জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে জুতো ছোঁড়ার নানা ব্যাখ্যা
১৬ আগস্ট ২০১০রবিবার মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাকে জুতো ছুঁড়েছিলেন যিনি, তিনি হলেন জম্মু-কাশ্মীরের গোয়েন্দা বিভাগের সাসপেন্ড হওয়া এক পুলিশ কর্মচারি৷ নাম আবদুল আহাদ জান৷ এই ঘটনাকে কাজে লাগাতে চাইছে কাশ্মীরের বিভিন্ন মহল৷ মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার প্রতিক্রিয়া, পাথর না ছুঁড়ে যদি কেউ জুতো ছোঁড়ে সেটা বরং মেনে নেয়া যায়৷ উপত্যকার বিচ্ছিন্নতাবাদিরা আহাদ জানকে রাতারাতি বানিয়ে ফেলেছে হিরো৷ হাজার হাজার ছেলেমেয়ে জানের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিবারকে জানিয়েছে অভিনন্দন৷ স্লোগান তুলেছে - তেরি জান, মেরি জান; আহাদ জান, আহাদ জান...৷ সরকারের বিরুদ্ধে জনরোষে এবং হুরিয়াতের ডাকা হরতালে পরিস্থিতি আবার উত্তপ্ত৷ বিভিন্ন স্থানে জারি করা হয় কারফিউ৷
আহাদ জান এখন পুলিশী হেফাজতে৷ পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, আহাদ জান উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন৷ মানসিক ভারসাম্যেরও অভাব আছে তাঁর৷ জানের পরিবার বলছেন, আহাদ সুস্থ৷ তবে কাশ্মীর উপত্যকায় পুলিশের হাতে অসামরিক লোকেদের মৃত্যু তাঁর মানসিক চাপের কারণ৷ চিরদিনই সে অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছে৷ জুতো ছোঁড়ার ঘটনা তারই প্রকাশ৷ রাজ্যের প্রধান বিরোধি দল পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতির কটাক্ষ, পরিস্থিতি সামলাতে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে হাবুডুবু খাচ্ছেন, তাতে এই ধরণের ঘটনা বিচিত্র নয়৷ পরিস্থিতির ওপর মুখ্যমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণ নেই৷
আহাদ জানের নিজস্ব বক্তব্য : ১৯৯২ সালে শ্রীনগরে বোমা বিস্ফোরণের পর তিনি যেভাবে নিজের জীবন বিপন্ন করে বহু পুলিশ অফিসারকে বাঁচিয়েছিলেন, তার স্বীকৃতিতে তাঁকে প্রোমোশন দেয়া হয়৷ কিন্তু গত ১৮ বছরে বহু দরবার করা সত্বেও, তা কার্যকর হয়নি৷ বঞ্চনা আর অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই সে জুতো ছুঁড়েছিল৷ এই ধরণের প্রতিবাদ নতুন নয়৷ এর আগে জুতো ছোঁড়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি, চীনের প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়া বাও এবং হালে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি. চিদাম্বরমকে লক্ষ্য করে৷ শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ীস মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় ত্রুটি থাকার জন্য ১৫জন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে ইতিমধ্যেই৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