শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫বুধবার রাত ৯টায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার বক্তৃতা প্রচার করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়৷ এ ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বুধবার দিনভর সামাজিক মাধ্যমে উত্তেজনা চলে৷ এরপর বিকেলে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দেন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য শরিফ ওসমান হাদি৷
সন্ধ্যা সাতটার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘‘আজ (বুধবার) রাতে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি মুক্ত হবে৷''
হাসিনার বক্তৃতা প্রচারের ঘোষণার প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া অনেক ছাত্র-জনতাসহ অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফেসবুকে ধানমন্ডি ৩২ অভিমুখে ‘বুলডোজার মিছিল' ও ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২' কর্মসূচির ডাক দেন৷ তারা ঘোষণা দেন, বুধবার রাত ৯টায় শাহবাগে জড়ো হয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর অভিমুখে যাত্রা শুরু করবেন৷ তবে রাত আটটার আগেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হতে থাকেন৷ তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকেন৷ রাত আটটার দিকে বিক্ষোভকারীরা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করেন৷ তারা বাড়ির সামনে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালও ভাঙচুর করেন৷
রাত ৮টা ৪০ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ভবনের তৃতীয় তলার একটি জায়গায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়৷ পরে আগুনের মাত্রা আরও বাড়ে৷ রাত ৯টার দিকে লাঠিসোঁটা ও শাবল দিয়ে বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ভাঙা শুরু হয়৷ কিছুক্ষণ পর সেনাবাহিনীর একটি দল ৩২ নম্বর বাড়িটির সামনে যায়৷ এ সময় বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেওয়া শুরু করেন৷ একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর দলটি সেখান থেকে মিরপুর রোডের দিকে চলে যায়৷
রাত ১১টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে একটি ক্রেন নিয়ে আসেন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা৷ পরে আনা হয় একটি এক্সকাভেটর৷ মধ্যরাতে এই ভারী যন্ত্র দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু হয়৷ রাত দুইটা নাগাদ বাড়িটির বড় অংশ ভাঙা শেষ হয়৷
‘ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না'
বাড়িটি যখন ভাঙার কাজ চলছিল তখন শেখ হাসিনা ফেসবুক লাইভে দেওয়া বক্তৃতায় বলেন, ‘‘বুলডোজার দিয়ে দেশের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করার ক্ষমতা ওদের নেই৷ ওরা বাড়ি ভাঙতে পারবে, কিন্তু ওরা ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না৷''
১৯৭৫ সালে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের এই বাড়িতেই শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়৷ তারপর এই বাড়িটিতে মিউজিয়াম করা হয়েছিল৷
গতবছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিক্ষোভকারীরা এই বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল৷
জিএইচ/জেডএইচ (প্রথম আলো, এপি, এএফপি, রয়টার্স)