আইসিসির পরোয়ানা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে ম্যার্ৎসের আমন্ত্রণ
প্রকাশিত ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫শেষ আপডেট ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আপনার যা জানা দরকার
- মধ্য-ডানপন্থি ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন -সিডিইউ এর নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস জোট সরকার গঠনের জন্য আলোচনা শুরু করতে চলেছেন।
- ২০ দশমিক আট শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা অতি-ডানপন্থি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি - এএফডি এর সঙ্গে সহযোগিতা না করার বিষয়ে তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন ম্যার্ৎস।
- ইউরোপীয় নেতারা ম্যার্ৎসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, তিনি একটি 'শক্তিশালী, সার্বভৌম ইউরোপ'-এর জন্য কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
- সাবেক পূর্ব জার্মানিতে ভালো ফল করায় আনন্দ প্রকাশ করেছে এএফডি, অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক বাম দলও তাদের নিজস্ব অর্জন উদযাপন করেছে।
- মধ্য-বামপন্থি সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি -এসপিডিজানিয়েছে, নির্বাচনে পরাজয়ের পর তারা এখন জোট গঠনের আলোচনার জন্য অপেক্ষা করছে।
ইউরোপীয় সংহতির আহ্বান ম্যার্ৎসের, 'অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নিয়ে সতর্কতা
প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের নীতির বিপরীতে বৃহত্তর ইউরোপীয় সংহতির আহ্বান জানিয়েছেন জার্মানির সম্ভাব্য পরবর্তী চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।
সোমবার বার্লিনে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "ওয়াশিংটন থেকে আমরা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যা শুনছি, তাতে আমি উদ্বিগ্ন।"
তিনি বলেন, "যুক্তরাষ্ট্র ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, ইউরোপের প্রতি তার আগ্রহ হ্রাস পাচ্ছে। তবে আমরা আশা করি পারস্পরিক স্বার্থে ট্রান্সআটলান্টিক সম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্ব আমরা অ্যামেরিকানদের বোঝাতে পারবো।"
তবে, তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, "'অ্যামেরিকা ফার্স্ট' বলতে যারা 'শুধু অ্যামেরিকা' বোঝায় তারা যদি নিজেদের (প্রতিষ্ঠা করার) পথ পায়, তাহলে এটা কঠিন হবে। যদি (আটলান্টিক মহাসাগরের দুই পাড়ের) সম্পর্ক ধ্বংস হয়, তাহলে তাতে কেবল ইউরোপেরই ক্ষতি হবে না, অ্যামেরিকারও ক্ষতি হবে।"
সোমবার ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে ওয়াশিংটনে যাওয়ার পথে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ বিমান থেকে ফোনে ম্যার্ৎসের সঙ্গে কথা বলেন।
এই কথোপকথন সম্পর্কে ম্যার্ৎস বলেছেন, "অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিনি যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে চান, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি এবং আমরা সম্পূর্ণ একমত হয়েছি।" মাক্রোঁর মতোই ইউরোপপন্থি নীতি অনুসরণ করেন ম্যার্ৎস।
এই সপ্তাহের শেষের দিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমারও যাচ্ছেন ওয়াশিংটন সফরে।
আইসিসির পরোয়ানা সত্ত্বেও নেতানিয়াহুকে ম্যার্ৎসের আমন্ত্রণ
রক্ষণশীল দল সিডিইউ নেতা এবং জার্মান নির্বাচনে বিজয়ী ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে জার্মানিতে সরকারি সফরের আমন্ত্রণ জানাতে চান বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি এই নেতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে যে রোববার সন্ধ্যায় জার্মানির সম্ভাব্য চ্যান্সেলরের সঙ্গে তার 'উষ্ণ কথোপকথন' হয়েছে। ম্যার্ৎসের সাফল্যের জন্য নেতানিয়াহু অভিনন্দন জানিয়েছেন। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রকাশ করা এক বার্তায় বলা হয়েছে, "সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ম্যার্ৎস কথোপকথনে প্রধানমন্ত্রীকে (নেতানিয়াহু) ধন্যবাদ জানান এবং জানান যে, তিনি তাকে জার্মানিতে একটি সরকারি সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন, যা প্রধানমন্ত্রীকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ঘোষণা করার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কলঙ্কজনক সিদ্ধান্তের স্পষ্ট বিরোধিতা।"
