সোনাগাছির যৌনকর্মীদের পুজো
পুজোমণ্ডপে যাওয়ার অনুমতি ছিল না, তাই দশ বছর আগে থেকে যৌনকর্মীরা নিজেরাই পুজো শুরু করেন। সোনাগাছিতে।
যাদের মাটি নিয়ে
রীতি-অনুয়ায়ী যৌনকর্মীদের কাছ থেকে মাটি নিয়ে দুর্গাপুজো হয়। অথচ, তারাই কোনো পুজোয় ঢুকতে পারতেন না। তাই দশ বছর আগে তারা নিজেরাই পুজোয় আয়োজন করেন। শুরু হয় সোনাগাছিতে দুর্গাপুজো।
ছোট, কিন্তু নিজেদের পুজো
কলকাতার বড় বড় পুজোর সঙ্গে তুলনা চলে না এই পুজোর। এই পুজো তুলনায় ছোট। কিন্তু যৌনকর্মী ও তাদের সন্তানদের কাছে এই পুজো রীতিমতো বড় বিষয়। পুজোর আনন্দে গা ভাসানো তো বটেই, সেই সঙ্গে দেবীর কাছে প্রার্থনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সবই থাকে। বলা যায়, এটা তাদের জীবনে একটুকরো মুক্তির স্বাদ এনে দেয়।
পুজোর দিনগুলিতে
পুজোর দিনগুলি তাই আর আগের মতো নিরানন্দে ঘরের ভিতর থাকতে হয় না। নিজেদের পুজোয় আনন্দ করে কাটাতে পারেন যৌনকর্মীরা। পুজোর সব আয়োজন করেন তারা। সঙ্গে থাকেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দুর্বারের কর্মীরাও।
পুজোর আয়োজন
সকাল থেকেই শুরু হয় প্রতিদিনের পুজোর আয়োজন। প্রসাদের জন্য ফল কাটা থেকে শুরু করে পুজোর সব কাজ করেন তারাই।
অঞ্জলি দেন
প্রতিদিন তারা অঞ্জলি দেন। তবে তাদের পুজোর দরজা সকলের জন্যই খোলা। যে কেউ এসে অঞ্জলি দিতে পারেন। পুজো দিতে পারেন। দুর্বারের কর্মীরা তো থাকেনই।
আগুনের পরশমণি
সন্ধিপুজোয় ১০৮টা প্রদীপ জ্বালতে হয়। সেই প্রদীপ জ্বালানোর কাজে ব্যস্ত তারা।
যথাবিধি পুজো
পুজোর সব আচার-আচরণ মানা হয়। উপরের ছবিতে যৌনকর্মীদের পুজোয় ব্যস্ত পুরোহিত।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
পুজো ছাড়াও থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানেও প্রতিভার পরিচয় রাখেন যৌনকর্মী এবং তাদের সন্তানরা।
মায়ের কাছে চাওয়া
দুইটি চাওয়া আছে যৌনকর্মীদের। যা এবারের পুজোয় তাদের ক্যাচলাইন। প্রথমটি হলো, 'গতর খাটিয়ে খায়, শ্রমিকের অধিকার চায়।' দ্বিতীয়টি 'লালবাতির দুর্গাপুজো, এই মাটিতেই মাকে পাবে যদি মন দিয়ে খোঁজো।' এই দুই ক্যাচলাইনের মধ্যেই তাদের যন্ত্রণা, চাহিদা, আশা-আকাঙ্খা, লড়াই প্রকাশ পাচ্ছে।
সহায়তায় দুর্বার
তাদের এই পুজোর অন্যতম সহায় হলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্বার। পুজো হয় তাদের ব্যানারেই। তাই এর আনুষ্ঠানিক নাম হলো দুর্বারের পুজো।