টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া, লজ্জার হার ভারতের
১২ জুন ২০২৩গতবার হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড, এবার হারালো অস্ট্রেলিয়া। ভারতের আর টেস্ট ক্রিকেট চ্যাম্পিয়ন হওয়া হলো না। বরং ২০৯ রানে হেরে একরাশ লজ্জার বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দেশে ফিরছেন বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা।
প্রথমে টসে জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। ততক্ষণে অবশ্য বিতর্ক উঠে গিয়েছে, দলে কেন অশ্বিন নেই? ভারত চার পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছিল। একমাত্র স্পিনার ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রিকি পন্টিং দুজনেই বলেছিলেন, অশ্বিনকে বাদ দেয়া ভুল হয়েছে। যে উমেশ যাদবের উপর এতটা ভরসা করা হয়েছিল, তিনি আহামরি কিছু খেলতে পারেননি।
প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া তোলে ৪৬৯ রান। তার জবাবে ভারত করে ২৭৯ রান। ৮৯ রান করেন অজিঙ্ক রাহানে। ৫১ করেন শার্দুল ঠাকুর। রান পেয়েছিলেন জাদেজা। কিন্তু রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, চেতেশ্বর পূজারা, বিরাট কোহলি ব্যর্থ হন।
অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসেও ভারতীয় পেসাররা যে খুব ভালো বল করতে পেরেছেন এমন নয়। পিচ তখন খারাপ হচ্ছে। জাদেজা তিন ইউকেট নিয়েছেন। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে লিয়ঁ চার উইকেট নিয়েছেন। ফলে অশ্বিন থাকলে যে অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি ব্যাটারদের বিপাকে ফেলতে পারতেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে।
অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে আট উইকেটে ২৭০ রান তুলে ইনিংস সমাপ্তির ঘোষণা দেয়। ভারতকে জিততে হলে করতে হত ৪৪৪ রান।
শুভমনের আউট নিয়ে
ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে শুভমন গিলের আউট নিয়ে। শুভমনের ক্যাচ স্লিপে ঝাঁপিয়ে পড়ে নেন ক্যামেরন গ্রিন। রিভিউ নেয় ভারত। এরপর তৃতীয় আম্পায়ার শুভমনকে আউট দেন। শুভমন ক্যাচের একটা ছবি টুইট করেছেন। যেখানে মনে হচ্ছে, বল মাটি ছুঁয়েছে। এরপর অধিনায়ক রোহিত শর্মাও বলেন, ''আইপিএলে দশটা ক্যামেরায় রিপ্লে দেখানো হয়। এখানে মাত্র দুইটি ক্যামেরা ছিল। ''
সাবেক ক্রিকেটার বীরেন্দ্র সেহবাগ বলেছেন, ''বারবার করে দেখেও বোঝা যায়নি, বল মাটি ছুঁয়েছে না ছোঁয়নি। এই অবস্থায় বেনিফিট অফ ডাউট ব্যাটারের পক্ষে যাওয়ার কথা।'' রিকি পন্টিং বলেছেন, ''গ্রিন যখন ক্যাচ নেন, তখন মাটি থেকে ছয় ইঞ্চি উপরে তার হাত ছিল। পরে তা মাটি ছুঁয়েছে কিনা বোঝা যায়নি।''
ভারতের ইনিংস
শুভমনের আউট নিয়ে বিতর্ককে বাদ দিলে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মা দুজনেই খুব বাজেভাবে আউট হয়েছেন। কোহলি অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে এবং রোহিত সুইপ করতে গিয়ে। চেতেশ্বর রান পাননি। অজিঙ্ক কিছুটা লড়েছিলেন। কিন্তু জাদেজা কোনো রান না করে ফিরে যান। শার্দুল ও ভরত দুজনেই ব্যর্থ।
আইপিএল নিয়ে
ভারতের হারের পর আইপিএল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বলা হচ্ছে, দীর্ঘ আইপিএল খেলে ভারতের ক্রিকেটাররা শারীরিকভাবে আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার অবস্থায় থাকছেন না। ২০ ওভারের ক্রিকেট থেকে টেস্ট ক্রিকেটে মনোনিবেশ করতে ১০ দিন একেবারেই কম সময়। তাই আইপিএলের সময় কম করার দাবি উঠেছে।
একের পর এক হার
২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিল ভারত। এরপর আর আইসিসি-র কোনো প্রতিযোগিতায় জিততে পারেনি। দশ বছর ধরে কিছু প্রতিযোগিতার ফাইনালে উঠেও হারতে হচ্ছে ভারতকে।
ফাইনালে হারের পরও ভারতীয় বোর্ড পাবে আট লাখ ডলার যা ছয় কোটি ৬০ লাখ টাকার মতো। অস্ট্রেলিয়া পেয়েছে ১৬ লাখ ডলার বা ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকার মতো। অবশ্য আইপিএল জয়ী টিম পায় ২০ কোটি টাকা।
জিএইচ/এসজি(এপি, এএফপি, রয়টার্স)