সুরের জাদু রেখে চলে গেলেন রশিদ খান
৯ জানুয়ারি ২০২৪গত নভেম্বর মাস থেকেই ভুগছিলেন। প্রস্টেটে ক্যানসার ধরা পড়েছিল। তবে চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছিলেন। শেষরক্ষা হলো না। মঙ্গলবার বেলা ৩টে ৪৫ মিনিটে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হলো শাস্ত্রীয় সংগীতের অনন্য গায়ক রশিদ খান। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ অর্থাৎ, স্ট্রোক হয়েছিল তার। সেই অবস্থাতেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। ভেন্টিলেটরে রেখে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো গেল না।
১০-১১ বছর বয়সে উত্তরপ্রদেশ থেকে কলকাতায় চলে আসেন রশিদ খান। গান শিখেছেন দাদু ইনায়াত হুসেন খানের কাছে। রামপুর ঘরানা। মূলধারার শাস্ত্রীয় সংগীতের পাশাপাশি তাঁর গলায় অনন্য ছিল ঠুমরি এবং দাদরা। 'ইয়াদ পিয়া কি আয়ি' গেয়ে দিনের পর দিন দর্শককে মোহিত করে রেখেছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ কিছু ছবিতেও গান গেয়েছেন।
খাদ্যরসিক, আড্ডাবাজ হিসেবে পরিচিত ছিলেন রশিদ। তবলাবাদক পণ্ডিত তন্ময় বোস এদিন ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''খেতে খুব ভালোবাসত। আমাদের বাড়ির কালীপুজোয় প্রতি বছর আসত। একসঙ্গে কত অনুষ্ঠান করেছি। আজ শহরে নেই। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই দক্ষিণ ভারতের এক অডিটোরিয়ামে বাজাতে উঠব। ওর ছবিটাই চোখের সামনে ভাসতে থাকবে।'' কথা বলতে বলতে দৃশ্যত কেঁদে ফেলেন তন্ময়। একই ধরনের স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন কবি শ্রীজাত। সকলেই ঘুরে ফিরে মনে করার চেষ্টা করেছেন এক আড্ডাবাজ ব্যক্তির কথা।
ওস্তাদ রশিদ খানের মৃত্যুর পর এদিন হাসপাতালে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, শিল্পীর দেহ আজ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা থাকবে। বুধবার তার দেহ নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্রসদন চত্বরে। সেখানে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর তাকে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে। দেওয়া হবে গান স্যালুট।
বছরখানেক আগে পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন তিনি। এর অনেক আগেই পদ্মশ্রী পেয়েছিলেন তিনি। এছাড়াও বহু পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। জিতেছেন সংগীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কারের মতো গুরুত্বপূর্ণ সম্মান।