ওষুধ শিল্প বিশ্বে অবস্থান ধরে রাখার চেষ্টা করছে জার্মানি
২ জুন ২০২৫জার্মানিতে ৬০০-র বেশি ওষুধ কোম্পানি আছে৷ এতে প্রায় চার লাখ মানুষ কাজ করেন৷ গত বছর প্রায় ৩৮ বিলিয়ন ইউরো মূল্যের ওষুধ উৎপাদিত হয়েছিল৷ এবং এই শিল্পের মূল্য ক্রমে বাড়ছে৷
জার্মান ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি এসোসিয়েশনের লাউরা পেরটি বলেন, ‘‘জার্মানির ওষুধ শিল্প এখনও অত্যন্ত শক্তিশালী৷ আমাদের গবেষণা ও উন্নয়ন খাত অত্যন্ত সফল৷ সারা বিশ্বে ওষুধ শিল্পের শীর্ষস্থানীয় দেশগুলির একটি জার্মানি৷ জার্মানির আর কোনো শিল্প ওষুধ শিল্পের মতো গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে তাদের রাজস্ব আয়ের এত বেশি অর্থ পুনরায় বিনিয়োগ করে না৷ নির্দিষ্ট করে বললে, ১৬ শতাংশ৷ এর অর্থ হলো, ওষুধ শিল্প এমনকি গাড়ি ও ইলেক্ট্রিক্যাল শিল্পের মতো খাতকেও ছাড়িয়ে গেছে৷''
জার্মানির প্রতিযোগিতামূলক ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ৷ যদিও চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোতে জেনেরিক, অর্থাৎ পেটেন্ট সুরক্ষা ছাড়াই ওষুধ, ক্রমবর্ধমানভাবে উৎপাদিত হচ্ছে; বিশ্ববাজারে জার্মানির শক্তি মূলত, গবেষণার উপর নির্ভর করে৷
আইকিউভিআইএ হাসপাতাল অ্যান্ড হেলথ সিস্টেমস এর সুজান ফান ডেয়ার বেক বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রগুলিতে বিশেষজ্ঞরা আছেন, যারা বাজারে নতুন নতুন উদ্ভাবন আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ৷ এর একটি ভালো উদাহরণ হলো কোভিড মহামারি৷ ঐ সময় জার্মান এক কোম্পানি বিশ্বকে টিকা উপহার দিয়েছিল৷''
তবে জার্মান অর্থনীতি বর্তমানে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখে আছে তা ওষুধ শিল্পকেও স্পর্শ করছে৷ যেমন জ্বালানির উচ্চ মূল্য এবং আমলাতান্ত্রিক বাধা৷ জার্মানিতে একটি নতুন ওষুধ পরীক্ষা করতে একটি কোম্পানিকে ৪৯টি ভিন্ন ভিন্ন নীতিশাস্ত্র কমিটির মুখোমুখি হতে হয়৷
লাউরা পেরটি বলেন, ‘‘গবেষণার উপর জোর দেওয়ার কারণে জার্মানি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জৈবপ্রযুক্তি হাবগুলির একটি হয়ে রয়েছে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে জার্মানির প্রতিযোগিতা বাড়ছে৷ এর অন্যতম কারণ হলো, ঐ অঞ্চলগুলিতে নিয়মকানুনের বাধা তুলনামূলকভাবে কম৷ এমনিতে ওষুধের বাজার অত্যন্ত জটিল এবং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত৷ তবে অন্যান্য দেশগুলি কখনো কখনো আরো আকর্ষণীয় পরিস্থিতি অফার করতে সক্ষম হয়, বিশেষ করে গবেষণা এবং উন্নয়নের জন্য৷''
এসব কারণে জার্মান কর্তৃপক্ষ গতবছর উৎপাদন প্রক্রিয়ায় গতি আনতে ওষুধ শিল্পে লাল ফিতার দৌরাত্ম কমানোর উদ্যোগ নেয়৷ এছাড়া, এই শিল্পে বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতিরও চেষ্টা করা হচ্ছে৷
সুজান ফান ডেয়ার বেক বলেন, ‘‘আমরা যদি এসব ক্ষেত্রে কাজ করি, যেমন গবেষণা নিশ্চিত করা এবং ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা, তাহলে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে৷ এভাবেই আমরা আবার বিশ্বের ফার্মেসি হয়ে উঠতে পারবো৷''
ওষুধ শিল্প ভবিষ্যতেও উদ্ভাবনের চালিকাশক্তি এবং জার্মান অর্থনীতির একটি মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে৷
মার্তা গ্রুডজিনস্কা/জেডএইচ