আমিরাত থেকে গুপ্তা ভাইদের প্রত্যর্পণের অনুরোধ সাউথ আফ্রিকার
২৬ জুলাই ২০২২সাউথ আফ্রিকার আইনমন্ত্রী জানিয়েছেন, দুই ভাইকে প্রত্যর্পণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে৷ সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানিয়েছে সাউথ আফ্রিকা৷
রোনাল্ড লামোলা সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত করতে পারি, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধটি যথাযথভাবে জমা দেওয়া হয়েছে৷''
জুন মাসে দুবাই পুলিশ এই গুপ্তা ভাইদের গ্রেপ্তার করে৷ তারপর প্রত্যর্পণের অনুরোধ জমা দেওয়ার জন্য ৬০ দিন সময় পেয়েছিল সাউথ আফ্রিকা৷
গুপ্তা ভাইদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
জ্যাকব জুমা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন (২০০৯-২০১৮) তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল গুপ্তা ভাইদের৷ সেই সম্পর্কের ফায়দা তুলে দুই ভাই একাধিক চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ৷ এমনকি মন্ত্রী নিয়োগেও প্রভাব ছিল তাদের৷ রাষ্ট্রীয় তহবিল বন্ধ করার অভিযোগ রয়েছে গুপ্তা ভাইদের বিরুদ্ধে৷ একাধিক আর্থিক তছরুপের অভিযোগও রয়েছে৷ যদিও সাবেক প্রেসিডেন্ট জুমা এবং গুপ্তা ভাইয়েরা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷
সাউথ আফ্রিকার পাবলিক প্রসিকিউশনের ন্যাশনাল ডিরেক্টর শামিলা বাতোহি বলেন, ‘‘প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ায় কয়েক মাস সময় লাগতে পারে৷''
তার কথায়, ‘‘প্রত্যর্পণের অনুরোধ জমা দেওয়াকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসাবে দেখেছে ন্যাশনাল প্রসিকিউটিং অথরিটি (এনপিএ)৷
দক্ষিণ আফ্রিকার জনগণকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই বিচার সফল হওয়ার যুক্তিসঙ্গত সম্ভাবনা রয়েছে, এসব নিয়ে সন্তুষ্ট হলে তবেই এনপিএ মামলা আনে৷''
গুপ্তা ভাইয়েরা ২০১৮ সালে সপরিবারে সাউথ আফ্রিকা থেকে পালিয়ে যান৷ সেই সময়তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জ্যাকব জুমার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল৷
রেড নোটিসে গ্রেপ্তার
দুবাই পুলিশ ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিস'-এর ভিত্তিতে গুপ্তাদের গ্রেপ্তার করেছে৷ এই নোটিস জারি হলে সারা বিশ্বে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ করা হয়, ফলে প্রত্যর্পণের অপেক্ষায় আছে এমন কাউকে খুঁজে বের করা যায় এবং সাময়িকভাবে গ্রেপ্তার করা যায়৷
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০২১ সালের এপ্রিলে সাউথ আফ্রিকার সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুমোদন করেছিল৷ সাউথ আফ্রিকার সরকার আশা করেছিল এই পদক্ষেপে গুপ্তাদের প্রত্যর্পণ করা সম্ভব হবে৷
উত্তরপ্রদেশে জন্ম গুপ্তাদের
গুপ্তা ভাইয়েরা ভারতের উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরের বাসিন্দা৷ নব্বইয়ের দশকের শুরুতে সাউথ আফ্রিকায় একটি জুতোর দোকান খোলেন তারা৷পরবর্তীতে একাধিক ব্যবসা শুরু করেন৷ ব্যবসা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের রাজনৈতিক সংযোগও বাড়তে থাকে৷ পরবর্তীতে জুমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অতুল, অজয় ও রাজেশ গুপ্তা নামে তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীকে রাষ্ট্রের পক্ষে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার৷ রাজেশ এবং অতুল গ্রেপ্তার হলেও দুবাই পুলিশ অজয় গুপ্তাকে গ্রেপ্তার করেছে কিনা তা জানা যায়নি৷
আরকেসি/এসিবি (রয়টার্স)