সাগরের তলদেশ নিয়ে পর্তুগালের দ্বীপে গবেষণা
১৫ এপ্রিল ২০২৫গবেষক দলের প্রধান ইয়ান ডিরকিং বলেন, ‘‘বর্তমানে সমুদ্র গবেষণায় জেলিফিশ একটি আলোচিত বিষয়, কারণ, সাগরের ইকোসিস্টেমে তারা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা অনেকদিন ধরে সম্পূর্ণ ভুল বুঝে এসেছি৷ আমরা এখন জানি যে, তারা শিকারী এবং শিকার- এই দুই ভূমিকাতেই খুব গুরুত্বপূর্ণ... এবং আমাদের ধারণার চেয়েও বায়োমাস অনেক বড় এবং প্রজাতিতেও অনেক বৈচিত্র্য রয়েছে৷''
গভীর সমুদ্রে জেলিফিশের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের কাছে এখনও খুব কম তথ্য আছে৷ দলটি ৫০ টিরও বেশি প্রজাতি খুঁজে পেয়েছে, যা আগে কখনও মাদেইরাতে দেখা যায়নি৷
জাহাজে প্রায় এক মাস থাকার পর ইউলিয়ান স্টাউফার তথ্য বিশ্লেষণের জন্য জার্মানির কিল শহরে অবস্থিত জিওমার হেলমহলৎস সেন্টারে ফিরে এসেছেন৷ এই পিএইচডি প্রার্থী সাগততলের মানচিত্র তৈরি করছেন, কোন প্রাণী কোথায় বাস করে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন৷ গবেষণার সময় তিনি একটি জিনিস লক্ষ্য করেছিলেন যা গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ স্টাউফার বলেন, ‘‘আমাদের তথ্যে, এমনকি গভীর সমুদ্রেও, মানুষের প্রভাব আমাকে ব্যক্তিগতভাবে সত্যিই অবাক করেছে৷ আমরা সাগরের তলদেশে মাছ ধরার অনেক জাল দেখেছি৷ আরও ছিল আবর্জনা... বোতল আর প্লাস্টিক৷''
মানবসৃষ্ট জলবায়ু সংকট অনেক আগেই গভীর সমুদ্রেও পৌঁছেছে, কারণ মহাসাগরগুলি প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই-অক্সাইড সঞ্চয় করে৷
স্টাউফার বলেন, ‘‘সমুদ্রপৃষ্ঠের পানি যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে তার কিছুটা সাগরের গভীরে চলে যায়৷ যে প্রক্রিয়ায় এটি হয় তাকে আমরা বলি ‘বায়োলজিক্যাল কার্বন পাম্প'৷ এর ফলে সমুদ্রের তলদেশে কার্বন ডাই-অক্সাইড জমা হয় এবং এটি সেখানে অনেকদিন থাকে৷''
কী পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড সেখানে জমা হয় তা খাদ্যশৃঙ্খলের উপরও নির্ভর করে৷ তবে এখনও অনেককিছু অজানা রয়ে গেছে৷
গবেষক দলের প্রধান ইয়ান ডিরকিং বলেন, ‘‘আমি মনে করি, আমাদের মিশনটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, আমরা এখনও সাগরের তলদেশ সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানি না৷ এছাড়া তথ্য বোঝাটাও একটা চ্যালেঞ্জ, কারণ, আপনি জানেন না আপনার কাছে আসলে কী আছে? কোন প্রজাতি? কোন বৈচিত্র্য আছে? প্রথমে আমাদের তা নির্ধারণ করতে হবে৷ অন্যথায়, যে জিনিসগুলি সম্পর্কে আমরা জানি না সেগুলি নষ্ট করার ঝুঁকি খুব বেশি থাকবে৷''
ইয়োহানা লেপারে/জেডএইচ