জার্মানির শীর্ষস্থানীয় গবেষণা সংস্থায় হয়রানির শিকার কর্মীরা
১৫ মার্চ ২০২৫জার্মানির শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটি৷ সংস্থাটির ৩১ জন বিজ্ঞানী এ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার জিতেছেন৷ কিন্তু এমন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিদেশি বিজ্ঞানীরা সংস্থাটির পরিচালকদের হয়রানিমূলক আচরণের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷
একজন বিজ্ঞানী জানান, তার প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের সঙ্গে হওয়া বৈঠকগুলোতে খুব কমই এমন হয়েছে যে, সেখানে কর্মরত বিজ্ঞানীদের বিব্রত হতে হয়নি৷ ব্রাজিলের পদার্থবিজ্ঞানী ও ড্রেসডেন শহরের ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্স অব কমপ্লেক্স সিস্টেম'-এর সাবেক পোস্টডক্টরাল গবেষক গ্যাব্রিয়েল ল্যান্ডো বলেন, ‘‘তিনি তার টেবিল চাপড়াচ্ছিল এবং আমার দিকে তাকিয়ে এমনভাবে চিৎকার করছিলেন যে, আমি তার মুখ থেকে থুথু বের হতে দেখেছি৷''
ল্যান্ডো আরও জানান কয়েক মাস ধরে তার প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইয়ান মিশায়েল তাকে প্রতিবন্ধী ও অপদার্থ বলেও গালি দিয়েছেন৷
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগ দেয়া গ্যাব্রিয়েল ল্যান্ডো বলেন, ‘‘আমি মনে করি সেগুলো আমার জীবনের সবচেয়ে খারাপ মুহূর্ত ছিল৷ এই বিপর্যয় থেকে সেরে উঠতে আমার এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল৷''
তবে এমন ঘটনা শুধু গ্যাব্রিয়েল ল্যান্ডোর সঙ্গেই ঘটেনি৷ কয়েক মাস ধরে ডয়চে ভেলের অনুসন্ধানী দল জার্মান সংবাদপত্র ডেয়ার স্পিগেল-এর সঙ্গে দেশব্যাপী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউটগুলোতে অবমাননাকর আচরণ ও কাজের প্রতিকূল পরিবেশের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখেছে৷
ডয়চে ভেলে ৩০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন৷ যাদের অধিকাংশই বিশ্বমানের গবেষণা করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এশিয়া, অ্যামেরিকা ও ইউরোপের অন্যান্য অংশ থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন৷ তাদের অর্ধেকেরও বেশি জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, পরিচালকদের মাধ্যমে সংঘটিত অসদাচরণের অভিজ্ঞতা বা সাক্ষী হওয়ার বর্ণনা দিয়েছেন৷
উৎপীড়ন, যৌন হয়রানিসহ তরুণ বিজ্ঞানীদের ক্যারিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকিও দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই৷ প্রতিবাদ করতে চাইলে বা অভিযোগ জানাতে চাইলে বলা হতো, এমন পরিস্থিতি মেনে নিয়েই কাজ করতে হবে অথবা কাজ ছেড়ে চলে যেতে হবে৷ এমন ঘটনারও উল্লেখ করেছেন কয়েকজন৷
ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি৷ তারা জানিয়েছে, ‘‘আমরা অভিযুক্ত ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশে গোপনীয়তা বজায় রাখার চেষ্টা করি৷''
ডয়চে ভেলে ও ডেয়ার স্পিগেল এ পর্যন্ত কতজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক সোসাইটি ওই তথ্য জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় বলে এড়িয়ে যায়৷
লেভিস স্যান্ডারস/এসথার ফেল্ডেন/এসএইচ