ঐতিহ্যবাহী কলকাতার কুস্তি ও নোটিস
সকালে কলকাতার গঙ্গার পাড়ে কুস্তিগীরদের মারপ্যাঁচ দেখতে যান বহু পর্যটক। সেই কুস্তির আখড়াকেই নোটিস দিয়েছে পোর্ট ট্রাস্ট।
রবি ঠাকুরের কুস্তি
ছেলেবেলায় গঙ্গার পাড়ে মাটি মেখে পালোয়ানের কাছে কুস্তি শেখার কথা রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন। তিনশ বছরের পুরনো শহর কলকাতায় কুস্তির ঐতিহ্য তার চেয়েও পুরনো। এখনো বেশ কিছু সাবেক আখড়া ছড়িয়ে আছে গঙ্গার ধারে।
মাটি-বালির আখড়া
এভাবেই মাটি আর বালি মিশিয়ে কুস্তির জায়গা তৈরি করা হয়। প্রায় ৭০ বছর ধরে গঙ্গার ধারে চলছে এই সিয়ারাম ব্যায়াম আখড়া।
সিয়ারামকে নোটিস
মল্লিকঘাট ফুলবাজার থেকে গঙ্গার ঘাটে নামলেই হাওড়া ব্রিজের নীচে দেখা মেলে এই প্রাচীন আখড়ার। এই আখড়াকেই নোটিস দিয়েছে পোর্ট ট্রাস্ট। অভিযোগ, বহু টাকা বকেয়া রয়েছে এই আখড়ার। সব মিলিয়ে ৭৬ হাজার টাকা দিতে হবে তাদের।
বিনামূল্যের প্রশিক্ষণ
সিয়ারাম আখড়ায় প্রায় ৬০ জন পালোয়ান প্রতিদিন কুস্তি শেখেন। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে কুস্তি শেখানো হয়। আখড়ার গুরুজির বক্তব্য, এত টাকা তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়। মাসিক কিস্তিতে তারা টাকা দিতে পারবেন। নোটিসে বলা হয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে তাদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে।
বহু পুরস্কার
আন্তর্জাতিক স্তরে কুস্তি থেকে ভারত একাধিক পুরস্কার পাচ্ছে। জাতীয় কুস্তি অ্যাকাডেমিও আছে। তবে সিয়ারাম আখড়ায় এখনো পুরনো কায়দায় কুস্তির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত পঞ্চাশ দশকে জাতীয় স্তরে একাধিক পুরস্কার পেয়েছে এই আখড়ার পালোয়ানরা।
কুস্তির আগে ব্যায়াম
বিনামূল্যে শরীরচর্চারও ব্যবস্থা আছে এই আখড়ায়। কুস্তির আগে শরীরচর্চা করছেন শিক্ষার্থীরা।
শেষ নিদর্শন
আধুনিক হচ্ছে কলকাতা। বদলাচ্ছে তার চালচিত্র। সিয়ারাম আখড়ার মতো কোনো কোনো জায়গা এখনো সাবেক কলকাতার আতিহ্য বহন করছে। এমন আখড়া তুলে দিলে কলকাতার ঐতিহ্য মুছে যাবে বলে মনে করছেন বহু কলকাতাপ্রেমী। পর্যটকরাও আর দেখতে পাবেন না, বিনা পয়সার কুস্তির মারপ্যাঁচ।