নানা ধরনের ঘটনার পেছনে বিশেষ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মনে করেন মানবাধিকার কর্মী এবং অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা গুম সংক্রান্ত কমিশন কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্য নূর খান৷
ডিডাব্লিউকে তিনি বলেন, ‘‘এইবারের গণআন্দোলনের মধ্যে বহু ধরনের শক্তির সমাবেশ ঘটেছিল৷ এর মধ্যে ছোট ছোট অনেক শক্তি ছিল৷ এরা মূলত উগ্রপন্থায় বিশ্বাসী৷''
দেশটির গণতন্ত্রের পথে যাত্রা এবং আগামী নির্বাচন, দুটিই এসব কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, মনে করেন তিনি৷
আগস্টে দায়িত্ব নেয়ার পর সেপ্টেম্বরেই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু করার ঘোষণা দেয় সরকার৷ এরপর অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটলেও মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷
ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেয়া এক তথ্যে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম পাঁচ মাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে মারা গেছেন ১৭ জন৷
এর মধ্যে দেশের অন্যতম বৃহৎ দল বিএনপির নেতাও রয়েছেন৷
১২ ফেব্রুয়ারি আরেক মানবাধিকার সংস্থা অধিকার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ১২ জনের হেফাজতে মৃত্যুর তথ্য দেয়া হয়েছে৷ অধিকার জানিয়েছে, এদের মধ্যে তিন জন পুলিশের হেফাজতে এবং অন্যরা ব়্যাব ও সেনা হেফাজতে ছিলেন৷
নিহতদের অন্তত সাত জনের নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে, চার জনের শরীরে গুলির দাগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে অধিকার৷
বার্তা সংস্থা এএফপিকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জনসংযোগ পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি-উদ-দৌলা চৌধুরী জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনী ‘সব ঘটনার তদন্ত করছে'৷
নূর খান মনে করেন, পুলিশের কাজ সেনাবাহিনীকে দিয়ে করানোর কারণে এই সংকট আরো বাড়ছে৷
তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, ‘‘তথ্য উপাত্ত যা পাওয়া যাচ্ছে তাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বাড়ছে৷ এটা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন৷ এই সরকারের আমলে আমরা এটা আশা৷''
নূর খান বলেন, ‘‘সিভিলিয়ানদের কীভাবে হ্যান্ডেল করতে হয় সেই সম্পর্কে সেনাবাহিনী অভিজ্ঞ নয়৷ ফলে তারা যে শুধু বিচারবহির্ভূত হত্যায় জড়িয়েছে, তা নয়৷ তাদের বিরুদ্ধে এখন ডাকাতি, ছিনতাই, বাড়ি দখল করা, মানুষ পাচার করার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠছে৷''