ঋণ করার সামর্থ্য আছে বলেই ঋণ করেছি: এম এ মান্নান
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশো-তে এবারের বিষয় ছিল ‘শেখ হাসিনা ও ভূরাজনীতি৷ অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং বিএনপির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন৷
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে জার্মানির মিউনিখে অবস্থান করছেন, যেখানে তিনি বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন৷ নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা তার কূটনৈতিক সফলতায় সবাইকে তার পক্ষে নিয়ে আসতে পেরেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘‘তারা কি (ইউরোপ, অ্যামেরিকা) বাংলাদেশকে পরিত্যাগ করবেন? পথ দুইটা ছিল৷ একটা হচ্ছে বাংলাদেশকে পরিত্যাগ করা, সরকারকে পরিত্যাগ করা৷ কিন্তু তারা সেটা চাচ্ছে না৷ তারা যেটা চাচ্ছে এক ধরনের 'এনগেজমেন্টের' মধ্যে সরকারের রেখে এখানে আরো কীভাব গণতন্ত্র বিকাশ করা যায় সেই জন্য তারা কাজ করছে৷’’
বিএনপি কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা শুনে ২০২৪ সালের নির্বাচনে আসেনি? এমন প্রশ্নে ড. রিপন বলেন, ‘‘তাদের উপর ভরসা করে আমরা নির্বাচনে অংশ নেইনি বা নির্বাচনে অংশ নিতাম ব্যাপারটা এরকম না৷ সরকার এমন একটা আবহ তৈরি করেছে সেখানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না৷'' তার মতে, সরকারের ইচ্ছাই ছিলো বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন করা৷
তার কথার জবাবে বর্তমান সংসদ সদস্য এম এ মান্নান বলেন, ‘‘গণতন্ত্র সংলাপের বিষয়৷ শেখ হাসিনা শুধু চেয়ার থেকেই উঠেনি, বিএনপিকে চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন৷’’
বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি ও দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন ছিল সদ্য সাবেক এই মন্ত্রীর কাছে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘‘দুর্নীতি একটি বিশ্বব্যাপি ব্যাধি৷’’
সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশের অবনতির প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো করে ফায়দার চেয়ে আরো অফায়দা বেশি হয়৷ অবিমিশ্রভাবে আমরা এ তালিকায় নীচের দিকে থাকি আর উত্তরের দেশগুলো উপরের দিকে থাকে৷ ...এগুলাকে আমি মনে করি আমাদের এক ধরনের মানসিক চাপ তৈরি করে৷ বরং তারা বলতে পারতো দুর্নীতি কমানোর জন্য এই এই বিষয়গুলো করা দরকার, আমরা এই সহায়তাগুলো করব ইত্যাদি৷ কিন্তু সেগুলো না করে ফুটবল খেলার মতো চ্যাম্পিয়ন উত্তরের নরওয়ে আর সবচেয়ে বটমে (নীচে) কয়েকটা রাষ্ট্র পরিচিত আছে, এগুলোকে আমি ন্যায়সঙ্গত মনে করি না৷’’
সরকারের বিদেশি ঋণের পরিমান এবং সামনের বছরগুলোতে তা পরিশোধের চাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন বিভিন্ন অর্থনীতিবিদেরা৷ এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পাওয়া মান্নান বলেন, ‘‘সরকার প্রচুর ঋণ নিয়েছে৷ কারণ ঋণ ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব ছিল না৷’’ বিদ্যুত, যোগাযোগসহ অবকাঠামো খাতে উন্নয়নের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘‘হ্যা ঋণ করেছি৷ ঋণ করার সামর্থ্য আছে৷ ঋণ ছাড়া কোনো সরকার উন্নয়ন করতে পারে না৷’’
অর্থনীতিতে চাপের কথা স্বীকার করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘‘অবশ্যই চাপে আছি, তবে তা মোকাবিলা করার শক্তি আমাদের আছে৷ ...আমি ভীত সন্ত্রস্ত নই, তবে সাবধান থাকতে হবে৷’’
তার আশা, দেশের ব্যাংকিং খাতে শিগগিরই শৃঙ্খলা আসবে৷
এসএইচ/এফএস