জার্মানিতে উগ্র ডানপন্থি ম্যাগাজিন নিষিদ্ধ নিয়ে আইনি লড়াই
১১ জুন ২০২৫২০২৪ সালের জুলাইয়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফ্যাজার কম্প্যাক্ট ম্যাগাজিন নিষিদ্ধ করেন৷ তিনি নিষিদ্ধ করার পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘ডানপন্থি চরমপন্থা পটের কেন্দ্রীয় এক মুখপাত্র ছিল এটি৷ পত্রিকাটি ইহুদি, অভিবাসী বংশোদ্ভূত মানুষদের এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জঘন্য উপায়ে উস্কানি দিচ্ছিল৷''
নিজেকে ‘প্রতিরোধ আন্দোলনের' অংশ মনে করে কম্প্যাক্ট
জার্মানির সংবিধান সুরক্ষা বিষয়ক কেন্দ্রীয় কার্যালয় বিএফভি ২০২৩ সালের এক প্রতিবেদনে পুরো একটি পাতা জুড়ে কম্প্যাক্টের কথা লেখা হয়েছিল৷ ম্যাগাজিন এবং মাল্টিমিডিয়া এই কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় ফাল্কেনসিতে৷
বিএফভির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে পত্রিকাটির ৪০ হাজার কপি বিক্রি হয়৷ কম্প্যাক্টের ইউটিউব চ্যানেলের সাব্সক্রাইবারের সংখ্যা অবশ্য অনেক বেশি৷ চলতি মাসের ১০ তারিখ অবধি চ্যানেলটির সাব্সক্রাইবারের সংখ্যা পাঁচ লাখ তের হাজার৷
‘‘কম্প্যাক্ট নিজেকে ‘প্রতিরোধ আন্দোলনের' অংশ মনে করে৷ এবং এটি তথাকথিত নব্য ডানপন্থি অন্যান্য কুশলীদের বিবেচনায় পটের অংশ৷ এটিতের প্রকাশিত অনেক প্রতিবেদনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বর্তমান রাজনৈতিক পদ্ধতির বিরুদ্ধে আলোড়ন সৃষ্টি করা,'' লিখেছে বিএফভি৷
কম্প্যাক্টের প্রধান সম্পাদক ইউর্গেন এলজেসার একজন সন্দেহভাজন চরম ডানপন্থি যিনি তরুণ বয়সে উগ্র বামপন্থি ছিলেন৷ ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি এক বামপন্থি তরুণ দলের সদস্য ছিলেন এবং বামদের পত্রিকা ‘দ্য ওয়ার্কার্স ফাইট'-এ লেখালেখি করেছেন৷ পরবর্তীতে তিনি সাবেক সমাজতন্ত্রী পূর্ব জার্মান সরকারের বামপন্থি পত্রিকাতেও কাজ করেছেন৷
চূড়ান্ত রায়ের আগ অবধি প্রকাশনা চালানোর সুযোগ
এলজেসার এবং অন্যান্য সন্দেহভাজনরা পত্রিকাটির উপর গতবছর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে লাইপসিশে কেন্দ্রীয় প্রশাসনিক আদালতে লড়াই করেছেন৷ তারা আপাতত কিছুটা সাফল্যও পেয়েছেন কেননা, চূড়ান্ত রায়ের আগ অবধি পত্রিকাটির কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত৷ আদালত মনে করছে, পত্রিকাটি সংবিধানবিরোধী কাজ করছে কিনা তা এখনো নির্ধারন করা যায়নি৷
তবে আদালত দ্রুতই এই তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে যে, পত্রিকাটি অভিবাসী বংশোদ্ভূতদের মানবিক মর্যাদা ক্ষুন্ন করছে৷ বিষয়টি নিষেধাজ্ঞা দেয়ার জন্য পর্যাপ্ত কিনা সেটা নিয়ে অবশ্য সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে৷
পত্রিকাটির উপর নিষেধাজ্ঞা দিলে তা জার্মানির মৌলিক আইনের লঙ্ঘন হবে কিনা তা নিয়ে শুনানি ১০ জুন শুরু হয়েছে৷ এই বিষয়ে চূড়ান্ত রায় কবে ঘোষণা হবে জানা যায়নি৷
প্রতিবেদন: মার্সেল ফ্রুস্টেনাউ / এআই