জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদঃ জার্মানি, জাপান, ভারত ও ব্রাজিল
২২ সেপ্টেম্বর ২০০৪পূর্ণ প্রশ্নে আরও প্রভাব বিস্তারের আগ্রহ প্রকাশ করলো৷
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠক চলাকালীন সময়ের ফাঁকে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশকা ফিশার, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, জাপানের প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কইজুমি এবং ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিল্ভা এক আলোচনায় মিলিত হলেন এবং এক যৌথ ঘোষনায় এ মর্মে দৃঢ় মত প্রকাশ করলেন, তাঁদের দেশগুলোকে জাতিসংঘের সর্বোচচ নীতি-নির্ধারণী পরিষদ- নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে৷
চার দেশের নেতারা তাঁদের ৩৫-মিনিটের বৈঠকে তাঁদের লক্ষ অর্জনে নিরাপত্তা পরিষদের বর্তমান সদস্যদের মাঝে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হলেন৷ জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিশার জানান, তিনি আর তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বিতর্ক চলাকালীন কোন এক সময়ে চলতি সপ্তাহেই আলোচনায় বসবেন৷ গত সোমবারের নিউইয়র্ক বৈঠকের পর চারটি দেশ মত প্রকাশ করলো ভবিষ্যতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে অবশ্যই আফ্রিকারও প্রতিনিধিত্ব থাকতে হবে৷ উল্লেখ্য যে, বর্তমানে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থীয়ী সদস্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন, রাশিয়া ও চীন৷ এদের সঙ্গে যোগ দেয় দশটি অস্থায়ী সদস্য৷ প্রতি দুই বছর অন্তর এদের স্থলে নতুন সদস্য যোগদান করে৷ দ্বিতীয় বিশ্ব-যুদ্ধের পর থেকেই এরকম হয়ে আসছে৷ এর পরিবর্তনের সময় হয়েছে এখন৷ নিউইয়র্কে জার্মানি, ভারত, জাপান ও ব্রাজিল তাদের বৈঠকে তাই মত প্রকাশ করেছে নিরাপত্তা পরিষদকে একুশ শতকের আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর বাস্তবতার প্রতিফলন ঘটাতে হবে৷ সে কারণেই দেশগুলো নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপ্রার্থী৷ নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারণ- এই বিষয়টিই আবারও জাতিসংঘের আলোচ্যসূচীর শীর্ষে৷ বিশেষ করে ইরাক-যুদ্ধই নতুন করে এই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে৷
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভে জার্মানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশকা ফিশার৷ কারণ, তিনি বলেন, জার্মানি হল জাতিসংঘের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থদাতা এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিমিশনে অন্যতম বৃহত্তম সৈন্য সরবরাহকারী এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শিল্পোন্নত দেশ৷ জাতিসংঘের সংস্কার সংস্থার আগামী বছরের কর্মসূচী৷
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোন দেশ স্থায়ী সদস্য হোক বা না হোক- প্রশ্ন হল সংস্কারের , মান- মর্যাদার নয়৷ আমরা একটি কার্যকর বহুবাদের পক্ষে এবং সে লক্ষ অর্জনে আমরা নিজেদের নিয়োজিত করব৷ আর এটা করতে হবে জার্মান ও ইউরোপীয়দের স্বার্থেই৷
এদিকে, জার্মানির প্রধান বিরোধী দল সিডিইউ-এর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক মুখপাত্র Wolfgang Schaeuble মত প্রকাশ করেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভের ব্যাপারে জার্মানির প্রচেষ্টার ফলে ইউরোপে অনৈক্য সৃষ্টি হবে৷ তাই তিনি জোরদার ইউরোপ-মুখী নীতি অনুসরণের আহবান জানান৷
আবদুস সাত্তার৷