সিডিইউ দলের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং ডিপিএকে নিশ্চিত করেছেন যে, নির্বাচনের পরে দুজনের মধ্যে ফোনে কথা হয়েছে। তবে, কথোপকথনের সারমর্ম সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
দুই সপ্তাহ আগে ম্যার্ৎস জার্মান-ইহুদি সংবাদপত্র জুডিশে আলগেমাইনকে বলেছিলেন, নির্বাচনে জয়লাভের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানাবেন।
তিনি বলেছিলেন, "আমার নেতৃত্বে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নির্বিঘ্নে জার্মানি ভ্রমণ করতে পারবেন।"
জার্মানির নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক, রাশিয়া বলছে 'দেখা যাক'
জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস। নির্বাচনের আগে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনকে আরো সহায়তা করা এবং প্রয়োজনে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী পাঠানোর মতো কথাও বলেছেন ম্যার্ৎস।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে ম্যার্ৎস চ্যান্সেলর হলে জার্মানি-রাশিয়া সম্পর্কে এর কেমন প্রভাব পড়বে। রাশিয়া অবশ্য সরাসরি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্যে না করে কী হয় আপাতত সেটা পর্যবেক্ষণের কথাই বলেছে।
ক্রেমলনিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, "প্রতিবার (নতুন সরকার আসার সময়) আমরা বাস্তবতার প্রতি আরও সংযত দৃষ্টিভঙ্গির আশা করতে চাই, পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট (রাশিয়া এবং জার্মানির মধ্যে) বিষয়, পারস্পরিক সুবিধার বিষয়ে আরও সংযত দৃষ্টিভঙ্গি দেখতে চাই।...কিন্তু দেখা যাক বাস্তবে এটি কতটা হয়।"
২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখলের বিরোধিতা করেছিলেন তৎকালীন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন এবং সাবেক চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের সম্পর্কে টানাপড়েন থাকলেও সেটি ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ। ম্যার্কেলের অধীনে রাশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানিকারকদের মধ্যে একটি হয়ে ওঠে জার্মানি।
তিন বছর আগে ইউক্রেন আক্রমণের পর শলৎস সরকার দ্রুতই জ্বালানির নতুন উৎসের অনুসন্ধান করে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেকটা শীতল যুদ্ধ-পরবর্তী পর্যায়ে নেমে আসে।
ম্যার্ৎস ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার ব্যাপারে শলৎসের চেয়েও আরও বেশি কঠোর নীতি গ্রহণ করবেন। রাশিয়ার ভূখণ্ডের ভিতরে আরও উন্নত অস্ত্র ব্যবহারে ইউক্রেনকে অনুমতি দেওয়ার প্রস্তাবও করেছেন তিনি।
এএফডির ভোট বাড়ায় তুর্কি-জার্মান সম্প্রদায়ের উদ্বেগ
তুর্কি বংশোদ্ভুত জার্মানদের সংগঠন -টিজিডি এর নেতা আসলিহান ইয়েসিলকায়া-ইয়ুর্তবে এক বিবৃতিতে অতি-ডানপন্থি এএফডি দলের সাফল্যের নিন্দা জানিয়েছেন।
টিজিডি জার্মানির বৃহত্তম অভিবাসী সম্প্রদায়গুলোর একটির প্রতিনিধিত্ব করে। অন্যদিকে, এএফডি ইসলামভীতি এবং অভিবাসী বিরোধিতার উপর ভিত্তি করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
ইয়েসিলকায়া-ইয়ুর্তবে বলেছেন, "অভিবাসী বংশোদ্ভূত মানুষ ভীত এবং জার্মানি ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবছে। অভিবাসন ছাড়া আমাদের দেশের কোনও ভবিষ্যৎ নেই।"
ইয়েসিলকায়া-ইয়ুর্তবে আরও অভিযোগ করেছেন যে অন্যান্য দলগুলো, "এএফডি-এর বর্ণনাকে বিভিন্ন মাত্রায় অনুসরণ করেছে এবং এএফডি-কে পেছনে ফেলার লক্ষ্যে 'অভিবাসন সমস্যা' সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এটি একটি বিরাট ব্যর্থতা।"
