ডিডাব্লিউ ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ড পেলেন কিন্টসুরাশভিলি
২৯ এপ্রিল ২০২৫গত কয়েক বছর ধরে তিনি অপতথ্য মোকাবিলায় কাজ করছেন৷ দেশটির সরকারের চাপে রয়েছেন এই সাংবাদিক৷
জর্জিয়ায় গণতন্ত্র রক্ষায় নিজের পেশাগত উৎকর্ষ এবং প্রতিশ্রুতির জন্য ৫৫ বছরের এই সাংবাদিককে চলতি বছর ফ্রিডম অব স্পিচ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছে ডয়চে ভেলে৷
২০১৫ সাল থেকে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে জার্মানির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে৷ এরমধ্য দিয়ে বিশ্ব্যব্যাপী সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিতকরণের এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘনের ঘটনায় বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় ডয়চে ভেলে৷
১৯৯১ সালে জর্জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণার পর থেকে গণতন্ত্রের জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন টামার কিন্টসুরাশভিলি৷ ডয়চে ভেলেক এই নারী সাংবাদিক বলেন, ‘‘সোভিয়েত আমলে কথা বলার সুযোগ ছিল না, কোনো অধিকার ছিল না৷ আপনি একটি টোটালিটারিয়ান সিস্টেমের অংশ ছিলেন৷''
তিনি বলেন, ‘‘একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারকে জবাবদিহিতায় আনার দায়িত্ব আপনার৷ এবং একজন সক্রিয় নাগরিক হওয়ার দায়িত্বও আপনার৷ আর ক্ষমতার বিভিন্ন শাখায় ভারসাম্য এনে গণমাধ্যম এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷''
ডয়চে ভেলের মহাপরিচালত পেটার লিমবুর্গ বলেন, অপতথ্য রুখতে কিন্টসুরাশভিলির প্রচেষ্টার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে৷
তিনি বলেন, ‘‘দেশ বিদেশের প্রপাগান্ডা ঠেকাতে তার চেষ্টা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা এবং সেই সাথে গণমাধ্যমের উপর মানুষের আস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ৷ দেশটি এই মুহূর্তে একটি ক্রসরোডে রযেছে যেখানে সক্রিয় বিরোধী দলবিহীন একটি সংসদ রয়েছে৷ রয়েছে একটি নতুন অথরিটারিয়ান গণমাধ্যম আইন যা আমরা রাশিয়াতে দেখে থাকি৷''
সাংবাদিক কিন্টসুরাশভিলি বর্তমানে গণমাধ্যমের উন্নয়নে কাজ করা একটি স্বাধীন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক৷ জর্জিয়ার রাজধানীতে অবস্থিত ফাউন্ডেশনটি নাগরিক স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে থাকে৷ সেখানে তিনি ফ্যাক্ট চেকিং এবং হেট স্পিচ ঠেকানোর কৌশল বিষয়ে বিভিন্ন ধরণের ওয়ার্কশপ আয়োজন করে থাকেন৷
চাপ বাড়ছে
কিন্তু সরকারের চাপের কারণে এই কাজ ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে বলে জানান কিন্টসুরাশভিলি৷ ‘‘প্রতিদিনই আপনি দেখবেন সরকার আপনাকে থামাতে নতুন কিছু করছে,'' বলেন তিনি৷
২০১২ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মস্কোপন্থি হিসেবে পরিচিত জর্জিয়ান ড্রিম পার্টি গত বছর ‘ফরেন এজেন্ট' নামে একটি বিল পাস করে৷ বিলে বলা হয়, যেসকল গণমাধ্যম এবং বেসকারি প্রতিষ্ঠান তাদের অর্থায়নের অন্তত শতকরা ২০ ভাগ বিদেশ থেকে পেয়ে থাকে তাদেরকে ‘এজেন্ট অব ফরেন ইনফ্লুয়েন্স' নামে নিবন্ধন করতে হবে৷
সাংবাদিক কিন্টসুরাশভিলির প্রতিষ্ঠান পুরো অর্থায়নই বিদেশ থেকে পেয়ে থাকে৷ কিন্তু নতুন আইন অনুযায়ী তিনি নিবন্ধন করতে অস্বীকৃতি জানান৷
‘‘এই আইনের উদ্দেশ্য হলো আমাদের কাজের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা৷ সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হলে আপনাকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পেতে হবে৷ এভাবেই গণতন্ত্র কাজ করে,'' বলেন তিনি৷
লিসা লুইস/আরআর