হেলিকপ্টারের জরুরি অবতরণ, মমতা আহত
২৮ জুন ২০২৩জলপাইগুড়ির মালবাজারে পঞ্চায়েতের প্রচার করতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা শেষ করে হেলিকপ্টারে বাগডোগরা যাচ্ছিলেন তিনি। ঠিক ছিল, বাগডোগরা থেকে কলকাতা ফেরার বিমান ধরবেন। কিন্তু মাঝপথে আবহাওয়া খারাপ হয়।
ঘন মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় ঝড়। তখন বৈকুণ্ঠপুরের জঙ্গলের উপর দিয়ে উড়ছে হেলিকপ্টার। ফলে চালক সেখানে নামাতে পারেননি। তিনদিকে কালো মেঘ ছিল। একদিকে আকাশ পরিষ্কার। সেদিকেই হেলিকপ্টার চালাতে শুরু করেন চালক। সেটা ছিল শিলিগুড়ির দিক।
শিলিগুড়ির কাছে শালুগাড়ার পাশে সেবক এয়ারবেস। সেখানেই মমতাকে নিয়ে হেলিকপ্টার জরুরি ভিত্তিতে নামে। মমতার সঙ্গে ছিলেন এক সাংবাদিক ও দেহরক্ষী। সেখান থেকে গাড়িতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বাগডোগরা। তারপর বিমানে কলকাতা।
দমদম বিমানবন্দর থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে সোজা এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অ্যাম্বুলেন্সও তৈরি ছিল। কিন্তু তিনি গাড়িতে যান। এসএসকেএমেও হুইল চেয়ার ছিল। কিন্তু মমতা হেঁটেই যান। তাকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখা যায়।
হাসপাতালে তার এমআরআই স্ক্যান করা হয়। এই সরকারি হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিরত্ন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মমতার বাম পায়ে এবং বামদিকের হিপ জয়েন্টে লিগামেন্টে চোট লেগেছে। তাকে হাসপাতালে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি তা মানেননি। মমতা জানিয়েছেন, তিনি বাড়িতেই থাকবেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলবেন।
জুলাই মাসের গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রীর বীরভূম গিয়ে প্রচার করার কথা। অনুব্রত জেলে। তাই সেখানে সংগঠন মমতাই সামলাচ্ছেন।
প্রশ্ন হলো, মমতার চোট কতটা গুরুতর? তিনি আবার কবে প্রচারে যেতে পারবেন? এই দুই প্রশ্নের জবাব আনুষ্ঠানিকভাবে পাওয়া যায়নি।
তবে বিরোধী দলগুলি কটাক্ষ করে প্রশ্ন তুলেছে, নির্বাচন এলেই মমতা কেন আঘাত পান? সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ''ভোটের আগে এরকম দুর্ঘটনা হলেই আশঙ্কা হয়, মুখ্যমন্ত্রী আবার হুইল চেয়ারে মাথায় ফেট্টি বেঁধে সিপিএমকে গালাগালি করবেন।''
বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ''প্রতিবার নির্বাচনের আগে কেন পায়ে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী? বারবার চোট পাওয়া মানে তা শুভলক্ষণ নয়।''
তৃণমূলের দাবি, বিরোধী নেতাদের একটুও সৌজন্য ও শালীনতা নেই। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেছেন, ''বাংলার মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছে। তিনি প্রচারে নামুন বা না নামুন, মানুষ তার কাজ দেখে ভোট দেবেন।''
গত বিধানসভা ভোটের আগে মমতা নন্দীগ্রামে পায়ে আঘাত পান। তারপর তিনি হুইল চেয়ারে করে পদযাত্রা করেছেন, ভাষণ দিয়েছেন। এবার চোট পাওয়া অবস্থায় তিনি প্রচারে যেতে পারবেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। আগামী ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট। তার দুইদিন আগে প্রচার বন্ধ হয়ে যাবে। ফলে মমতার হাতে প্রচারের জন্য বেশি সময়ও নেই।
জিএইচ/এসজি (পিটিআই, এএনআই)