স্বল্প মূল্যের জ্বালানিতে ঘুরে দাঁড়াবে জার্মান শিল্পকারখানা?
২২ মে ২০২৫চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের আগে ব্যবসায়ী নেতারা এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেই সময় তারা নতুন সরকারকে উচ্চ মূল্যের জ্বালানির বিপরীতে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। এমনকি সরকার কোনো উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হলে তারা ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া ও অন্য কোনো দেশে তাদের কারখানা স্থানান্তরের হুমকিও দিয়েছিলেন।
বর্তমান জোট সরকার তাদের সেই আহ্বান গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে জার্মানিতে বিদ্যুতের দাম আসলে কত বেশি তা নির্ধারণের কোনো একক পদ্ধতি নেই। ভিন্ন ভিন্ন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থাকায় বিদ্যুতের দামও আলাদা হয়। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর জ্বালানির দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এর প্রভাব পড়ে শিল্প কারখানাসহ অফিস আদালত ও বাসা বাড়িতেও।
মিউনিখে অবস্থিত বাভারিয়ান বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (ফাউবেভে)-র তথ্য অনুসারে, শিল্পকারখানার পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যেমন স্কুল, অফিস সবজায়গাতেই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। মোটা দাগে ট্যাক্স ও অতিরিক্ত মূল্য সংযুক্তির আগে আন্তর্জাতিকভাবে জার্মানিতে বিদ্যুতের দাম মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে।
তবে একই সময় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদ্যুৎবিলের জন্য তুলনামূলকভাবে অনেক কম মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২৩ সালের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ছিল ৭ সেন্ট, চীনে ৮ সেন্ট। সেই সময় জার্মানিতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য শিল্প কারখানাগুলোকে ২০ সেন্ট করে পরিশোধ করতে হয়েছে।
জার্মানির বর্তমান সরকার শিল্প কারখানার জন্য ভর্তুকি দিয়ে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দাম ৫ সেন্ট করে কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে আনুষঙ্গিক অনেক ফি কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
কোলন শহরে অবস্থিত জার্মান ইকোনমিক ইন্সটিটিউটের জ্বালানি ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আন্দ্রেয়াস ফিশার ডয়চে ভেলেকে বলেন, "ভোক্তাদের দিক থেকে বিবেচনা করলে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়।"
সমালোচকরা আশঙ্কা করছেন, বিদ্যুতের দাম কমালে তা বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরির পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের লক্ষ্য অর্জনের বিষয়েও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
নাদিন মিনা মিশোলেক/এসএইচ