দুই ছাত্রকে অপহরণ করে খুন, দেহ শনাক্ত দুই সপ্তাহ পর
কলকাতা থেকে অপহরণ করা হয়েছিল দুই ছাত্রকে। মুক্তিপন চাওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার তাদের মৃতদেহ শনাক্ত করা হলো।
দুই ছাত্রের অপহরণ
কলকাতার বাগুইআটি এলাকার দুই ছাত্রকে গত ২২ অগাস্ট অপহরণ করা হয়। দুই ছাত্রের নাম অতনু দে ও অভিষেক নস্কর। দুজনেই বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। তারা সম্পর্কে আত্মীয়। ২৪ তারিখ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করে।
মুক্তিপন দাবি
অপহরণের পর পর মুক্তিপন চেয়ে ফোন আসে বলে দুই ছাত্রের পরিবার জানিয়েছে। ফোনের নম্বরও তারা পুলিশকে জানায়। পুলিশ উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার সব থানা এলাকায় খোঁজ করে। অভিজিৎ বসু নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি
পুলিশ জানাচ্ছে, ২২ অগাস্টই চলন্ত গাড়িতে দুই ছাত্রকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করা হয়। বাসন্তী হাইওয়ের উপর দুইটি জায়গায় মৃতদেহ ফেলে দেয়া হয়।
১৩ দিন ধরে মর্গে
দুই ছাত্রের দেহ ১৩ দিন ধরে বসিরহাট মর্গে ছিল। অশনাক্ত দেহ হিসাবে সেগুলি পড়েছিল। সেই দেহের কথা এতদিনে বাগুইআটি পুলিশ জানতে পারে। মঙ্গলবার দেহ শনাক্ত করা হয়। উপরের ছবিতে অভিষেকের পরিবার।
কী হয়েছিল?
অতনু দে-র মেসোমশাই নীহার ভক্ত ডিডাব্লিউ-কে জানিয়েছেন, ২২ তারিখ বিকেল চারটে নাগাদ দুই ভাই বাড়ি থেকে বেরোয়। রাত দশটাতেও না ফেরার পর বাড়ির লোকেরা তাদের খোঁজ শুরু করেন। দুজনেরই মোবাইল তখন বন্ধ ছিল। এরপর পুলিশের কাছে যান তারা। পরিবারের দাবি, বাইক কেনার জন্য অতনুর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয় সত্যেন্দ্র চৌধুরী। বাইক দেয়ার নাম করে সে দুই কিশোরকে গাড়িতে তুলে নেয়। উপরের ছবিটি নীহার ভক্তের।
অতনুর মা
ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন অতনুর মা। এতদিন আশা ছিল, মুক্তিপন চাওয়া হচ্ছে, তাই অপহৃত দুই কিশোর নিরাপদে আছে। কিন্তু যখন মৃত্যুর খবর এলো, তখন অসুস্থ হয়ে পড়েন মা।
পরিবারের অভিযোগ
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ এতদিন ধরে কী করলো? এতদিন পরে তারা জানাচ্ছে, ২২ তারিখই দুই জনকে মারা হয়। গত দুই সপ্তাহ ধরে দেহ মর্গে পড়ে রইলো, অথচ পুলিশ টের পেল না? অতনুর বাবা বিশ্বনাথ দে-র অভিযোগ, পুলিশ প্রথমে জিডি নিতে চায়নি। মুক্তিপনের ফোন আসার পর তারা অভিযোগ দায়ের করে।
এই গাড়িতে অপহরণ?
এই গাড়িতেই দুই কিশোরকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের ধারণা, এই গাড়িতেই দুই কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। তারা গাড়িটি আটক করেছে।
অভিযুক্তর বাড়ি ভাঙচুর
মঙ্গলবার বাগুইআটির জগৎপুরের চড়কতলা এলাকায় বিক্ষোভ হয়। অভিযুক্তের বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। উপরের ছবিতে সেই বাড়ির ছবি।
আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন
সম্প্রতি কলকাতায় বেশ কয়েকটি খুন হয়েছে। এবার অপহরণ করে খুনের ঘটনা ঘটলো। এরপরই এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, তাহলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে?