জার্মান উদ্যোক্তার অতুলনীয় মোটরবাইক সংগ্রহ
২৩ মার্চ ২০২৩১০৪ বছর পুরানো সাইডকার-সহ মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ পাওয়া অত্যন্ত কঠিন হলেও ইয়ুর্গেন ব়্যোডার অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সেটিকে চালু রেখেছেন৷ জার্মানির এই প্রাক্তন উদ্যোগপতির কাছে ঐতিহাসিক মোটরবাইক বড় নেশা৷ আগেকার দিনের মতো হেলমেট ছাড়াই সেগুলি চালিয়ে তিনি খুব আনন্দ পান৷ ইয়ুর্গেন বলেন, ‘‘সীমাহীন এই স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়া যায়৷ এমন পুরানো মোটরবাইক চালিয়ে নিশ্চিন্তভাবে প্রকৃতি উপভোগ করার আনন্দই আলাদা!''
জার্মানির হেসে রাজ্যে ২,০০০ বর্গমিটারেরও বেশি বড় জায়গা জুড়ে তিনটি বিশাল ঘরের মধ্যে ইয়ুর্গেন ব়্যোডারের ২০০-রও বেশি মোটরবাইক শোভা পাচ্ছে৷ বিভিন্ন যুগের এই যানগুলিকে সর্বদা চালু রাখতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেন৷ গোটা বিশ্বে অতুলনীয় এই সংগ্রহের দাম বেশ কয়েক কোটি ইউরো৷ এমন শখ সম্পর্কে ইয়ুর্গেন ব়্যোডার বলেন, ‘‘এটা এমন এক নেশা, যা স্বাস্থ্যের ক্ষতি না করলেও পকেটে বেশ টান মারে বৈকি৷ তবে হ্যাঁ, নেশা হলেও উৎসাহ-উদ্দীপনা জোগায়৷ এমন সংগ্রহের আনন্দ হলো, সবকিছু সঙ্গে সঙ্গে চালু হয় না৷ কখনো সেই কাজ করতে কয়েক বছর সময় লেগে যায়৷ তারপর সত্যি কখনো চালু হলে আনন্দ কয়েকগুণ বেড়ে যায়৷''
১৯১২ সালে তৈরি এই হার্লি ডেভিডসন তাঁর সবচেয়ে প্রিয় মোটরসাইকেলগুলির একটি৷ এককালে সেটি হলিউড তারকা স্টিভ ম্যাককুইনের সম্পত্তি ছিল৷ ইয়ুর্গেন বলেন, ‘‘স্টিভ ম্যাককুইন সম্ভবত লাল রং খুব ভালোবাসতেন৷ তাই গোটা মোটরসাইকেলে লাল রং করিয়েছিলেন৷ আমরা অনেক ধৈর্য্য ও ভালোবাসা নিয়ে সেই রং আবার দূর করেছি৷ শেষে বাইকের মূল রং আবার স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷''
১৯০৩ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান' গোটা ইউরোপে একমাত্র অবশিষ্ট যান৷ পাশেই ১৯২৩ সালে তৈরি বিএমডাব্লিউ কোম্পানির আর-থার্টিটু মডেলের মোটরবাইক শোভা পাচ্ছে৷
সংগ্রহের মূল আকর্ষণ অবশ্যই এক ঘর-ভর্তি সাইডকার৷ সেখানে এমন অনেক যান রয়েছে, যেগুলির উৎপাদন বহুকাল আগেই বন্ধ হয়ে গেছে৷ অতীতে এমন সাইডকারের নানা প্রয়োগ ছিল৷ এমনকি বন্দিদের স্থানান্তরিত করতেও সেটি ব্যবহার করা হয়েছে৷
নিজের আয়োজিত সব প্রতিযোগিতা ও উৎসবেও ইয়ুর্গেন গত শতাব্দীতে তৈরি সাইডকারগুলিকে বিশেষভাবে তুলে ধরেন৷ সেইসঙ্গে এমন সাইডকার নিয়ে মোটরসাইকেল রেস আবার আকর্ষণীয় করে তোলার উদ্যোগও নিচ্ছেন তিনি৷
এক প্রতিযোগিতার কল্যাণে তাঁর সর্বশেষ সম্পদ হাতে এসেছে৷ সেটা হলো গত শতাব্দীর আশির দশকে জার্মান রেসার গ্যুন্টার মিশেলের তৈরি এক ডিজাইনার মোটরসাইকেল৷ ইয়ুর্গেন ব়্যোডার বলেন, ‘‘এটা আমার পছন্দ হতোই৷ প্রযুক্তির দিক থেকে এটি সত্যি অসাধারণ উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয়৷ ফলে শেষ পর্যন্ত আবেগের মূল্য স্থির হবে৷ অন্যদের সঙ্গে দাম নিয়ে কথা বললেও আমার সঙ্গে তা চলবে না৷ আশাকরি আমাকে কখনো সেটি বিক্রি করতে হবে না৷ সেটা করতে হলে আমার হৃদয় একেবারে ভেঙে যাবে৷''
আবার রাজপথে মোটরবাইক পরীক্ষার দিকে নজর দেওয়া যাক৷ বেশিরভাগ ভিন্টেজ মোটরবাইক পথে নামানোর জন্য কর্তৃপক্ষের সীমিত অনুমতি রয়েছে৷ যেমন পরীক্ষামূলক যাত্রার কারণে এমন যান চালানো যেতে পারে৷
যতদিন আর্থিক সামর্থ্য থাকবে, ততদিন তিনি ভিন্টেজ মোটরবাইক সংগ্রহ করবেন ও চালিয়ে যাবেন৷ তিনি না থাকলে হয়তো মিউজিয়ামে এমন যানের উপর ধুলা জমতো৷
গেয়ারহার্ড সনলাইটনার/এসবি