প্রায় ২৫ শতাংশ জার্মান নাগরিক অভিবাসী বংশোদ্ভূত। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, জার্মানিতে অপরাধের হার অভিবাসনের ফলে বাড়েনি এবং জনসংখ্যা কমতে থাকার ফলে জার্মানির কর্মশক্তির শূন্যতা পূরণের জন্যও অভিবাসীদের প্রয়োজন।
একত্রীকরণের পর জার্মান নির্বাচনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ উপস্থিতি
জার্মানির ফেডারেল নির্বাচনে ৮২ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পড়েছে। ১৯৮৭ সালের (৮৪.৩%) পর এই ভোটের পরিমাণ সর্বোচ্চ। ১৯৯০ সালে পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পর এটিই সর্বোচ্চ।
শেষবার ভোটার উপস্থিতি ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছিল ১৯৯৮ সালে। ৮২ দশমিক দুই শতাংশ জার্মান ভোট দিয়ে সিডিইউ দলের হেলমুট কোলের ১৬ বছরের চ্যান্সেলর পদের অবসান ঘটান।
২০০৯ সালে মাত্র ৭০ দশমিক আট শতাংশ উপস্থিতির পর গণতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান ক্ষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিশ্লেষকেরা। অবশ্য এরপর ২০১৭ সালে ভোটার উপস্থিতি বেড়ে ৭৬ দশমিক দুই শতাংশ এবং ২০২১ সালে ৭৬ দশমিক চার শতাংশে পৌঁছায়।
২০২৫ সালের ভোটার উপস্থিতি আগের নির্বাচনের তুলনায় ছয় দশমিক এক শতাংশ বাড়ায় অনেকেই খুশি হয়েছেন। তবে ফেডারেল জার্মানির প্রথম কয়েক দশকের তুলনায় এখনও এই উপস্থিতির হার অনেক কম। তখন ৮৫ শতাংশের বেশি ভোটার নিয়মিত ভোট দিতে আসতেন।
বার্লিনে প্রথমবারের মতো শক্তিশালী হিসেবে আবির্ভূত বাম দল
জার্মানির রাজধানী বার্লিনে সমাজতান্ত্রিক বামপন্থি দল অপ্রত্যাশিত সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছে। চূড়ান্ত ভোট গণনায় ১৯ দশমিক নয় শতাংশ ভোট পেয়েছে জার্মান ভাষায় ডি লিংকে নামের দলটি। ২০২১ সালের নির্বাচনের তুলনায় এই ভোট প্রায় দ্বিগুণ।
গত বছর দলটির নেতা সাহরা ভাগেনক্নেশট ডি লিংকে থেকে বের হয়ে গিয়ে নিজের দল বিএসডাব্লিউ গঠন করেন। এরপর বামপন্থি ভোটারদের ভোট ভাগাভাগি হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন ডি লিংকের নেতারা।
অবশ্য বার্লিনে অতি-ডানপন্থি এএফডিও ভালো ফল করেছে। আগের ফেডারেল নির্বাচনে পাওয়া নয় দশমিক চার শতাংশ থেকে বেড়ে এবার ১৫ দশমিক দুই শতাংশ হয়েছে।
তরুণদের ভোট এই নির্বাচনের ফলে প্রতিফলিত হয়েছে। কট্টর বাম এবং কট্টর ডানপন্থি দলগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে সমর্থন বাড়িয়ে নিতে পেরেছে।
ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসকে বিশ্বনেতাদের অভিনন্দন
নির্বাচনের প্রাথমিক ফল প্রকাশের পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা সম্ভাব্য চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎসকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন।
রোববার রাতে এক ভাষণে ম্যার্ৎস অ্যামেরিকার সঙ্গে দূরত্বের ইঙ্গিত দিলেও দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প তার নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে রক্ষণশীলদের পক্ষে ভোট দেওয়া 'সকলকে অভিনন্দন' জানিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো জার্মানির জনগণও সাধারণ জ্ঞানহীন এজেন্ডা, বিশেষ করে জ্বালানি এবং অভিবাসন বিষয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।"
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ লিখেছেন, "জীবন রক্ষা, ইউক্রেনে সত্যিকারের শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং ইউরোপকে শক্তিশালী করতে জার্মানির সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যেতে উন্মুখ।"
ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য ন্যাটো বাহিনীর পরিবর্তে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীর ধারণা তুলে ধরেছেন ম্যার্ৎস।
ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটেও এক্স-এ দেয়া এক বার্তায় বলেছেন, "জার্মানিতে আজকের নির্বাচনে জয়ের জন্য ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস কে অভিনন্দন... আমাদের যৌথ নিরাপত্তার জন্য এই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আপনার সঙ্গে কাজ করতে উন্মুখ।"
