চাকরিহারা শিক্ষকদের উপর এবার পুলিশের লাঠি
এর আগে চাকরিহারা শিক্ষককে লাথি মেরেছিল পুলিশ, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ লাঠি মেরে শিক্ষকদের বিক্ষোভ ভাঙার চেষ্টা করলো ।
বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ
এসএসসি নিয়োগ কেলেঙ্কারির ফলে চাকরি হারানো শিক্ষকরা বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন, তাদের পুনর্বহাল ও ন্যায্য বেতনের দাবিতে। চাকরিহারা শিক্ষকরা তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ করছিলেন।
দীর্ঘমেয়াদি অবস্থান
প্যারা-শিক্ষকরা প্রায় ৫০ দিন ধরে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান ধর্মঘট করছিলেন, কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সদর্থক সাড়া পাওয়া যায়নি। এইদিন তারা নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা, স্থায়ী চাকরি, এবং প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের দ্রুত নিয়োগের দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বসেন।
সকাল থেকে অবস্থান বিক্ষোভ
আন্দোলনটি সকাল থেকেই চলছিল, শিক্ষকরা রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুরের দিকে প্রতিবাদকারীদের অবস্থানে আশপাশের এলাকায় যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ বিক্ষোভ তুলে দিতে আসলে উত্তেজনা বাড়ে।
চাকরিহারা শিক্ষকরা যোগ দিলেন
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে বিকাশ ভবনের সামনে চাকরিহারা শিক্ষকেরা জড়ো হতে শুরু করেন। দফতর ঘেরাও করে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। বিকেলে চাকরিহারাদের তরফে জানানো হয় তারা নতুন করে পরীক্ষায় বসবেন না। তাদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতক্ষণ এসে তাঁদের আশ্বস্ত না করছেন, ততক্ষণ বিকাশ ভবনের বাইরে অবস্থান চলবে।
আটকে পড়েন শতাধিক কর্মচারী
সকাল থেকেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বিকাশ ভবন। পুলিশের সঙ্গে একাধিক বার ধস্তাধস্তি হয় চাকরিহারাদের। তাদের একাংশ বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়েন বলে অভিযোগ। ঘেরাওয়ে আটকে পড়েন শতাধিক কর্মচারী।
পুলিশের প্রবল লাঠিচার্জ
বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ রাতে প্রবলভাবে লাঠিচার্জ করে। পুলবিশের লাঠির আঘাতে অনেকে আহত হন। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বিধাননগর পুরনিগমের চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত। তাকেও বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। অভিযোগ, অনেকে সব্যসাচীর গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েছিলেন। পরে পুলিশ তাকে বার করে আনে।
রাতে রণক্ষেত্র
আচমকা রাত আটটার পর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে, যার ফলে পরিস্থিতি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশের লাঠিচার্জের ফলে বিক্ষোভকারীদের অনেকেই আহত হয়েছেন। অভিযোগ, কারও মাথা ফেটে গিয়েছে, কারও পায়ে আঘাত লেগেছে।
পুলিশ অবরোধ তুলতে ব্যর্থ
পুলিশ জানায়, আন্দোলনকারীরা বিকাশ ভবনে আটকে থাকা কর্মীদের বাড়ি ফেরার পথ দিতে অস্বীকার করে, যার ফলে বলপ্রয়োগ করা হয়। পুলিশের দাবি, আন্দোলনের নেতা মেহবুব মণ্ডল নকশালপন্থি হিসেবে পরিচিত, যিনি অশান্তি সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছিলেন।
আহত শিক্ষকরা
প্রায় ২০ জন শিক্ষক আহত হন, যাদের মধ্যে কয়েকজন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হন। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, পুলিশ সাইরেন বাজিয়ে এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ করে, যা ছিল অমানবিক ও বর্বরোচিত। আহত শিক্ষকদের চিকিৎসার জন্য অভয়া মঞ্চ ও এবিভিপি-র চিকিৎসক দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
সমাজমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া
সমাজমাধ্যমে ঘটনাটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়, পুলিশের নির্মমতার নিন্দা করে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। কেউ কেউ এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের প্রতি অবমাননা হিসেবে উল্লেখ করে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করেন, শিক্ষকদের উপর নির্যাতনকে লজ্জাজনক বলে অভিহিত করেন।
সারারাত বিক্ষোভ
পুলিশের লাঠিচার্জ সত্ত্বেও বৃহস্পতিবারবার দিবাগত রাতে অবস্থান-বিক্ষোভ জারি রাখেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। শুক্রবার সকালেও তাদের বিক্ষোভ চলছে।