রাজ্য সিপিএমের হাল ধরলেন সেলিম
১৮ মার্চ ২০২২২০১১ সালে ক্ষমতা চলে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ক্রমশ অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন বামেরা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নাস্তানাবুদ হওয়ার পরে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটেও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি বামপন্থি দলগুলি। এই প্রথম বামশূন্য বিধানসভা দেখছে রাজ্যবাসী। প্রবীণ সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে রাজ্য সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে বিশেষ লাভ হয়নি সিপিএমের। এবার সেই চেয়ার পেলেন মহম্মদ সেলিম।
ভারতের বামপন্থি আন্দোলনে সেলিম গুরুত্বপূর্ণ নাম। সুবক্তা সেলিম এর আগে লোকসভা ও রাজ্যসভায় নির্বাচিত হয়েছেন। রাজ্য বিধানসভাতেও ছিলেন। ইংরাজি, বাংলা, হিন্দি, উর্দু সমানতালে বলতে পারেন। তার বক্তৃতা গোটা দেশে জনপ্রিয়। আবার সেলিমকে নিয়ে বিতর্কও কম নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনে পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে জোট গঠন কার্যত সেলিমেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। দলের ভিতরেই যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়েছে। একজন পিরজাদার সঙ্গে বামপন্থি দলের জোট করা ঠিক কি না, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। কিন্তু সেলিম বরাবরই জোটের পক্ষে সওয়াল করে গেছেন। শুধু তা-ই নয়, ব্রিগেডে আব্বাস সিদ্দিকির আচরণ নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৈধুরী। সিপিএম-কংগ্রেস জোট কার্যত ভাঙতে বসেছিল।
এখানেই শেষ নয়। এর আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিত্ব সামলেছেন সেলিম। কিন্তু তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক অনিল বিশ্বাসের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল না বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ব্যাখ্যা। এবং সে কারণেই তাকে দিল্লি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে মনে করেন অনেকেই। তবে কেন্দ্রেও নিজেকে বার বার প্রমাণ করেছেন সেলিম। কেন্দ্রীয় কমিটি ঘুরে বিশাখাপত্তনম পার্টি সম্মেলনে পলিটব্যুরোর সদস্য নির্বাচিত হন।
গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক চালচিত্র বদলেছে। রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় মেরুকরণ তৈরি হয়েছে। রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে সেলিম কি পারবেন সিপিএমের হাল উজানের দিকে ফেরাতে? ডয়চে ভেলের প্রশ্নে সেলিমের এক লাইনের জবাব,''আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পথে নামতে হবে।''
এসজি/জিএইচ(পিটিআই)