২৬/১১ চক্রী রানাকে এবার আসতেই হবে ভারতে
৮ এপ্রিল ২০২৫অ্যামেরিকার জেলে বন্দি মুম্বইয়ে ২৬/১১ জঙ্গি হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানা। গত ২৫ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত তাকে ভারতের হাতে প্রত্যার্পণের নির্দেশ দেয়। কিন্তু ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতে আপিল করে রানার আইনজীবী। প্রথম আপিল খারিজ হওয়ার পর দ্বিতীয় আপিল করা হয়। সেই আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। অ্যামেরিকায় এরপর আর কোনো আইনি সাহায্য পাবে না রানা। তাকে ভারতে আসতেই হবে।
আবেদনপত্রে রানা লিখেছিল, ''আমি পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এবং মুসলিম। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আমার উপর অত্যাচার চালাবে, এমন আশঙ্কা করছি।'' আবেদনপত্রে নিজেকে অসুস্থ বলে দাবি করেছিল ৬৪ বছরের রানা।
পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত রানা এখন ক্যানাডার নাগরিক। থাকে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয়। ২০১১ সালে মার্কিন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। আদালত তাকে ১৩ বছর কারাবাসের শাস্তি দেয়। লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি কারাগারে বন্দি রানা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ভারত রানাকে নিজেদের হেফাজতে চাইছে। অ্যামেরিকার কাছে সেই আবেদন আগেই পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন আদালতও ভারতের হাতে রানাকে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু একের পর এক আবেদনের মাধ্যমে রানা তা ক্রমশ পিছিয়ে দিচ্ছিল।
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ের একাধিক জায়গায় আক্রমণ চালায় লস্কর-ই-তইবার জঙ্গিরা। মুম্বইয়ের ট্রেন স্টেশন, তাজ হোটেল, ইহুদি সেন্টারে আক্রমণ চালানো হয়। ঘটনায় নিহত হন ১৬৬ জন। যার মধ্যে বহু বিদেশিও ছিলেন।
সেই ঘটনায় প্রধান চক্রী হিসেবে সাব্যস্ত হয় পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ডেভিড কোলম্যান হেডলি। মুম্বইয়ে এসে গোটা পরিকল্পনা সে করেছিল। রানার সঙ্গে হেডলির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। রানাই হেডলিকে ভারতে ঢোকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বলে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন।
অ্যামেরিকার প্রশাসন রানাকে গ্রেপ্তারের পর থেকেই তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছে দেশের প্রশাসন। ইতিমধ্যে অ্যামেরিকার আদালতে রানাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে লস্করের মতো জঙ্গি সংগঠনকে সাহায্য করার অভিযোগ ছিল। একাধিক জঙ্গি হামলার সঙ্গে তার যোগ ছিল বলেও জানায় মার্কিন আদালত। কিন্তু তাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। বস্তুত, মাঝে সে জামিনে মুক্তও ছিল। কিন্তু ভারত বার বার আবেদন জানিয়ে গেছে। অবশেষে মার্কিন আদালত রানাকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)