দালাই লামাকে ভিসা না দেওয়ায় সমালোচনার মুখে দক্ষিণ আফ্রিকা
২৫ মার্চ ২০০৯২৭ মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে ঐ শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল৷ ২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষ্যে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল৷ লক্ষ্য ছিল, ফুটবল কিভাবে বর্ণবাদ ও বিদেশীদের প্রতি বিদ্বেষ দূর করতে ভূমিকা রাখতে পারে তা পর্যালোচনা করা৷ সম্মেলনে ডেসমন্ড টুটু, মার্টি আতিসারি এবং এফডব্লিউ ডি ক্লার্কসহ সারাবিশ্ব থেকে সকল নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীদের যোগ দেওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু রবিবার ইনডিপেন্ডডেন্ট পত্রিকা জানায়, যে চীন সরকারের চাপের মুখেই দালাই লামাকে সম্মেলনে যোগ দেয়ার জন্য ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা৷ দালাই লামাকে ভিসা না দেয়ায় নরওয়ের নোবেল শান্তি কমিটিসহ ঐ তিন নোবেল বিজয়ী সম্মেলনে না আসার ঘোষণা দেন৷ এর ফলে আয়োজকরা সম্মেলন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়৷
চীনা কূটনীতিকরা স্থানীয় গণ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, যে বেইজিং দালাই লামাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশ করতে না দেয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল৷ অন্যথায় তাদের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে হুমকি দেয়া হয়েছিল৷ সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা চীনের সাথে বেশ কিছু লোভনীয় বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করে এবং কূটনৈতিক সম্পর্কও বৃদ্ধি করে৷
শান্তি সম্মেলনের আয়োজক শেতাল জিম দালাই লামাকে ভিসা না দেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দালাই লামা বা অন্য যে কোন প্রতিনিধিকে সম্মেলনে অংশ গ্রহণ করতে না দিলে সম্মেলনের বিশ্বাসযোগ্যতা নষ্ট হবে এবং একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে৷ চীন সরকারের চাপের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার এ ধরণের নতি স্বীকারে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ডেসমন্ড টুটু অত্যন্ত মর্মাহত ও লজ্জিত হয়েছেন বলে জানান৷
সম্মেলনের অন্যতম প্রবক্তা নোবেল বিজয়ী নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা দালাই লামাকে ভিসা না দেওয়ার ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যায়িত করেন৷ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ ঘটনা দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নেলসন ম্যান্ডেলার উদ্যোগে কালিমা লেপন করেছে৷ তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটি দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি গোটা আফ্রিকার জন্য পরিতাপের বিষয়৷ তিনি বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আমি মনে করি না যে আমাদেরকে কোন আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে হবে৷
প্রতিবেদক: হোসাইন আব্দুল হাই, সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারুক