‘কাউকে হেয় করে, ছোট করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে না'
৯ মে ২০২৫শিক্ষাবিদ ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর কাছে এসবই জানতে চেয়েছে ডয়চে ভেলে...
ডয়চে ভেলে : বাংলাদেশে শিল্প ,সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে রাজনীতির একটা প্রভাবআগে থেকেই আমরা দেখি। বিশেষ করে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিটিভিতে অলিখিত কালো তালিকা হয়। একদল শিল্পী নিষিদ্ধ হয়ে যান। আরেকদল সেখানে আসেন। এই বাস্তবতা আরো নানা ক্ষেত্রে দেখা যায়। এবার সরকার পরিবর্তনের পর সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষদের রাজনৈতিক কারণে নানাভাবে অপদস্থ হওয়ার ঘটনা ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখেন?
রাশেদা কে চৌধুরী : প্রথমত শিল্প, সংস্কৃতি রাজনীতির বাইরে না। কিন্তু দলীয় রাজনীতির ছায়া পড়ে যায় আমাদের দেশে। বাংলাদেশে যতগুলো প্রগতিশীল আন্দোলন হয়েছে, ১৯৬৯ সালের রাজনৈতিক আন্দোলন থেকে গণআন্দোলন- সব জায়গায় সংস্কৃতি কর্মীরা একটা ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু ধীরে ধীরে যেটা হয়েছে, দেশের জন্য করার চেয়ে অনেক বেশি দলের জন্য তারা করেছেন। সেখানে দলের আনুগত্য যারা পেয়েছেন, বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের আনুগত্য পাওয়ার পরে তাদেরকেই আমরা সব জায়গাতে দেখেছি। কিন্তু বিষয়টা এমন হয়ে গেছে, আমরা যারা নাগরিক, তারা এই প্রশ্নটি করতে চাই- তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যান কিনা? আমি সাম্প্রতিক একটা উদাহরণ দেই, এত বড় একটা গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল আমাদের দেশে। এর শুরুটা তো গণঅভ্যুত্থান ছিল না। এই যে কোটা আন্দোলন, এটাকে দমন করার জন্য তৎকালীন সরকার যা করেছে সেটা তো জাতিসংঘের রিপোর্টেও এসেছে। তখন কিন্তু আমরা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের লোকজনকে প্রতিবাদ করতে দেখিনি। তারা নামেননি। ফলে তাদের জনবিচ্ছিন্নতা বেড়েছে। পরে অনেক নেতৃস্থানীয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমার কাছে পরিতাপ করে বলেছেন, তাদের ভুল হয়েছে। এটা কি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বেশি ঘোরাফেরা করার কারণে? মানুষ আসলে দেখে তারা প্রকাশ্যে কী করেছেন। তারা কিছু না করার কারণে একটা বিশেষ গোষ্ঠী উপরে উঠেছে। আমিও একমত, যখন কোনো দলীয় সরকার আসে তখন অনেককেই আনুকূল্য দেওয়া হয়। অনেকে সেই আনুকূল্য পান না। অলিখিতভাবে এক ধরনের কালো তালিকাভুক্তির বিষয়টি দেখি আমরা। এটা গ্রহণযোগ্য না। একটা সুস্থ সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে এটা কলুষিত করে। এটা ঠিক না মোটেও। ইদানিংকালে এটা আমরা আরো নানাভাবে দেখতে পেয়েছি, যেটাকে এখন বলা হচ্ছে, ট্যাগিং করা হয় দোসর ছিলেন, এটা ছিলেন, ওটা ছিলেন। তাদের তো একটা দায় ছিল। সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারেননি বলে এখন মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কমে গেছে। কিন্তু এটাও ঠিক, যদি গ্রহণযোগ্যতার কথা বলি, তাহলে কাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা, কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা সেটাও কিন্তু আমাদের কাছে প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে আছে।
শিক্ষা ,সাহিত্য ও সংস্কৃতি জাতির বিকাশে ভূমিকা রাখে। একজন রোকেয়া প্রাচীকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে ফুল দিতে যাওয়ার কারণে হামলার শিকার হতে হয়। অভিনেতা সিদ্দিকের উপর হামলা হয়। কোনো জাতীয় দিবস পালন করতে গিয়ে কেন একজন সাংস্কৃতিক কর্মীকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে? আপনার মতামত কী?
