কলকাতায় মেট্রো বিভ্রাটে সমস্যায় নিত্যযাত্রীরা

মেট্রোতে ভিড় হওয়ার কারণে বহু মানুষ ঠিক সময় ট্রেন ধরতে পারছেন না। অভিযোগ, নিয়মিত ট্রেনের সময় বদলাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় ট্রেন আসছে না।

মেট্রোর নতুন লাইনগুলি গত একবছরে এক এক করে খুলেছে। এই লাইনগুলি সম্প্রসারিত হয়ে ব্লু লাইনের এলাকাগুলির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। ফলে পুরনো ব্লু লাইনে যাত্রী সংখ্যা আচমকা অনেকটা বেড়ে গেছে। কিন্তু ট্রেনের সংখ্যা বাড়েনি। কমেনি দুটি ট্রেনের মধ্যবর্তী সময়। দমদম, চাঁদনি চক, এসপ্ল্যানেড, রবীন্দ্র সদন, কালীঘাট বা টালিগঞ্জের মতো স্টেশনে আগেই অফিস টাইমে যাত্রী বেশি হতো। এখন প্রায় সব স্টেশনেই যাত্রী গিজ গিজ করছে।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, পরীক্ষামূলকভাবে রাত ১০ টা ৪০-এ মেট্রো পরিষেবা চালানো হচ্ছিল। দমদম পর্যন্ত সেই ট্রেন চলছিল। সেই পরিষেবা এবার বন্ধ করে দেওয়া হলো।

রাতের এই ট্রেনে উপকৃত হচ্ছিলেন বহু যাত্রী। ট্রেনে ভিড়ও হচ্ছিল ভালো। আচমকা এই পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা।

বর্তমানে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় প্রতি দিন গড়ে ১ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেন। পরিষেবা পুরোদমে চালু হয়ে গেলে দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ৭ লাখ পেরিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। নতুন লাইন চালু হওয়ার পর পুরনো লাইনে যাত্রীর ভিড় আরো বেড়েছে। কারণ, লাইনগুলি একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।

দক্ষিণেশ্বর থেকে শহিদ ক্ষুদিরাম পর্যন্ত যাত্রীরা রাত ৯টা ২৮-এর মেট্রো পরিষেবা পাবেন। শহিদ ক্ষুদিরাম থেকে দক্ষিণেশ্বরগামী শেষ মেট্রো ছাড়ছে রাত ৯ টা ৩৪ মিনিটে। একদিকে যখন যাত্রীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, সেখানে রাতের মেট্রো বন্ধের সিদ্ধান্তে যাত্রীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রবল ক্ষোভ।

সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্প এত দিন দুটি ভাগে চালু ছিল। প্রথমে চালু হয় সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে শিয়ালদহ স্টেশন। যা গ্রিন লাইন ওয়ান নামে পরিচিত। গত বছর হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেডের লাইন চালু হয়েছে। যা পরিচিত গ্রিন লাইন টু নামে। কিন্তু শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত মেট্রোর কাজে বার বার বিঘ্ন ঘটেছে। এ বার সেই বাধা কাটিয়ে জুড়ে গিয়েছে শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেডও।

বউবাজারের দুর্গা পিতুরি লেনে মেট্রোর কাজ চলার সময় একের পর এক ধস নেমেছে। ভেঙে পড়েছে বাড়ি। এখন ওই জায়গা দিয়েই ট্রেন চলছে। সুড়ঙ্গ দিয়ে মেট্রো যাওয়ার সময় মাটির উপর বাড়ি কেঁপে উঠছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

কবি সুভাষ মেট্রো স্টেশনের একটা অংশে ভাঙনের ঘটনায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে পরিষেবা ব্যাহত হয়ে রয়েছে। মেরামতের কাজ কবে শেষ হবে, কেউ জানে না।

এত সমস্যার মধ্যেও কিছু সুবিধা তৈরি হয়েছে। নতুন লাইনের উদ্বোধন হওয়ায় যাত্রীরা এখন বিমানবন্দরে মেট্রো করে পৌঁছাতে পারছেন। বহুদিন ধরে বিমানবন্দর অঞ্চলে মেট্রো চালু করার দাবি ছিল।