কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিটে রমজানের বাজার
রমজান মাসে জাকারিয়া স্ট্রিট ঠিক বড়দিনের পার্ক স্ট্রিটের মতো ঝলমলে। প্রতি সন্ধ্যায় গমগম করে জাকারিয়া স্ট্রিট।
সেজে ওঠা জাকারিয়া স্ট্রিট
প্রতি বছর রমজান মাসে সেজে ওঠে কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। শুধু আলোয় নয়, বিরিয়ানি, কবাব, ফালুদা, শরবত, হালুয়া, শিরমলের গন্ধে ম ম করে নাখোদা মসজিদের আশেপাশের অঞ্চল।
ইফতারের জন্য
উপলক্ষ ইফতার। নাখোদা মসজিদের ছত্রছায়ায় থাকা জাকারিয়া স্ট্রিটের দু’ধারে সাজানো সারি সারি খাবারের দোকানগুলিতে সন্ধ্যায় ভিড় জমতে শুরু করে।
সুস্বাদু খাবারের টানে
কলকাতার শতাব্দীপ্রাচীন স্থাপত্য নাখোদা মসজিদের আশপাশের এই এলাকা রমজানের মাস জুড়ে শহরের খাদ্যপ্রেমীদের ভিড়ে ঠাসা থাকে। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ এখানে আসেন সুস্বাদু খাবারের টানে। ১৮৫৬ সালে নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ কলকাতায় আসার পরেই এই শহরে বিরিয়ানির পথচলা শুরু হয়। তার পর থেকেই ধীরে ধীরে সেই ঘরানার খানাপিনাকে আপন করতে শুরু করে শহরবাসী।
খাদ্যপ্রেমীদের স্বর্গ
এককালে এই এলাকা ছিল রোজাদারদের উপোস ভাঙার ঠিকানা। তবে এখন গোটা কলকাতার খাইয়েরাই আসছেন এখানে। এ যেন আওয়াধি খাবারের ‘জন্নত’। গত কয়েক বছর ধরে এই তুমুল উৎসাহের কৃতিত্বের ভাগিদার সমাজমাধ্যমও বটে।
দুপুর থেকেই শুরু প্রস্তুতি
দুপুর থেকেই শুরু হয়ে যায় খাবার বানানোর তোড়জোড়। রমজান মাসে সন্ধ্যার পর থেকে দোকানগুলিতে চোখে পড়ে উপচে পড়া ভিড়।
জাকারিয়ার জনপ্রিয় খাবার
যে খাবারগুলো এখানে সবথেকে বেশি জনপ্রিয় সেগুলোর হদিশ দেওয়া যাক — আদম কাবাবের দোকান থেকে সুতা কাবাব, দিলশাদ লাজিজ কাবাবের দহি ও মালাই কাবাব, আল বাইক থেকে চিকেন স্পেশাল কাবাব, নিউ লখনউ হোটেল থেকে বিফ বটি রোল, বোম্বে হোটেল থেকে বিফ চাঁপ এবং ফিরনি, সুফিয়ার হালিম, তাসকিনের ফালুদা, লস্যি, দিল্লি ৬ এর আফগানি মুরগি, হাজী আলাউদ্দিন সুইটসের বত্তিসি হালওয়া।
দইবড়াও জনপ্রিয়
পরিচিত আওয়াধি খাবারের বাইরেও রোজা ভাঙার কয়েকটি চিরাচরিত খাবারের মধ্যে এই দইবড়া খুবই জনপ্রিয়।
মুচমুচে সিঙাড়ার আকর্ষণও কম নয়
ফুটন্ত কড়াইতে ভাজা হচ্ছে গরম মুচমুচে সিঙাড়া। সারাদিন ধরে অভুক্ত রোজাদারদের অন্যতম পছন্দের খাবার এটি।
বাখরখানির কদর
বাখরখানি। শুধু রমজান মাসেই নয়, জাকারিয়া স্ট্রিটে সারাবছরই বিক্রি হয় এই বাখরখানি। তবে রমজান মাসে এর বিক্রি বাড়ে।
ভিন্ন দুনিয়া
রমজান মাসে কলকাতার বুকে এ যেন এক ভিন্ন দুনিয়া। এত ভিড় সামলেও কিন্তু রমজ়ানে খাবারের মানের সঙ্গে কোনও রকম আপস করতে নারাজ জাকারিয়া স্ট্রিটের বিক্রেতারা।
শরবতের আকর্ষণ
‘মহব্বত কা শরবত’। সংযমের এই মাস মানুষে মানুষে ভালবাসা ছড়িয়ে দেয়ার মাসও। এই সুস্বাদু শরবতকে তাই ‘মহব্বত কা শরবত’ বলা হয়। ইফতারের আয়োজনে এই ভালোবাসার চুমুক থাকবেই।