বিষয়টিকে অবজেকটিভলি যদি আমি বলি, এটার জন্য তারা নিজেরাও কিছুটা দায়ী। কিন্তু ভুল তো মানুষের হতে পারে। যেমন, ধরেন, সিদ্দিকের নামে তো আসলে অনেক কিছু তথ্য-প্রমাণও আছে। একটু বাড়াবাড়ি করেছেন। রোকেয়া প্রাচীর ব্যাপারে হয়ত সেরকম নেই। কিন্তু আমি একটা দলকে সমর্থন করি বলে আমাকে হেনস্থা করা হবে এটা তো গণতান্ত্রিক হলো না। এটা গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা একদিকে গণতন্ত্র, মানবাধিকারের কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলছি, অথচ এক্ষেত্রে রোকেয়া প্রাচীর ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আমি যদি কাউকে নেতা বলে মানি, তাকে সম্মান জানানোর অধিকার তো আমার আছে। আপনি যদি অন্য কাউকে নেতা মনে করেন, তাকে আপনিও সম্মান করেন, তাতে তো কোনো অসুবিধা নেই। এই বিষয়গুলো সম্প্রতি খুব বেশি মাথাচাড়া দিয়েছে। এর ফলে যারা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, আমি শুধু সরকারকে বলবো না, অনেক প্রভাবশালী গোষ্ঠী তাদের হয়ত সরকারের উপরও প্রভাব আছে, তারা যেটা করছেন, তাতে এমনভাবে সিগন্যাল যাচ্ছে, তাতে প্রশাসন বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কি করবে সেটা বুঝে উঠতে পারছে না। একটা উদাহরণ দেই, বসন্ত উৎসব অনেক জায়গায় পালন করতে পারেননি। তারা কিন্তু কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত না। একটা সাংস্কৃতিক সংগঠন করতে চেয়েছে বসন্ত উৎসব স্থানীয়ভাবে, কিন্তু জেলা প্রশাসক তাদের অনুমতি দেননি। তাকে যখন প্রশ্ন করা হয়েছে, তখন তিনি বলেছেন, তিনি নিরাপত্তা দিতে পারবেন না, আপনারা ঘরের ভেতরে করেন। বাইরে খোলা আকাশের নিচে করতে পারবেন না। বসন্ত উৎসব তো ঢাকায় ঘটা করে করা হলো। কিন্তু জেলা পর্যায়ে কী হলো? তাদের কাছে এই সিগন্যাল কেন গেল যে, তারা নিরাপত্তা দিতে পারবেন না। তাহলে কে দেবে নিরাপত্তা? এই বার্তাটা কেন যাচ্ছে? শিক্ষা ও সংস্কৃতি একটা জাতির বিকাশে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। এখানে অর্থনীতি, অস্ত্র কোনো কিছুই কাজে লাগবে না যদি মানবিক শিক্ষা ও সংস্কৃতিমনা জাতি আমরা গড়তে না পারি। এর মূল্য কিন্তু পরে দিতে হবে। কিশোর গ্যাং হচ্ছে কেন? এর পেছনে আমাদের আবহমান বাংলার যে সংস্কৃতিকে সম্মান জানানোর বিষয়, আপনারা দেখেছেন, আমাদের শিক্ষকদের টেনে নামানো হচ্ছে। এই শিক্ষার্থী তো আমরা চাইনি।
আমরা দেখছি, শিল্পকলা একাডেমীতে নাটক চলাকালে কিছু মানুষ সেটা বন্ধের দাবি তুলছে এবং দিনশেষে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। লালনের উৎসব করতে গেলে বাধা দেয়া হচ্ছে এবং সেই উৎসবও বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এতে কি বাংলাদেশে সংস্কৃতির চর্চার জায়গাটা সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে না?
দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, এদেশে কনসার্ট নিয়ে মাতামাতি হয়, গজল উৎসব নিয়ে মাতামাতি হচ্ছে, বিদেশি অতিথি নিয়ে এসে আমরা মহানন্দে বিশাল বিশাল অনুষ্ঠান করছি, কিন্তু আমার ঘরের সংস্কৃতি যারা তুলে এনেছেন, যারা আমাদের কাছে বাতিঘর সেই হাসন রাজা, লালন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুলকে বাদ দিয়ে বিদেশি সংস্কৃতিকে আমরা কেন যেন মনে হচ্ছে বেশি গুরুত্ব দিয়ে ফেলছি। এটার প্রভাব নতুন প্রজন্মের উপর খুব নেতিবাচকভাবে পড়বে। ইতিমধ্যে দেখতেও পাচ্ছি। নজরুল তো আমাদের জাতীয় কবি, রবীন্দ্রনাথ তো বিশ্বের কবি বিশ্বকবি এদের ছোট করে, হাসন রাজার অনুষ্ঠান যদি না করতে দেই, লালন ফকিরের কিছু যদি না করতে দেই, বিভিন্ন অঞ্চলে আছেন শিতালং শাহ, রাধারমন দত্তকে যদি আমরা তুলতে আনতে না পারি, তাহলে বাইরের সংস্কৃতি দিয়ে আমরা কী করবো? আমরা যদি নিজেদের সম্মান দিতে না পারি, তাহলে অন্যদের সম্মান কিভাবে দেবো?
সাংস্কৃতিক চর্চা সংকুচিত হলে জতির জীবনে কী ধরনের প্রভাব পড়ে?
এখানে একটা বড় প্রশ্ন আছে- কার সংস্কৃতি, কিসের সংস্কৃতি? আমরা বাইরের সংস্কৃতি নিয়ে এখন মাতামাতি করছি। এই যে কনসার্টের কথা বললাম, এটা করেন ভালো কথা। কিন্তু এই সংস্কৃতি চর্চা যদি সংকুচিত হয়ে যায়, যেটা আমরা দেখেছি শিল্পকলা একাডেমীতে, পরবর্তীতে দেখেছি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছেন- এটা কাম্য ছিল না, ইত্যাদি। কিন্তু ঘটনার আগে কেন হলো না? কেন এই ঘটনাটি ঘটলো? সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের কয়েকটি প্রজন্ম শিল্পকলা একাডেমীর মাধ্যমেই সংস্কৃতি চর্চা করেছে। সেই শিল্পকলা একাডেমী সবার জন্য সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে, যেটা আমার রিক্সাওয়ালা ভাইয়েরও দরকার আবার উচ্চতর পরিবারের সন্তান তাদেরও দরকার। এটা না হলে বারবারই বলবো, সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা আর মানসম্পন্ন শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি কিন্তু এগিয়ে যেতে পারবে না। এটার কিছু কিছু আলামত আমরা দেখতে পাচ্ছি। আমাদের সন্তানেরা সঙ্গতকারণেই হয়ত আন্দোলনমুখী হয়েছে, কিন্তু এখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানমুখী হচ্ছে না। এই বিষয়গুলো তো আগামীতে প্রভাবিত করবে। আমরা যদি সবগুলো মূল ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নেই, ইংরেজি ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাদে মূল ধারার যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেখানেই তো ৭০ ভাগ শিক্ষার্থী পড়ে সেখানে সংস্কৃতি চর্চা কতটুকু হচ্ছে। কতটুকু আমাদের শিক্ষার্থীদের শেখাতে পারছি? আপনারা প্রায়ই দেখেন, শহীদ মিনার কেন করা হয়েছে সেটার উত্তর দিতে পারে না, ভাষা শহীদ কারা- সেটার উত্তরও অনেক সময় দিতে পারে না আমাদের শিক্ষার্থীরা? সংস্কৃতি আর শিক্ষা ছাড়া তো আমাদের হবে না। ঢাকার শিল্পকলা নিয়ে আমরা অনেক বেশি চিন্তা করি, মিডিয়াতেও আসে। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে যে ছোট ছোট শিল্প গোষ্ঠীগুলো আছে, তাদেরকে আমরা আসলেই পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি। তাদের আমরা পাশ কাটিয়ে পাশে ফেলে দিয়েছি। আপনি তো শুধু ঢাকাভিত্তিক করলে হবে না, শহরভিত্তিক করলে হবে না, তারই ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি।
আমরা দেখেছি, কিছু শিল্পীকে বিশেষ করে নারী শিল্পীরা কোনো শো-রুম বা এমন কিছু উদ্বোধন করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন। একটা গ্রুপ তাদের বিরুদ্ধে ‘মব' সৃষ্টির উষ্কানি দিচ্ছেন। এসব প্রবণতা কি নারীদের ঘরের মধ্যে আটকে রাখার দিকে নিয়ে যেতে পারে? নারীরা বাইরে নিরাপত্তা না পেলে তো...
