সৌরশক্তি
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩আবুধাবির তেল উৎপাদন কেন্দ্র থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরের মরুভূমিতে গেলে একটা বিষয় সত্যিই চমকে দেবে আপনাকে৷ এক জায়গায় দেখবেন শত শত আয়না আকাশের দিকে ঘোরানো, সূর্যের আলো পড়ছে, আলো আয়নায় পড়ে চারপাশটাকে আরো আলোকিত করে দিচ্ছে৷ এভাবেই সৌরশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি৷ আবুধাবির লক্ষ্য, ২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট চাহিদার শতকরা সাত ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি দিয়ে পূরণ করা৷ ব্যাপারটি অবাক হওয়ার মতোই, কেননা, আবুধাবির তো তেলের কোনো ঘাঁটতি নেই৷ দেশের অর্থনীতিতেও এমন কোনো পরিবর্তন আসেনি যা নিয়ে খুব ভাবনায় পড়ে তাড়াতাড়ি সৌর শক্তিনির্ভরতা বাড়াতে হবে৷
ভাবনাটা আসলে অন্য জায়গায়৷ মরু অঞ্চলের সব দেশেই জ্বালানি তেলের ব্যবহার খুব বেশি৷ শহরে যাতায়াতের জন্য কোনো বাস নেই, মারাত্মক গরমের কারণে অফিস-আদালত, কল-কারখানা এবং সব বাড়িতেই রাখতে হয় এয়ার কন্ডিশনার৷ ফ্রিজ নেই এমন বাড়ি বা ভবন একটাও পাবেন না৷ মোট কথা, তেল যেমন বেশি তেমনি এর ব্যবহারও বেশি দেশগুলোতে৷ এ কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের যে কুপ্রভাব পৃথিবীতে পড়ছে তার জন্য এই দেশগুলোকেও দায়ী করা হয়৷ আজ সমস্যা হচ্ছে অন্যদের, কিন্তু একদিন তো আবুধাবি, কাতার, সৌদি আরবেরও হবে৷ তাই আগে থেকেই সতর্ক সবাই৷ সবগুলো দেশেই গড়ে তোলা হচ্ছে কনসেন্ট্রেটেড সোলার পাওয়ার, অর্থাৎ সিএসপি প্ল্যান্ট৷ সৌদি আরব ঠিক করেছে আগামী ২০৩২ সালের মধ্যে দেশের মোট চাহিদার এক তৃতীয়াংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে মেটাবে৷ দুবাইয়ের লক্ষ্য শতকরা পাঁচ ভাগ আর বিশ্বের সবচেয়ে বড় তরল পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশ কাতারের শতকরা সাত ভাগ - দুটি দেশই লক্ষ্য অর্জন করতে চায় ২০২০ সালের মধ্যে৷
এক কথায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে৷ সৌরশক্তির এমন ব্যবহার কতটা লাভজনক তা জানাতে গিয়ে আন্তর্জাতিক নবায়নযোগ্য শক্তি সংস্থা আইআরইএনএ-র উপ মহাপরিচালক ফ্রাঙ্ক ভাউটার বললেন, ‘‘বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য সৌদি আরবের মতো দেশ ব্যারেল প্রতি একশ ডলার খরচ করে৷ এই প্রক্রিয়ায় খরচ তার চেয়ে অনেক কম হবে৷''
ইরিনা কোয়ালে /এসিবি /এসি