রাশিয়ার কাছে আরো জমি ছাড়তে রাজি নয় ইউক্রেন
৭ মার্চ ২০২৩ইউক্রেন যুদ্ধে দুই পক্ষের দৃঢ় সংকল্প আপাতত পূবের বাখমুত শহরকে ঘিরে থেমে রয়েছে৷ রাশিয়া দিন-রাত শহরটির উপর হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷ গত প্রায় ছয় মাসে রাশিয়া এই প্রথম ইউক্রেনে নতুন করে কোনো জমি দখলের আশা করছে৷ প্রবল চাপ সত্ত্বেও হাল ছাড়তে রাজি নয় ইউক্রেন৷ প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, সেনাবাহিনীর শীর্ষ জেনারেলরা শহরের প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর৷ দৈনিক ভাষণে তিনি এ ক্ষেত্রে ঐকমত্য তুলে ধরে স্থানীয় সৈন্যদের সহায়তার অঙ্গীকার করেন৷
ইউক্রেন প্রতিরোধ চালিয়ে গেলেও অনেক সামরিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাখমুত থেকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ‘কৌশলগত'-ভাবে পিছিয়ে যাওয়া উচিত৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ অনেক বেশি প্রতীকী হয়ে উঠেছে৷ তার মতে, শহরটির পতন ঘটলেও সংঘাতে রাশিয়া কোনো বাড়তি সুবিধা পাবে না৷ বাখমুতে যুদ্ধরত কয়েকজন ইউক্রেনীয় সৈন্য সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, রাশিয়া শহরটি প্রায় দখল করে ফেলেছে এবং ইউক্রেনের কিছু সেনা ইউনিট প্রত্যাহার শুরু করে দিয়েছে৷
রাশিয়ার আশা, একবার বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণ হাতে পেলে ডনবাস এলাকার সংলগ্ন অঞ্চলও তাদের হাতে চলে আসবে৷ কিন্তু সেই প্রচেষ্টার মূল্য হিসেবে এতদিন ধরে যত সংখ্যক রুশ সৈন্য হতাহত হয়েছে এবং সামরিক সম্পদ কাজে লাগাতে হয়েছে, তাতে সাফল্য এলেও সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ তার উপর এই অভিযানের মূল হোতা রাশিয়ার ভাগনার ভাড়াটে বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন গোলাবারুদের অভাব নিয়ে প্রকাশ্যে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন৷ তার মতে, গোলাবারুদের সরবরাহ এবং পারস্পরিক সমন্বয় ছাড়া এই সংঘাতে জয়লাভ করা কঠিন হবে৷ রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করে নি৷
বাখমুত শহর প্রতিরোধ করতে গিয়ে ইউক্রেনের গোলাবারুদের ভাণ্ডারের উপরেও চাপ বাড়ছে৷ পশ্চিমা বিশ্ব যত দ্রুত সম্ভব সামরিক সরবরাহের উদ্যোগ নিলেও আপাতত গোলাবারুদের অভাব প্রকট হয়ে উঠছে৷ মরিয়ে হয়ে ইউক্রেন অ্যামেরিকার কাছে আবার বিতর্কিত ক্লাস্টার বোমা সরবরাহের অনুরোধ করেছে৷
বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ শেষ পর্যন্ত যে পক্ষের হাতেই থাক না কেন, ইউক্রেন আপাতত রাশিয়ার দখলদারী বাহিনীর বিরুদ্ধে জোরালো সংগ্রামের প্রস্তুতি চালাচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷ পশ্চিমা বিশ্ব থেকে যথেষ্ট সংখ্যক ব্যাটেল ট্যাংক ও গোলাবারুদ হাতে পেলেই হারানো জমি ফিরে পেতে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী পালটা অভিযান শুরু করতে পারে৷ রাশিয়া শীতকালেও হামলা বন্ধ করে নি৷ ফলে রাশিয়ার বসন্ত অভিযান আগেই শুরু হয়ে গেছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)