এটা আমাদের জন্য অশনি সঙ্কেত। নারী তো সমাজের অর্ধেক। তারা কিন্তু ভোটার। রাজনৈতিক দলগুলো, শুধু ‘উগ্রবাদী' নাম দিয়ে বললে হবে না, তারা উগ্রবাদী তো বটেই, তারা কি এতদিনে নারীর অবদান অস্বীকার করছেন? বিভিন্ন দেশে তো আমাদের অনেকেই আছেন। তাদের ছোট করে তো আমরাও ছোট হবো। সংস্কৃতি চর্চা যারা করেন, তাদের অসম্মান করা - এটা তো রাষ্ট্রীয়ভাবে বন্ধ করা উচিত। একটা প্রতিবাদ আসা উচিত, শক্ত অবস্থান থাকা উচিত। আমি একজন নাগরিক হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এমন একটা অবস্থান চাইবো। তবে আশার বিষয় হলো, আমাদের মাঠে-ময়দানে দীর্ঘদিনের কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলি, এ দেশের বেশিরভাগ মানুষ ধর্মভীরু, ধর্মান্ধ নয়। ফলে এদের সেই মেসেজ দেওয়া উচিত যে নারী কোনো পণ্য না, নারীকে কোনোভাবে অবদমন করা, তার অধিকারকে ছোট করা যাবে না। তার অবমাননা করা যাবে না।
কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করার কারণে সাংস্কৃতিক কর্মীদের অনেকের উপর হামলা হচ্ছে। এগুলো প্রতিরোধে সরকার বা প্রশাসন কী ভূমিকা রাখতে পারে? এই মুহুর্তে তাদের করণীয় কী?
প্রথম করণীয় আমি বলবো, সরকার তো রাষ্ট্রের একটা অঙ্গ। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুরক্ষা দেওয়া। এটা তো নারী, পুরুষ, শিশু সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু এটা হচ্ছে না, কারণ, একটা বিশেষ গোষ্ঠী একটা উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে একটা শক্ত বার্তা যাওয়া উচিত যে কাউকে হেয় করে, কাউকে ছোট করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। গণতন্ত্রে সবার কথা বলার, চলাফেরা করার অধিকার আছে। এখন আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, পোশাক নিয়ে কথা বলা হচ্ছে। কোনো সাংস্কৃতিক কর্মী যদি কোনো দলকে সমর্থন করার কারণে অপদস্থ হন, তাহলে সেটা তো গণতান্ত্রিক হলো না। এখান থেকে সরকারের একটা শক্ত বার্তা যাওয়া উচিত। কেউ কাউকে ছোট করার কোনো অধিকার নেই।
এমনো দেখা যাচ্ছে, রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই, কিন্তু লাইব্রেরি থেকে বই লুট হচ্ছে। অভয়আরণ্য লাইব্রেবি নামে একটা লাইব্রেরি থেকে বই লুট করে নেওয়া হয়েছে, কারণ ,সেখানে থাকা রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের বই নাকি নাস্তিকতা শেখাচ্ছে? বলা হয়েছে, এসব বই বাংলাদেশে চলবে না। অথচ একজন নোবেলজয়ী বিশ্বকবি, আমাদের জাতীয় সংগীত তার লেখা ; আরেকজন আমাদের জাতীয় কবি৷ এসব ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা কী হওয়া উচিত?
আমি বারবার বলবো, অন্তর্বর্তী সরকারকে এক্ষেত্রে শক্ত ভূমিকা নিতে হবে। বই হোক, যা-ই হোক, বই তো আমাদের একটা বড় সম্পদ, একটা সামাজিক রিসোর্স। সেটাকে এভাবে ছোট করে কোনো রাজনৈতিক দল যদি বলে থাকে বা সেই প্রোপাগান্ডা তারা চালায় যে, এগুলো হচ্ছে নাস্তিকতার বিষয়, তাদের সেটা প্রমাণ করতে হবে। আমাদের নবীজীই তো বলছেন, ‘‘লেখাপড়া করতে হলে প্রয়োজনে চীন দেশে যাও।'' এই ঘটনা শুধু লাইব্রেরিতে নয়, বাংলা একাডেমীর বইমেলাতেও আমরা দেখেছি। এগুলোতে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া উচিত নয়। যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন, তাদের এটা শক্ত হাতে বিবেচনা করতে হবে।