালে ছেয়ে গেছে সমুদ্রের সঙ্গে যুক্ত খালগুলো৷ বাসিন্দারা সেখানে তাদের দৈনন্দিন ময়লা ফেলেন৷ অপরিশোধিত শিল্পবর্জ্য, কসাইখানার আবর্জনাও গিয়ে পড়ে এই খালগুলোতে৷ এ কারণে বাসিন্দাদের চর্মরোগ, পেটের অসুখ কিংবা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভোগেন মানুষ৷
জেলেদের দুঃসময়
এই নগরীর যাত্রা শুরু আগে থেকেই কেপ ভ্যারের মানুষদের আয়ের প্রধান উৎস ছিল মাছ ধরা৷ কিন্তু জেলেরা এখন সমুদ্রের দূষণের কারণে বিপাকে পড়েছেন৷ দূষিত জলে ব্যাপকভাবে কমে গেছে মাছের পরিমাণ৷ মাছের সন্ধানে ক্রমশ তাদের দূর সমুদ্রে পাড়ি জমাতে হচ্ছে৷
ক্ষীণ আশা
সৈকতে পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন এক নারী৷ পেছনে সমুদ্রে ভাসছে ঐতিহ্যবাহী ক্যানু নৌকা৷ ২০২০ সালে সরকার একটি ক্ষতিগ্রস্ত পাম্পিং স্টেশন ও জল পরিশোধন প্ল্যান্ট গড়ে তুলেছে৷ সেগুলোকে শিল্প কারখানা ও মানুষের বাড়ি ঘরের সঙ্গে যুক্ত করা হবে যাতে বর্জ্য জল সমুদ্রে না পড়ে৷
বিষাক্ত জল
কিন্তু পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে৷ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে সমুদ্রের জল৷ বাবা-মায়েরা সন্তানদের এখন সমুদ্রের পানিতে নামতে দেন না৷ সেনেগালের সরকারের পরিবেশ প্রকল্পে অর্থায়ন করে ইউরোপীয় ইয়নিয়ন, ফ্রান্স ও নেদারল্যান্ডসের সরকার৷