জার্মানির প্রতিবেশী এবং গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ম্যার্ৎসকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় মাক্রোঁ লিখেছেন, "ফ্রান্স ও জার্মানির জন্য একসঙ্গে দুর্দান্ত কিছু করার জন্য এবং একটি শক্তিশালী ও সার্বভৌম ইউরোপের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমরা আগের চেয়েও বেশি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।"
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক্স-এ লিখেছেন যে তিনি, "দুই দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করতে আপনার আসন্ন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।"
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমারও ম্যার্ৎস এবং সিডিইউ/সিএসইউকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। দুই দেশের মধ্যে বজায় থাকা শক্তিশালী সম্পর্ককে আরো গভীর করতে, যৌথ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে এবং দুই দেশের প্রবৃদ্ধি বাড়াতে নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
জোট গঠনের আলোচনা
সিডিইউ/সিএসইউ সর্বাধিক ভোট পেলেও সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় ৩১৬টি আসনের জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে।
এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তাদের একটি জোট গঠন করতে হবে। একটি আলোচনা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাসও সময় লেগে যেতে পারে।
২০১৭ সালে জোট গঠনের আলোচনায় জার্মান ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় লেগেছিল। তখন দেশটিতে প্রায় ছয় মাস কোনো সরকারই ছিল না। তবে যদি অংশীদারদের রাজনৈতিক অগ্রাধিকারগুলো কাছাকাছি নিয়ে আসা যায় এবং তিনটির পরিবর্তে কেবল দুটি দল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, তাহলে আলোচনা আরও দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে।
সিডিইউ/সিএসইউ বিদায়ী চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের এসপিডি দলের সঙ্গে জোট গঠন করবে বলে আশা করছেন অনেকে। ১৬ দশমিক চার শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এসপিডি।
অতি-ডানপন্থি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি - এএফডি এর সঙ্গে কাজ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সিডিইউ/সিএসইউ। নির্বাচনের আগেও একাধিকবার এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সম্ভাব্য চ্যান্সেলর সিডিইউ এর নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস।
নেতারা কে কেমন করলেন
সিডিইউ নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস নিজের কেন্দ্রে জয়লাভ করেছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৭ দশমিক সাত শতাংশ ভোট। তার সঙ্গে লড়াই করেছিলেন এএফডি প্রার্থী ডার্ক ওয়াইজ। তিনি পেয়েছেন, ২১ দশমিক চার শতাংশ ভোট।
ওলাফ শলৎস ২১ দশমিক আট শতাংশ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছেন। তিনি সিডিইউ প্রার্থীকে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন। এই কেন্দ্র থেকেই দাঁড়িয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং গ্রিন পার্টির নেত্রী আনালেনা বেয়ারবক। তিনিও পরাজিত হয়েছেন।
গ্রিন পার্টির নেতা তথা ওয়াইস চ্যান্সেলর রবার্ট হ্যাবেক পরাজিত হয়েছেন। তাকে হারিয়েছেন সিডিইউ প্রার্থী পেট্রা নিকোলাইজেন।
নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে জয়ী সিডিইউ
ভোট গণনার শেষে প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে জার্মানিতে।
সিডিইউ এবং সিএসইউ পেয়েছে ২৮ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট। বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফলেও এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
বিপুল পরিমাণ ভোট কমেছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের দল এসপিডি-র। প্রায় নয় শতাংশ ভোট কমে তারা পেয়েছে ১৬ দশমিক চার শতাংশ ভোট।
দ্বিতীয় জায়গায় আছে অতি দক্ষিণপন্থি দল এএফডি। তারা পেয়েছে ২০ দশমিক আট শতাংশ ভোট।